পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
উফ্ অসহ্য গা-জ¦ালা গরম! দিনভর প্রখর রোদে সূর্যের কড়া তেজ। বাতাস থমকে আছে। আবার মাঝেমধ্যে বাতাস বইছে যেন মরুর আগুনের ঝাপটা দিয়ে। ফ্যানের গরম বাতাস আরও দুঃসহ। সবখানে অস্বস্তি। করোনাকালে জনজীবনে হাঁসফাঁস অস্থির অবস্থা বিরাজ করছে। গতকাল সোমবার যশোরে তাপমাত্রার পারদ লাফিয়ে উঠে গেছে ৩৯.৪ ডিগ্রি সেলসিয়াসে। ঢাকায়ও পারদ সর্বোচ্চ ৩৬.৬ এমনকি সর্বনিম্ন ২৭.৮ ডিগ্রি সে.। দিনের তাপমাত্রার সাথে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে রাতের পারদ।
গেল সপ্তাহে মাত্র দুই-তিন দিন বিক্ষিপ্ত বৃষ্টি-বজ্রবৃষ্টি দেখা দেয়। এরপর আবার উধাও। তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে প্রায় সারা দেশে। শনিবার জ্যৈষ্ঠের শুরু তাপদাহ দিয়েই। বিরূপ আবহাওয়ায় সর্দি-কাশি, জ¦র, হাঁপানি-শ^াসকষ্ট, ডায়রিয়া, আমাশয়, চর্মরোগ, মাথাঘোরা, মাথাব্যাথাসহ মৌসুমী বিভিন্ন রোগব্যাধিতে ঘরে ঘরে অসুস্থ হয়ে পড়ছে মানুষ। খরা-অনাবৃষ্টিতে বিশুদ্ধ পানির অভাব আরও প্রকট। দূষিত পানিবাহিত রোগব্যাধি ছড়িয়ে পড়ছে বিভিন্ন এলাকায়।
আবহাওয়া বিভাগ বলছে, পশ্চিমা বায়ু ও পূবালী বায়ুর মধ্যে সংযোগ না হওয়ায় কাক্সিক্ষত বৃষ্টিপাত হচ্ছে না। কালবৈশাখী ও বজ্রবৃষ্টির সঙ্গে মৌসুমের এ সময়ে যে ‘স্বাভাবিক’ বৃষ্টিপাত হয়ে থাকে এবার তাও প্রায় উধাও। তাছাড়া বঙ্গোপসাগরে লঘুচাপ-নিম্নচাপের কোন ঘনঘটা নেই। যদিও এ সপ্তাহের শেষে কিংবা আগামী সপ্তাহে সমুদ্রে একটি লঘুচাপ সৃষ্টি হওয়ার সম্ভাবনার কথা বলা হচ্ছে। এখন পর্যন্ত নেই আবহাওয়াগত কোনরূপ পরিবর্তন। বাংলাদেশমুখী মেঘমালা, মেঘের সঞ্চালন-আগমন, বিস্তারও নেই। অন্যদিকে বাতাসে জলীয়বাষ্পের হার অস্বাভাবিক বেশি। গতকাল সকালে ঢাকায় বাতাসে আপেক্ষিক আর্দ্রতার হার ছিল ৯০ শতাংশ। সন্ধ্যায় তা ছিল ৬২ শতাংশ।
ফলে তীব্র গরমের সাথে শরীর থেকে মাত্রাতিরিক্ত ঘাম বের হচ্ছে। এতে করে দ্রুত কাহিল হয়ে পড়ছে মানুষ। দিন এনে দিন খাওয়া শ্রমজীবীদের দুর্ভোগ সবচেয়ে বেশি। চিকিৎসকগণ প্রচণ্ড গরমের মৌসুমের এ সময়ে হিটস্ট্রোক ও শরীরে পানিশূন্যতা এড়াতে প্রচুর বিশুদ্ধ পানি, ঘরে তৈরি শরবৎ পান, পানিযুক্ত দেশীয় ফল খেতে পরামর্শ দিয়েছেন।
এদিকে অস্বাভাবিক আবহাওয়া পরিস্থিতিতে গত ডিসেম্বর থেকে এপ্রিল পর্যন্ত একটানা পাঁচ মাসে সারা দেশে গড়ে ৯১ শতাংশই স্বাভাবিকের চেয়ে কম বৃষ্টিপাত তথা তীব্র খরা-অনাবৃষ্টি আর দহন চলছে। যা মে’তে এসে টানা ছয় মাসেই পড়েছে। গেল এপ্রিল (চৈত্র-বৈশাখ) মাসে সারা দেশে দিনের সর্বোচ্চ ও রাতের সর্বনিম্ন গড় তাপমাত্রা স্বাভাবিকের চেয়ে যথাক্রমে ১.৭ এবং ০.২ ডিগ্রি সে. বেশিই ছিল।
নজিরবিহীন শুষ্ক-রুক্ষ আবহাওয়া, দুঃসহ তাপদাহ বিরাজ করছে। মাঝখানে বৈশাখের শেষ কয়েকটি দিনে দেশের অনেক স্থানে বিক্ষিপ্ত বৃষ্টিপাত হয়েছে। কিন্তু তাতে মাটিও ঠিকমতো ভিজেনি। দেশজুড়ে ফল-ফসল, পরিবেশ-প্রকৃতি, জীববৈচিত্র্য, জনস্বাস্থ্যের উপর পড়েছে বৈরী আবহাওয়ায় মারাত্মক বিরূপ প্রভাব-প্রতিক্রিয়া। পানির উৎসগুলো শুকিয়ে গেছে। পানির সঙ্কটে চাষাবাদে বিপর্যয় ঘটছে। সেচের খরচ জোগাতে গিয়ে বেড়েছে কৃষকের আবাদ-উৎপাদন ব্যয়।
আজ মঙ্গলবার সন্ধ্যা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টার আবহাওয়া পূর্বাভাসে জানা গেছে, ঢাকা, ময়মনসিংহ এবং সিলেট বিভাগের কিছু কিছু জায়গায়, রংপুর, রাজশাহী, খুলনা, বরিশাল, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের দু’এক জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা বা ঝড়ো হাওয়াসহ বৃষ্টি বা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে।
চলমান তাপপ্রবাহ এবং এর পূর্বাভাসে জানা গেছে, সীতাকুণ্ড, রাঙ্গামাটি, কুমিল্লা, চাঁদপুর, নোয়াখালী, ফেনী, রাজশাহী, পাবনা এবং পাবনা অঞ্চলসহ ঢাকা, খুলনা ও বরিশাল বিভাগের উপর দিয়ে মৃদু থেকে মাঝারি ধরনের তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। এই তাপপ্রবাহ অব্যাহত থাকতে পারে।
সারাদেশে দিন ও রাতের তাপমাত্রা সামান্য বৃদ্ধি পেতে পারে। পরবর্তী ৪৮ ঘণ্টায় আবহাওয়ার অবস্থার সামান্য পরিবর্তন হতে পারে। এরপরের ৫ দিনের শেষে বঙ্গোপসাগরে একটি লঘুচাপ সৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। এদিকে পশ্চিমা লঘুচাপের বর্ধিতাংশ পশ্চিমবঙ্গ ও তৎসংলগ্ন এলাকায় অবস্থান করছে। এর কিছু অংশ উত্তর বঙ্গোপসাগর পর্যন্ত বিস্তৃত আছে।
সপ্তাহের পূর্বাভাস
সপ্তাহের প্রথম দিকে রংপুর, ঢাকা, ময়মনসিংহ ও সিলেট বিভাগের কিছু কিছু স্থানে এবং রাজশাহী, খুলনা, বরিশাল ও চট্টগ্রাম বিভাগের দুয়েক জায়গায় অস্থায়ী দমকা থেকে ঝড়ো হাওয়াসহ বৃষ্টি-বজ্রবৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে।
এ সপ্তাহের শেষের দিকে রাজশাহী, রংপুর, ঢাকা, ময়মনসিংহ, সিলেট ও চট্টগ্রাম বিভাগের দুয়েক স্থানে অস্থায়ী দমকা হাওয়াসহ বৃষ্টি-বজ্রবৃষ্টির সম্ভবনা রয়েছে। সেই সাথে দেশের অন্যত্র আবহাওয়া প্রধানত শুষ্ক থাকতে পারে
সপ্তাহের প্রথম দিকে দিন ও রাতের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে। শেষের দিকে সারাদেশে তাপমাত্রা এক থেকে ২ ডিগ্রি সে. বৃদ্ধি পেতে পারে।
এদিকে গতকাল সন্ধ্যা পর্যন্ত গেল ২৪ ঘণ্টায় টাঙ্গাইল (দেশের সর্বোচ্চ ৩০ মিলিমিটার), নেত্রকোনা, সিলেট, রাজশাহী, রংপুর ও চুয়াডাঙ্গায় শুধু বিক্ষিপ্ত হালকা ও গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টিপাত হয়েছে। দেশের অধিকাংশ জেলায় দিনের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৩৬ থেকে ৩৮ ডিগ্রির মধ্যেই রয়েছে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।