Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

রাজধানীতে স্বস্তির বৃষ্টি

সিলেটে সর্বোচ্চ ৬৭ মি.মি.

বিশেষ প্রতিনিধি, চট্টগ্রাম ব্যুরো | প্রকাশের সময় : ২০ মে, ২০২১, ১২:০২ এএম

খরা জেঁকে বসেছে। টানা ছয় মাসের খরা-অনাবৃষ্টিতে পানির সঙ্কট সর্বত্র। কৃষি-খামার, জনজীবন, প্রকৃতি-পরিবেশ ও জীববৈচিত্র্য ধুকছে পানির অভাবে। জ্যৈষ্ঠের গোড়া থেকেই তীব্র তাপদাহে পুড়ছে দেশ। মাঝেমধ্যে বজ্র-ঝড়ের সঙ্গে বিক্ষিপ্ত ছিটেফোঁটা বৃষ্টিপাত হচ্ছে, যা খুবই অপ্রতুল। কয়েকদিন বিরতির পর চলমান তাপপ্রবাহে দুর্বিষহ হয়ে উঠেছে স্বাভাবিক জীবনযাত্রা। প্রচণ্ড গরমে হাঁপিয়ে কাহিল হয়ে পড়ছে কর্মজীবী মানুষ। বিশেষত বাতাসে জলীয়বাষ্পের হার ৯৭ শতাংশে উন্নীত হওয়ায় গরমের সাথে ঝাম ঝরছে অত্যধিক। মানুষ দুর্বল-কাহিল হয়ে পড়ছে।

এদিকে অসহনীয় গরমের দহনের মধ্যেই গতকাল মঙ্গলবার বিকেলে হঠাৎ ঢাকার আকাশ কালো মেঘে ছেয়ে গিয়ে বজ্রঝড় ও কালবৈশাখীর সাথে এক পশলা ঝুম বৃষ্টিপাত হয়। শীতল বাতাসের সঙ্গে সাময়িক হলেও এই বর্ষণ জনজীবনে অপার স্বস্তির পরশ বুলিয়ে দিয়েছে। বৃষ্টির ঠাণ্ডা পানিতে শরীর ভিজিয়েছেন পথচারী অনেকেই। আবহাওয়া বিভাগ জানায়, গতকাল সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত ঢাকায় ৪৩ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে। তাপমাত্রা নেমে আসে সর্বোচ্চ ৩৫.৭ ডিগ্রি সে.। তবে আগের রাতে সর্বনিম্ন ২৮.১ ডিগ্রিতে উঠে।

গেল ২৪ ঘণ্টায় ঢাকা ছাড়াও ময়মনসিংহ, সিলেট, রাজশাহী ও খুলনা বিভাগের বিভিন্ন স্থানে হালকা থেকে মাঝারি, কোথাও কোথাও ভারী বৃষ্টিপাত হয়েছে। এ সময়ে সর্বোচ্চ বৃষ্টিপাত হয় সিলেটে ৬৭ মিলিমিটার। এছাড়া ফরিদপুরে ১৭, নিকলীতে ৫০, ময়মনসিংহ ১৫, নেত্রকোনায় ২৩, বদলগাছীতে ১৯, কুষ্টিয়ায় ৮ মি.মি. বৃষ্টি ঝরেছে। গতকালও দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল যশোরে ৩৯ ডিগ্রি সে.। আগের দিন সোমবার সেখানে পারদ লাফ দেয় ৩৯.৪ ডিগ্রিতে। জ্যৈষ্ঠের তাপদাহে প্রায় সারাদেশে দিনের তাপমাত্রার সাথে সাথে রাতের পারদও বেড়েই চলেছে। চট্টগ্রামে গেল ২৪ ঘণ্টায় রাতের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ২৮.৮ ডিগ্রি সে.। ঢাকা, চট্টগ্রাম, খুলনা ও বরিশাল বিভাগের বিভিন্ন স্থানে রাতের তাপমাত্রার পারদ ২৮ ডিগ্রি অতিক্রম করেছে।

বাতাসে জলীয়বাষ্পের মাত্রা অস্বাভাবিক বেশি। গতকাল সকালে ঢাকায় বাতাসে আপেক্ষিক আর্দ্রতার হার ছিল ৯২ ও সন্ধ্যায় আরো বেড়ে ৯৭ শতাংশ। এ অবস্থায় তাপপ্রবাহের সাথে শরীর থেকে অতিরিক্ত হারে ঘাম ঝরছে। অনেকেই অসুস্থ হয়ে পড়ছে।

আজ বুধবার সন্ধ্যা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টার আবহাওয়া পূর্বাভাসে আবহাওয়াবিদ এ কে এম রুহুল কুদ্দুছ জানান, যশোর, কুষ্টিয়া অঞ্চলসহ ঢাকা, ময়মনসিংহ ও সিলেট বিভাগের কিছু কিছু জায়গায় এবং রংপুর, রাজশাহী ও চট্টগ্রাম বিভাগের দু’এক জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা বা ঝড়ো হাওয়াসহ বৃষ্টি বা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। এছাড়া দেশের অন্যত্র আকাশ আংশিক মেঘলাসহ আবহাওয়া প্রধানত শুষ্ক থাকতে পারে।

চলমান তাপপ্রবাহ পরিস্থিতি এবং এ সম্পর্কেত পূর্বাভাসে জানা গেছে, ফরিদপুর, মাদারীপুর, গোপালগঞ্জ, সীতাকুণ্ড, রাঙ্গামাটি, কুমিল্লা, চাঁদপুর, ফেনী, নোয়াখালী, রাজশাহী ও পাবনা অঞ্চলসহ খুলনা ও বরিশাল বিভাগের উপর দিয়ে মৃদু থেকে মাঝারি ধরনের তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। এই তাপপ্রবাহ অব্যাহত থাকতে পারে।
ঢাকায় দক্ষিণ-পশ্চিম ও দক্ষিণ দিক থেকে ঘণ্টায় ১০ থেকে ১৫ কিলোমিটার বেগে বাতাস প্রবাহিত হতে পারে। যা অস্থায়ীভাবে দমকায় ৩০ থেকে ৪০ কিলোমিটারে উন্নীত হতে পারে।

সারাদেশে দিন ও রাতের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে। পরবর্তী ৪৮ ঘণ্টায় আবহাওয়ার সামান্য পরিবর্তন হতে পারে। আর, এরপরের ৫ দিনের শেষে বঙ্গোপসাগরে একটি লঘুচাপ সৃষ্টি হতে পারে।
আবহাওয়া বিভাগ জানায়, লঘুচাপের একটি বর্ধিতাংশ পশ্চিমবঙ্গ ও এর সংলগ্ন এলাকায় অবস্থান করছে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ