স্টাফ রিপোর্টার : ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনের জন্য দলের পূর্বসিদ্ধান্ত অনুযায়ী তৃণমূল থেকে প্রার্থী তালিকা কেন্দ্রে পাঠানোর জন্য নির্দেশনা দিয়েছে আওয়ামী লীগ।
আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার ধানমন্ডির রাজনৈতিক কার্যালয়ে গতকাল সোমবার বিকেলে দলের এক যৌথসভা শেষে দলটির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব-উল আলম হানিফ সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান।
তিনি বলেন, আমরা প্রত্যেকটি জেলা ও উপজেলা পর্যায়ের নেতাদের দ্রুত বৈঠক করে প্রার্থী তালিকা দলের প্যাডে পাঠানোর অনুরোধ জানাচ্ছি। এর আগে দলের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদের বৈঠকের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী জেলা, উপজেলা ও ইউনিয়নের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকরা সম্ভাব্য প্রার্থীর তালিকা দেবেন। আমরা প্রত্যেকটি জেলা ও উপজেলা পর্যায়ের নেতাদের দ্রুত বৈঠক করে প্রার্থী বাছাই করে দলের প্যাডে পাঠানোর জন্য অনুরোধ জানাচ্ছি।
ইউনিয়ন পরিষদের প্রার্থী বাছাইয়ের ক্ষেত্রে যেসব উপজেলা সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক গত পৌর নির্বাচনে দলের সিদ্ধান্তের বাইরে গিয়ে কাজ করেছেন, তারা বাছাই প্রক্রিয়ায় অংশ নিতে পারবেন না বলেও জানান তিনি।
হানিফ বলেন, ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে যারা দলীয় সিদ্ধান্ত অমান্য করে প্রার্থী হবেন কিংবা দলীয় শৃঙ্খলাবিরোধী কর্মকা- করবেন, তাদের বিরুদ্ধে দলের সর্বোচ্চ শাস্তি দেয়া হবে। আমরা আশা করি, ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে দলের কাক্সিক্ষত বিজয় হবে।
পৌরসভা নির্বাচনে দলের বিদ্রোহীদের প্রসঙ্গে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের উত্তরে আওয়ামী লীগের এই নেতা বলেন, পৌর নির্বাচনে যারা বিদ্রোহী প্রার্থী ছিলেন তাদের দল থেকে প্রাথমিকভাবে বহিষ্কার করা হয়েছে। তাদের চূড়ান্ত বহিষ্কার কেন করা হবে না Ñ এ জন্য কারণ দর্শানোর নোটিশ দেয়া হয়েছে। বিদ্রোহী প্রার্থীদের পক্ষে দলের যেসব নেতা অবস্থান নিয়েছিলেন তাদের তালিকা করতে সাংগঠনিক সম্পাদকদের দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। তারা খুব দ্রুত সময়ের মধ্যে সে তালিকা কেন্দ্রে জমা দেবেন। দলের আগামী কার্যনির্বাহী কমিটির বৈঠকে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
সভায় সম্প্রতি এক টেলিভিশন টকশোতে ডেইলি স্টার সম্পাদক মাহফুজ আনামের বক্তব্য নিয়ে দলীয় ফোরামে এখনও আলোচনা হয়নি বলে জানিয়ে সাংবাদিকদের অপর এক প্রশ্নের উত্তরে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক হানিফ বলেন, এ ঘটনার আট বছর পর একটি দৈনিকের সম্পাদক এ বিষয়টি স্বীকার করলেন, ‘তারা এটা ভুল করেছেন।’ কিন্তু এ ভুলের জন্য দেশবাসীর যে ক্ষতি হয়েছে, শেখ হাসিনাকে কারা নির্যাতিত হতে হয়েছিল। সারা বিশ্বের কাছে শেখ হাসিনার সম্মান ক্ষুণœ হয়েছিল ও অপমানিত হতে হয়েছিল, তার দায়ভার কে নেবে? এর দায়ভার এড়ানোর সুযোগ নেই বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
এ প্রসঙ্গে হানিফ আরও বলেন, এ স্বীকারোক্তির মধ্য দিয়ে জাতির কাছে পরিষ্কার হয়েছে ১/১১ প্রেক্ষাপটে শেখ হাসিনাকে রাজনীতি থেকে মাইনাস করার ষড়যন্ত্র ছিল। সে কারণে বিভিন্ন পত্রিকায় ষড়যন্ত্রমূলক সংবাদ প্রকাশ করা হয়েছিল। এ কারণে তাকে গ্রেফতার করা হয়েছিল। মিথ্যা কাল্পনিক অভিযোগে তিনি ১১ মাস কারাগারে ছিলেন, যার বিরুদ্ধে সারাদেশের মানুষ প্রতিবাদ জানিয়েছিল।
হানিফ বলেন, তিনি তার ভুল স্বীকার করেছেন। তাই তার বিরুদ্ধে রাষ্ট্রীয়ভাবে এবং রাজনৈতিকভাবে কী সিদ্ধান্ত নেয়া হবে, আমরা আশা করছি তা আপনাদের কাছে পরে জানাতে পারব। তবে আমরা মনে করি, এমন অনৈতিক কাজ করে সম্পাদক সাহেবরা প্রমাণ করেছেন তারা অনেক সময় এ দেশের সরকারের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রে অংশীদার ছিলেন। তাই আমরা সরকারের কাছে দাবি করব, ষড়যন্ত্রকারীদের বিরুদ্ধে রাষ্ট্র আইনানুগ ব্যবস্থা নেবে।
সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন দলটির অপর যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ডা. দীপু মনি, অ্যাডভোকেট জাহাঙ্গীর কবীর নানক, সাংগঠনিক সম্পাদক আহমদ হোসেন, বিএম মোজাম্মেল, খালিদ মাহমুদ চৌধুরী, আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপন, বীর বাহাদুর, কৃষি বিষয়ক সম্পাদক ড. আব্দুর রাজ্জাক প্রমুখ। এর আগে যৌথসভায় সভাপতিত্ব করেন দলের সভাপতিম-লীর সদস্য ও সড়ক পরিবহনমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।