Inqilab Logo

শনিবার ১৬ নভেম্বর ২০২৪, ০১অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৩ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

ভূমি উন্নয়ন কর ঘরে বসেই পরিশোধ

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ২৫ মে, ২০২১, ১২:০১ এএম

দেশের নাগরিকরা এখন থেকে ঘরে বসেই স্বস্তিতে অনলাইনে ভূমি উন্নয়ন কর, মিউটেশন ফি, খতিয়ান ফিসহ যাবতীয় ফি পরিশোধ করতে পারবেন। এ লক্ষ্যে চারটি আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিকাশ, নগদ, উপায় ও ইউনাইটেড কমার্শিয়াল ব্যাংক লিমিটেডের সঙ্গে সমঝোতা স্মারক সই করছে ভ‚মি মন্ত্রণালয়। তবে এই ব্যাংকের মালিক হচ্ছেন ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী নিজেই।

বর্তমানে এই ব্যাংকের চেয়াম্যান পদে রয়েছেন তার স্ত্রী। গতকাল সোমবার ভূমি মন্ত্রণালয়ের সম্মেলনকক্ষে চারটি আর্থিক সেবাদাতা প্রতিষ্ঠানে সঙ্গে সমঝোতা স্মারক সই করেন ভূমি মন্ত্রণালয়ের পক্ষে অতিরিক্ত সচিব প্রদীপ কুমার দাস, বিকাশের জেনারেল ম্যানেজার বিজনেস ডেভেলপমেন্ট এসএম বেলাল আহমেদ, নগদের পক্ষে চিফ ইনফরমেশন অফিসার আশীষ চক্রবর্তী, উপায়ের পক্ষে সাইফুল হক এবং ইউনাইটেড কমার্শিয়াল ব্যাংক লিমিটেডের পক্ষে অ্যাক্টিং ম্যানেজিং ডিরেক্টর আরিফ কাদরি। এসময় ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী, ভূমি সচিব মোস্তাফিজুর রহমান, ভূমি সংস্কার কার্যালয়ের চেয়ারম্যান মোস্তফা কামালসহ ভূমি মন্ত্রণালয়ের অন্য কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। এদিকে ভূমিমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করা অবস্থায় নিজের ব্যাংকের সাথে চুক্তি করতে পারে কি না এমন প্রশ্নের জবাবে ভূমি সচিব মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, দেখেন আমরা অনেক ব্যাংকে প্রস্তাব দিয়েছি। যারার অংশগ্রহণ করেছে তাদের রেট অনেক বেশি। আর ইউনাইটেড কমার্শিয়াল ব্যাংক লিমিটেডের ব্যাংকের রেট কম। এ কারণে চুক্তি করা হয়েছে। মালিক কে সেটা দেখা হয়নি।

ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী বলেন, আমাদের লক্ষ্য দুর্নীতি কমানো এবং স্বচ্ছতা নিশ্চিত করা। হিউম্যান টু হিউম্যান টার্চ কমাতে চাচ্ছি। আমরা স্বচ্ছতা, দক্ষতা ও জবাবদিহিতা- এই তিনের সমন্বয়ে মন্ত্রণালয়ের কাজ এগিয়ে নিয়ে যেতে চাই।

মন্ত্রী বলেন, আমরা যা করছি, পুরো বিষয়টিকে আমরা টেকসই করতে চাই। ভূমি সেবা আরও সহজ করতে উপজেলা থেকে শুরু করে শপিংমল পর্যন্ত কিয়সক বসানোর কথা ভাবছে সরকার। এর মধ্যদিয়ে ২০ টাকার বিনিময়ে কিয়সক থেকে পর্চা (খতিয়ান) পাওয়া যাবে। তবে সেটা আনসার্টিফায়েড হবে। পুরো বিষয়টি ভূমি মন্ত্রণালয়ের নিবিড় পর্যবেক্ষণে থাকবে। ফি পরিশোধের পর ভূমিসেবা গ্রহিতারা কিউআর কোড যুক্ত রশিদ পাবেন এবং সেবাটি গ্রহণ করতে পারবেন। উপায়, বিকাশ ও নগদের মাধ্যমে আদায় করা অর্থ তাৎক্ষণিকভাবে সেটেলমেন্ট ব্যাংকের মাধ্যমে ভূমি মন্ত্রণালয়ের নির্ধারিত ব্যাংক অ্যাকাউন্ট হয়ে ই-চালানের মাধ্যমে সরকারি কোষাগারে স্থানান্তরিত হবে। অনলাইন সেবা পেতে জাতীয় পরিচয়পত্র ও মোবাইল দিয়ে নিবন্ধন করতে হবে। নিবন্ধন শেষে সেবাটি গ্রহণ করা যাবে। সমঝোতা স্মারক সই অনুষ্ঠানে জানানো হয়। অনুষ্ঠানে ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী বলেন, অনলাইনে ভূমি উন্নয়ন কর, মিউটেশন ফি, খতিয়ান ফিসহ যাবতীয় ফি পরিশোধের ব্যবস্থা স্থাপনের উদ্দেশ্য হলো জনগণের দোরগোড়ায় ভ‚মিসেবা পৌঁছে দেওয়া।

হিউম্যান-টু-হিউম্যান টাচ যত কমবে, দুর্নীতি তত কমে আসবে। প্রধানমন্ত্রীর ডিজিটাল বাংলাদেশ এখন স্বপ্ন নয় বাস্তব উল্লেখ করে ভূমিমন্ত্রী বলেন, আমরা ভূমি সেক্টরে এমনভাবে ‘সিস্টেমের’ টেকসই পরিবর্তন করছি যেন দুর্নীতি করার সুযোগই না থাকে। তিনি এ সময় দক্ষ, স্বচ্ছ ও জনবান্ধব ভূমি ব্যবস্থাপনা স্থাপনের লক্ষ্যে কাজ করে যাওয়া দৃঢ় সংকল্প ব্যক্ত করেন।

সাইফুজ্জামান চৌধুরী বলেন, গণমাধ্যম একইসাথে সরকারের উন্নয়ন সহযোগী ও ‘ওয়াচডগ’। গণমাধ্যমে দেশের, বিশেষত মাঠ পর্যায়ের ভূমি ব্যবস্থাপনার প্রকৃতচিত্র প্রতিফলিত হলে তা নীতি নির্ধারণী পর্যায়ে ইতিবাচক সিদ্ধান্ত গ্রহণে সহযোগিতা করে বলে ভূমিমন্ত্রী মতপ্রকাশ করেন। ভূমি সচিব মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, বর্তমানে ভূমিকেন্দ্রিক নানা সেবা ডিজিটাইজেশন করা হয়েছে। এর মধ্যে আছে ই-পর্চা (খতিয়ান), ই-নামজারি (ই-মিউটেশন) ও ভূমি উন্নয়ন কর (এলডি ট্যাক্স) তথা জমির খাজনা। জমির অন্য সেবাগুলো পর্যায়ক্রমে অনলাইন সেবার আওতায় আসবে। ফলে নাগরিকরা তার জমি সম্পর্কিত কর ও ফি অনলাইনে দিতে পরিশোধ করতে পারবেন।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ