পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
স্টাফ রিপোর্টার : বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে হামলা ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করেছে সন্ত্রাসীরা। পুলিশের সামনেই নির্বিঘেœ দীর্ঘ সময় তান্ডব চালিয়েছে তারা। দলীয় কার্যালয়ে আগুন দেয়া ছাড়াও শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের ম্যুরাল ভাঙচুর, চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়ার ছবি পুড়িয়ে দিয়েছে। এ সময় গোটা কার্যালয় আগুনের ধোঁয়ায় এক ভয়ঙ্কর পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়। গতকাল বিকেলে এ ঘটনা ঘটে।
ছাত্রদলের কার্যালয়ে সরকারের এজেন্টরা এ ঘটনা ঘটিয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব রিজভী আহমেদ। নয়াপল্টনে ভবনের চতুর্থ তলায় ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে হামলা ও আগুনের ঘটনার পর সাংবাদিকদের কাছে প্রতিক্রিয়ায় রিজভী এই অভিযোগ করেন। এদিকে পুলিশ বলেছে, ছাত্রদলের পদবঞ্চিতরাই এই ঘটনা ঘটিয়েছে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, গতকাল সোমবার বিকেল ৩টা ৫০ মিনিটের দিকে পল্টন থানার সামনে থেকে একটি মিছিল নিয়ে এসে অতর্কিত এ হামলা চালায় দুর্বৃত্তরা। এ মিছিলে ছাত্রদল নেতা রাকিবুল ইসলাম রয়েল নেতৃত্ব দিয়েছে। মিছিলকারীরা ‘এলাকাপ্রীতি, পদ-বাণিজ্য ও পকেট কমিটি মানি না মানবো না’ ছাত্রদল কেন্দ্রীয় সংসদের নামে এক ব্যানার নিয়ে বিএনপির কেন্দ্রীয় অফিসের নিচতলায় দলের বিক্রয় কেন্দ্রে বিভিন্ন সামগ্রী ভাঙচুর করে তারা। রাস্তায় রাখা দুটি মোটরসাইকেলে অগ্নিসংযোগ করে তারা। দীর্ঘক্ষণ তা-ব ও অগ্নিসংযোগের পরে আগুন নেভানোর জন্য ফায়ার সার্ভিসের দু’টি ইউনিট ঘটনাস্থলে আসে। তবে তার আগেই আশপাশের লোকজন আগুন নিভিয়ে ফেলে।
ঘটনার পর নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের তৃতীয় তলায় দপ্তর শাখার কক্ষে বসে রুহুল কবির রিজভী সাংবাদিকদের কাছে প্রতিক্রিয়া দেন। বিদ্যুৎ না থাকায় অন্ধকারের মধ্যে তিনি কথা বলেন।
রিজভী আহমেদ বলেন, প্রকৃতপক্ষে জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল এরশাদের মতো একটা স্বৈরাচারের পতন থেকে শুরু করে এ দেশের সকল ইতিবাচক আন্দোলন ঐতিহাসিক ভূমিকা পালন করেছে। তারা নিজ দলের প্রতিষ্ঠাতা শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের ম্যুরাল ভেঙে দেবে, বিএনপি চেয়ারপারসন আমাদের গণতন্ত্র উদ্ধারের নেত্রী তার ছবি ভেঙে ফেলবে এটা হতে পারে না। এটা এজেন্ট প্রোভোগেটিয়ার। এরা নাশকতার এজেন্ট। সরকারের মদদে বহিরাগত দুষ্কৃতকারীরা এই ঘটনা ঘটিয়েছে।
ঘটনার সময়ে পুলিশের ভূমিকার সমালোচনা করে রিজভী অভিযোগ করে বলেন, বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয় থেকে পল্টন মডেল থানা বেশি দূরে নয়; ১০০ গজ থেকে ১৫০ গজ হবে। পুলিশের প্রথম ও প্রধান দায়িত্ব হচ্ছে মানুষের নিরাপত্তা দেয়া। দেশের বৃহত্তম একটি রাজনৈতিক দল যারা রাষ্ট্র পরিচালনা করেছে, সেই দলের প্রধান কার্যালয়ের নিরাপত্তায় পুলিশের ভূমিকা নেই। এখানে দুষ্কৃতকারীরা আসছে, চার তলায় এসে আগুন ধরাচ্ছে। গোটা অফিসটা আগুনের ধোঁয়ায় এক ভয়ঙ্কর পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে।
এ ঘটনা বিচ্ছিন্ন কোনো ঘটনা নয়। আজ দেশব্যাপী যে নৈরাজ্যকর পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে, এটা তারই অংশ বিশেষ। দেশের বৃহত্তম রাজনৈতিক দলের প্রধান কার্যালয় নিরাপদ নয়। প্রকাশ্যে এই অফিসকে লক্ষ্য করে ইটপাটকেল মারছে। অথচ পুলিশ নির্বিকার দাঁড়িয়ে আছে। এটা থেকে স্পষ্ট বুঝা যায় না, কাদের প্রশ্রয়ে কাদের সমাদরে দুষ্কতকারীরা ভেতরে ঢুকছে এবং আগুন লাগাচ্ছে, আক্রমণ চালাচ্ছে।
তিনি বলেন, কয়েকদিন আগে নাম-গোত্রহীন অপরিচিত কয়েকজন ছেলেপেলে নিয়ে আসল একটা বিএনপি নাম ধরে পার্টি অফিস দখল করতে এসেছিলো। এসব ধারাবাহিক একটা ব্যাপার। বিএনপির প্রধান কার্যালয় দখল ও দলের কার্যাক্রমকে বাধাগ্রস্ত করতে যে প্রক্রিয়া চলছে, এটা তারই অংশ।
নিজে ঘটনার সময় ছিলেন না উল্লেখ করে রিজভী বলেন, দুপুরবেলা যখন সবাই বিশ্রামের থাকেন। ওই সময়টার দুষ্কৃতকারীরা বেছে নিয়েছে। তারা সশস্ত্র অবস্থায় এসে ঘটনা ঘটিয়েছে।
ছাত্রদলের কমিটির পদবঞ্চিতরা এই ঘটনা ঘটিয়েছে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, ছাত্রদলের একদিন আগে কমিটি হয়েছে। সেই কমিটি গতকাল কাযর্ক্রম করেছে, কোনো ঝামেলা নেই, মেনে নিয়েছে, সবাই খুশি। একটা কমিটি হলে মনোমালিন্য একটু থাকে, মনের মধ্যে একট ক্ষোভ থাকতে পারে। তারা চেষ্টা করে সামনের দিকে এগিয়ে নেয়ার। এটাই নিয়ম।
কিন্তু বিএনপি চেয়ারপার্সনের ছবি পুঁড়িয়ে দেয়া, শহীদ জিয়াউর রহমানের ম্যুরাল ভেঙে ফেলা, ছাত্রদলের কার্যালয় আগুন দেয়াÑ এটা কী ছাত্রদলের কেউ করতে পারে? বিএনপির কোনো পর্যায়ের কোনো ধরনের নেতা-কর্মী করতে পারে। যারা দলের জন্য অকাতরে প্রাণ দিতে পারে, রক্ত ঝরাতে পারে, তারা কখনোই এই কাজ করতে পারে না। এটা বহিরাগত দুষ্কৃতকারীরা করেছে।
পল্টন থানার ওসি সাংবাদিকদের বলেছেন, পদবঞ্চিতরাই এই ঘটনা ঘটিয়েছে এরকম প্রশ্ন করা হলে রিজভী বলেন, এটা পুলিশের ঐতিহ্যবাহী কথা। ১০০-১৫০ গজ দূরে থানা। সব সময় এই কার্যালয়ের সামনে সাদা পোশাকধারী পুলিশ সদস্যরাও থাকেন। তারা টের পায় আমরা কখন বেরুচ্ছি, কখন ঢুকছি। আর একদল দুষ্কৃতকারী অফিসে আসবে, চারতলায় আগুন লাগাবে। যদি পদ না পাওয়ার জন্য মন খারাপ খাকে, তাই বলে তারা জিয়াউর রহমানের ছবি, খালেদা জিয়ার ছবির পুডাতে পারে না। এটা সরকারের মদদে হয়েছে বলেই পুলিশ নিশ্চুপ ছিলো। পুলিশ দূরে দাঁড়িয়েছিলো, কোনো কার্যকর পদক্ষেপ নেয়নি। আমরা মনে করি এটা পরিকল্পিত ষড়যস্ত্র।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।