ফিলিস্তিনি ভূখন্ডে দফায় দফায় বিমান হামলা চালিয়ে বিশ্ব সন্ত্রাসী ইসরাইল ফিলিস্তিনিদের বিরুদ্ধে ক্রসেড ঘোষণা করছে। সাম্রাজ্যবাদী মার্কিন শক্তির মদদেই বারবার রক্তাক্ত ফিলিস্তিন। মুসলিম বিশ্বের আজ সময় এসেছে ঐক্যবদ্ধ হয়ে মানবতার চরম শত্রু ইহুদিবাদী ইসরায়েলি শক্তিকে চরমভাবে শিক্ষা দেয়ার। অবিলম্বে ফিলিস্তিনী জনগণের ওপর পরিচালিত ইহুদীবাদী ইসরাইলী নৃশংসতা বন্ধ করতে হবে। ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায় মুসলমানদের ওপর ইহুদি ইসরাইলি বিমান হামলার ঘটনার বিরুদ্ধে প্রতিবাদের ঝড় উঠেছে। গতকাল সোমবার জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে মানববন্ধন কর্মসূচি, ঢাকাস্থ জাতিসঙ্ঘ এর আবাসিক প্রতিনিধির কাছে স্মারকলিপি প্রদান এবং বিবৃতিতে নেতৃবৃন্দ এসব কথা বলেন।

পার্লামেন্ট অব ওয়ার্ল্ড সূফীজ : ফিলিস্তিনি ভূখন্ডে দফায় দফায় বিমান হামলা চালিয়ে বিশ্ব সন্ত্রাসী ইসরাইল মুসলমানদের বিরুদ্ধে ক্রসেড ঘোষণা করছে। বর্বর ইহুদিবাদী ইসরাইল স্বাধীন ফিলিস্তিনের ভূখন্ড একের পর এক দখল করে ক্ষান্ত হচ্ছেনা। এরা ফিলিস্তিনিদের উৎখাতে পোড়ামাটি নীতি গ্রহণ করছে। কট্টর ইহুদিবাদী অবৈধ দেশ ইসরাইলিদের স্বাধীন ফিলিস্তিন থেকে তাড়িয়ে দিতে মুসলিম বিশ্ব, জাতিসংঘ, আরব লীগ এবং ওআইসিকে অবিলম্বে জরুরি বৈঠকে বসে আইনি পদক্ষেপ নিতে হবে। গতকাল সোমবার জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে মানববন্ধনে পার্লামেন্ট অব ওয়ার্ল্ড সূফীজ’র চেয়ারম্যান শাহসূফী সৈয়দ সাইফুদ্দীন আহমদ আল-হাসানী এসব কথা বলেন। তিনি বলেন, বিশ্ব যখন করোনা মহামারিতে বিপর্যস্ত ঠিক তখনই ইসরাইল ফিলিস্তিনিদের ওপর একের পর এক বর্বরোচিত হামলা চালিয়ে মুসলমানদের বিরুদ্ধে ক্রসেডে নেমেছে। এতে আরো উপস্থিত ছিলেন, মইনীয়া যুব ফোরামের সভাপতি শাহ্জাদা সাইয়্যিদ মইনুদ্দীন আল হাসানী , সংগঠনের কার্যকরী সভাপতি সাইয়্যিদ মাশুক-এ-মইনুদ্দীন আল হাসানী, ওলামা মাশায়েখ ফোরামের সাধারণ সম্পাদক মুফতি বাকি বিল্লাহ আল আযহারি অ্যাডভোকেট জালালুদ্দিন মাইজভান্ডারী, মাওলানা রুহুল আমিন ভূঁইয়া চাঁদপুরী, শাহ মো. ইব্রাহীমমিয়া, মাওলানা শেখ সাদি আবদুল্লাহ সাদকপুরী, শাহ মোহাম্মদ আসলাম হোসাইন, ঢালি কামরুজ্জামান হারুন মহিউদ্দিন, গোলাম রাব্বী, গাজীপুর জেলা সাধারণ সম্পাদক জুনায়েদ সিদ্দিকী ও মকবুল হোসেন।

বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলন : বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলনের আমীর মাওলানা শাহ আতাউল্লাহ হাফেজ্জী গতকাল এক বিবৃতিতে পবিত্র আল-আলকসা মসজিদ ও গাজায় বারবার ইহুদীবাদী ইসরাইলী বাহিনী বর্বরোচিত হামলার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে বলেন, দখলদার ইহুদীরাষ্ট্র ইসরাইলের হাত থেকে ফিলিস্তিনীদের উদ্ধার করা বিশ^ মুসলিমের ঈমানী ও নৈতিক দায়িত্ব। সন্ত্রাসী রাষ্ট্র ইসরাইল ফিলিস্তিনে গণহত্যা ও তান্ডব চালিয়ে নারী শিশুসহ অনেক ফিলিস্তিনীকে হতাহত করেছে। এ পাশবিক জুলুম, নির্যাতন ও হত্যাকান্ড বিশ্বমুসলিম কোন ভাবেই বরদাশত করতে পারে না। তিনি মুসলিম বিশ্বসহ মানবতাবাদী রাষ্ট্র ও আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোকে ফিলিস্তিনী মজলুম মুসলমানদের পাশে দাঁড়ানো এবং তাদের উদ্ধারে এগিয়ে আসার জন্য আহবান জানান।

জাতীয়তাবাদী গণতান্ত্রিক আন্দোলন (এনডিএম) : সাম্রাজ্যবাদী মার্কিন শক্তির মদদেই বারবার রক্তাক্ত ফিলিস্তিন। মুসলিম বিশ্বের আজ সময় এসেছে ঐক্যবদ্ধ হয়ে মানবতার চরম শত্রু ইহুদীবাদী ইসরায়েলি শক্তিকে চরমভাবে শিক্ষা দেয়ার। যেকোন মূল্যে আমাদের প্রথম কেবলা পবিত্র আল-আকসা মসজিদ দখলদার ইহুদীদের হাত থেকে উদ্ধার করতে হবে। জাতীয়তাবাদী গণতান্ত্রিক আন্দোলন (এনডিএম) এর নীতিনির্ধারনী পর্যায়ের এক জরুরি বৈঠকে গতকাল সোমবার দলের চেয়ারম্যান ববি হাজ্জাজ সভাপতিত্বের বক্তব্যে এসব কথা বলেন। বৈঠকে মুক্তিকামী ফিলিস্তিনি জনগণের উপর দখলদার ইহুদিবাদী ইসরায়েলি গোষ্ঠীর সন্ত্রাসী হামলার তীব্র নিন্দা জানানো হয়েছে।

বৈঠকে এনডিএম চেয়ারম্যান ববি হাজ্জাজ বলেন, গতকালও সন্ত্রাসী ইসরায়েলি গোষ্ঠীর বিমান হামলায় অসংখ্য নিষ্পাপ ফিলিস্তিনি শিশুদের প্রাণ হারিয়েছে। অন্যদিকে বিশ্ব শান্তি এবং মানবতার ফেরিওয়ালা সাজা মার্কিন সাম্রাজ্যবাদী প্রেসিডেন্ট ন্যাক্কারজনকভাবে দখলদার ইসরায়েলিদের সমর্থন দিয়েছেন। আমরা বিশ্বের সকল মুসলিম রাষ্ট্রপ্রধানসহ ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সকল বিবেকবান মানুষের প্রতি ফিলিস্তিনিদের পাশে দাঁড়ানোর জন্য আহবান করছি। মুসলিম বিশ্বের আজ সময় এসেছে ঐক্যবদ্ধ হয়ে মানবতার চরম শত্রু ইহুদিবাদী ইসরায়েলি শক্তিকে চরমভাবে শিক্ষা দেয়ার। সভা পরিচালনা করেন এনডিএম যুগ্ম মহাসচিব মোমিনুল আমিন। সভাশেষে নিহত ফিলিস্তিনিদের রূহের মাগফেরাত কামনায় দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আগামী বৃহষ্পতিবার আনুষ্ঠানিক দোয়ার অনুষ্ঠান আয়োজন করার সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।

আহলে সুন্নাত ওয়াল জামাআত : ফিলিস্তিনে ইসরায়েলি বাহিনী অবৈধ দখলদারীত্ব ও হত্যাযজ্ঞ বন্ধে জাতিসঙ্ঘকে কার্যকর পদক্ষেপ ও পাঁচ দফা দাবি সম্বলিত স্মারকলিপি ঢাকাস্থ জাতিসঙ্ঘ কার্যালয়ে পেশ করা হয়েছে। আহলে সুন্নাত ওয়াল জামাআত বাংলাদেশের পক্ষ থেকে ঢাকাস্থ জাতিসঙ্ঘ এর আবাসিক সমন্বয়ক মিয়া সেপ্পো কাছে স্মারকলিপি পেশ করা হয়। এ সময়ে আহলে সুন্নাত ওয়াল জামাআত বাংলাদেশের নির্বাহী মহাসচিব আল্লামা মুফতি আবুল কাশেম মোহাম্মদ ফজলুল হকের নেতৃত্বে প্রতিনিধি দলে ছিলেন সংগঠনের প্রেসিডিয়াম সদস্য সৈয়দ মুজাফফর আহমদ মুজাদ্দেদি ও আহলে সুন্নাতের নেতা আলহাজ মোহাম্মদ ইকবাল, মোহাম্মদ আনিসুর রহমান, ড. মুহাম্মদ নাসির উদ্দীন, মাওলানা সোলাইমান খান রাব্বানী, মুহাম্মদ ইমরান হুসাইন তুষার, মাওলানা আহমাদ রেজা ফারুকী।

এদিকে, আহলে সুন্নাত ওয়াল জামাআত বাংলাদেশের নেতৃবৃন্দ পরে বারীধারাস্থ ঢাকায় নিযুক্ত ফিলিস্তিনের রাষ্ট্রদূত ইউসুফ এস.ওয়াই.রামাদ্বানের সাথে সাক্ষাতের মিলিত হন। আলোচনাকালে ফিলিস্তিনের রাষ্ট্রদূত বলেন, বাংলাদেশের জনগণ বিশেষত সুন্নী জনতার ভালোবাসা ও সমর্থনই নিপীড়িত ফিলিস্তিনীদের জন্য বড় পাওয়া। আগামীতে যে কোন সহযোগিতার হাত প্রসারিত করার আশা ব্যক্ত করেন। পাঁচ দফা দাবিতে জাতিসঙ্ঘ আবাসিক প্রতিনিধির কাছে পেশকৃত স্মারকলিপির ফটোকপি ফিলিস্তিন রাষ্ট্রদূতের কাছে উপস্থাপন করা হয়।

বাংলাদেশ নেজামে ইসলাম পার্টি : ফিলিস্তিনে মুসলমানদের গণহত্যা বন্ধ করে বায়তুল মুকাদ্দাস মুক্ত করতে বিশ্ব মুসলিমকে ঐক্যবদ্ধ ও কঠোর ভূমিকা গ্রহণ করতে হবে। আল-আকসায় ও গাজায় ইসরায়েলি গণহত্যার প্রতিবাদে গতকাল সোমবার বিকেলে বাংলাদেশ নেজামে ইসলাম পার্টি ও বি-বাড়িয়া জেলার নাসিরনগর উপজেলার ইসলামী ঐক্যজোট ধরমন্ডল ইউনিয়ন শাখার উদ্যোগে নাসিরনগরে বিক্ষোভ সমাবেশে নেতৃবৃন্দ এসব কথা বলেন। সভাপতি মাওলানা আব্দুস সাত্তারের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক মুফতি শফি উদ্দিনের পরিচালনায় এতে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন , বাংলাদেশ নেজামে ইসলাম পার্টির নির্বাহী সভাপতি মাওলানা একেএম আশরাফুল হক।

এতে আরো বক্তব্য রাখেন, সহকারী অধ্যাপক মাওলানা সালাহ উদ্দিন, মাওলানা মুহাম্মদ আলী, মুফতি মুজিবুর রহমান, মাওলানা সালাহ উদ্দিন হামিদী, মুফতি মুসলেহ উদ্দিন, হাফেজ আব্দুল বাছির, মাওলানা একেএম আশিকুর রহমান, হাফেজ নাজমুল হাসান ও হাফেজ কামরুল ইসলাম। নেজামে ইসলাম পার্টির এক বিজ্ঞপ্তিতে এতথ্য জানানো হয়েছে। আরো বলেন, প্রায় প্রতি রমজান মাসেই বর্বর ইহুদীরা ফিলিস্তিনের নিরীহ মুসলমানদের উপর সন্ত্রাসী হামলা করে হত্যা চালায়। ওরা মুসলমানদের রক্ত নিয়ে খেলা করছে। এ অবস্থা আর চলতে দেয়া যায় না। সন্ত্রাসী ইহুদি রাষ্ট্র ইসরাইলকে এখনই রুখে দিতে হবে।

সকল মুসলিম দেশগুলোকে ইসরাইলের বিরুদ্ধে সামরিক ও অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা জারি করে ইহুদি মালিকানা কোম্পানির যাবতীয় পণ্যসামগ্রী বর্জন করতে হবে। পরে বিভিন্ন রাস্তায় ইসরাইল বিরোধী বিক্ষোভ মিছিল বের করা হয়।