Inqilab Logo

মঙ্গলবার, ১১ জুন ২০২৪, ২৮ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১, ০৪ যিলহজ ১৪৪৫ হিজরী

নিরাপত্তা নিয়ে শঙ্কা নেই

প্রকাশের সময় : ৯ ফেব্রুয়ারি, ২০১৬, ১২:০০ এএম

ইখতিয়ার উদ্দিন সাগর : বইমেলা ও বই প্রকাশনাকে কেন্দ্র করে অনাকাক্সিক্ষত ঘটনার শঙ্কা আর নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়ে অনেকের মনে নানা সংশয় ছিল। কিন্তু সব শঙ্কা কাটিয়ে মেলায় প্রতিদিন বাড়ছে বইপ্রেমীর ভিড়, বাড়ছে বিক্রি-বাট্টাও। ফলে সবার আশা, সব প্রতিকূলতা পেরিয়ে পরিপূর্ণ অবয়বে প্রস্ফুটিত হচ্ছে এ উৎসব।
গতকাল মেলার সময়সূচি মেনে বিকেল ৩টায় খোলা হয় বইমেলার দ্বার। এর পর থেকে ধীরে ধীরে আসতে শুরু করে পাঠকরা। কড়া পুলিশি চাহনি আর আর্চওয়ের নিñিদ্রতার মধ্যে মেলায় প্রবেশের অনুমতি মিলেছে। তবে এ নিয়ে আপত্তি ছিল না দর্শনার্থীদের। রাজধানীর ধানমন্ডি থেকে আসা আব্দুল কাদের বলেন, নিরাপত্তাব্যবস্থা তো আমাদের জন্যই। এতে মেলায় ঢুকতে কিছুটা বিপত্তি হলেও খারাপ লাগছে না। আশা করব, এমন কঠোর ব্যবস্থা মেলার শেষ দিন পর্যন্ত থাকবে।
গত বছর মেলার ২৬তম দিনে মুক্তচিন্তার লেখক অভিজিৎ রায়কে হত্যা, গত বছরের ৩১ অক্টোবর জাগৃতির ফয়সল আরেফিন দীপনকে হত্যা এবং শুদ্ধস্বরের আহমেদুর রশিদ চৌধুরী টুটুলকে আহত করা হয়। এসব কারণেই এবারের মেলার নিরাপত্তা নিয়ে কঠোর ব্যবস্থা নেয় মেলার আয়োজক প্রতিষ্ঠান বাংলা একাডেমি। গতকাল মেলার বিভিন্ন স্টল ঘুরে জানা গেল, এবার ভালো চলছে বৈজ্ঞানিক কল্পকাহিনীর বইগুলো। তবে এর পাশাপাশি দারুণ চলছে উপন্যাস আর কবিতার বইও। মননশীল বইয়ের পাঠকরা বেছে নিচ্ছে প্রবন্ধ আর গবেষণার বই।
এদিকে প্রাণের মেলায় শুরু থেকেই ধুলাবালিতে অস্বস্তিকর পরিবেশ বিরাজ করলেও ৭ম দিনে এসে বদলে গেছে সে চিত্র। মেলা শুরুর আগে বাংলা একাডেমি ও সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে পানি ছিটিয়ে দেয়ার কারণে পরিচ্ছন্ন পরিবেশ বিরাজ করছিল এদিন বইমেলায়।
এর আগে এবারের বইমেলাকে ধুলামুক্ত রাখার ঘোষণা দেয়া হলেও গত ছয় দিনে কোনো কার্যক্রম চোখে পড়েনি। তবে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে পানির গাড়ি ভেতরে প্রবেশে জটিলটার কারণে এমন পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে বলে জানায় মেলা কর্তৃপক্ষ।
সরেজমিন ঘুরে দেখা গেছে, রোববার দুপুরে মেলা শুরুর আগেই বাংলা একাডেমি প্রাঙণ ও সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে পানি ছিটিয়ে দেয়া হয়েছে। স্বস্তি নিয়ে মেলায় সময় কাটিয়েছেন বইপ্রেমীরা।
গতকাল অমর একুশে গ্রন্থমেলার ৮ম দিন পার হয়েছে। মেলায় গতকাল নতুন বই এসেছে ৭৫টি এবং ৬টি বইয়ের মোড়ক উন্মোচন করা হয়। গ্রন্থমেলায় ১ ফেব্রুয়ারি থেকে ৭ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত বাংলা একাডেমির নিজস্ব স্টলে মোট ১৭ লাখ ৫ হাজার ৮০ টাকার বই বিক্রি হয়েছে।
মূলমঞ্চের অনুষ্ঠান : বিকাল ৪টায় গ্রন্থমেলার মূলমঞ্চে অনুষ্ঠিত হয় বাংলা একাডেমির হীরকজয়ন্তী : পাঠ্যপুস্তক রচনা, অতীত থেকে বর্তমান শীর্ষক আলোচনা অনুষ্ঠান। প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন সুব্রত বড়–য়া। আলোচনায় অংশগ্রহণ করেন রতন সিদ্দিকী, মলয় ভৌমিক ও নূরুন্নাহার মুক্তা। সভাপতিত্ব করেন প্রফেসর অজয় রায়।
সভাপতির বক্তব্যে অজয় রায় বলেন, পাঠ্যপুস্তকের মান একটি দেশের সামগ্রিক শিক্ষা ব্যবস্থার জন্য অতি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। বাংলা একাডেমি এ পর্যন্ত বিপুল পরিমাণ পাঠ্যপুস্তক প্রকাশ করে জাতীয় শিক্ষা ক্ষেত্রে তাৎপর্যপূর্ণ অবদান রেখেছে। ভবিষ্যতে পাঠ্যপুস্তক প্রণয়নের ক্ষেত্রে সংখ্যার পাশাপাশি মানের দিকটিও বিশেষভাবে খেয়াল রাখতে হবে।
সন্ধ্যায় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে প্রবীর সরদারের পরিচালনায় সাংস্কৃতিক সংগঠন ‘বাংলাদেশ উদীচী শিল্পীগোষ্ঠী’র শিল্পীবৃন্দ। সংগীত পরিবেশন করেন কণ্ঠশিল্পী ফাতেমা-তুজ-জোহরা, ইয়াকুব আলী খান, ইয়াসমিন মুশতারী, লীনা তাপসী খান, সুমন মজুমদার এবং বিজন চন্দ্র মিস্ত্রী।
আজকের অনুষ্ঠান : বিকেল ৪টায় গ্রন্থমেলার মূলমঞ্চে অনুষ্ঠিত হবে বাংলাদেশের প্রকাশনা কার্যক্রম : অতীত থেকে বর্তমান শীর্ষক আলোচনা অনুষ্ঠান। প্রবন্ধ উপস্থাপন করবেন আহমাদ মাযহার। আলোচনায় অংশগ্রহণ করবেন শিল্পী রফিকুন নবী, কবি তারিক সুজাত, লেখক রেজানুর রহমান এবং পশ্চিমবঙ্গের লেখক-গবেষক ইমানুল হক। সভাপতিত্ব করবেন শিল্পী হাশেম খান। সন্ধ্যায় রয়েছে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: নিরাপত্তা নিয়ে শঙ্কা নেই

৯ ফেব্রুয়ারি, ২০১৬
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ