পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
বিশেষ সংবাদদাতা : কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডোর আমন্ত্রণে গ্লোবাল ফান্ড সম্মেলনে যোগ দিতে চার দিনের সরকারি সফরে কানাডায় পৌঁছেছেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
জানা গেছে, প্রধানমন্ত্রী লন্ডন হয়ে এয়ার কানাডার একটি ফ্লাইটে গত বৃহস্পতিবার স্থানীয় সময় বিকেল সোয়া ৪টার পর মন্ট্রিলের পিয়েরে ইলিয়ট ট্রুডো আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছালে অটোয়ায় বাংলাদেশের হাই কমিশনার মিজানুর রহমান এবং কানাডার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা তাকে স্বাগত জানান। বিমানবন্দর থেকে শেখ হাসিনাকে মোটর শোভাযাত্রা করে নিয়ে যাওয়া হয় মন্ট্রিলের ওমনি মন্ট-রয়্যাল হোটেলে। কানাডায় এই সফরে ওই হোটেলেই অবস্থান করবেন প্রধানমন্ত্রী।
১২ দিনের এই সরকারি সফরে মন্ট্রিলে ‘ফিফথ রিপ্লেনিশমেন্ট কনফারেন্স অব দ্য গ্লোবাল ফান্ড (জিএফ)’-এর পাশাপাশি যুক্তরাষ্ট্রের নিউ ইয়র্কে জাতিসংঘের ৭১তম সাধারণ অধিবেশনে যোগ দেবেন তিনি। বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের একটি ভিভিআইপি ফ্লাইটে গত বুধবার সকালে ঢাকা থেকে রওনা হওয়ার পর লন্ডনে ২২ ঘণ্টা যাত্রা বিরতি করেন প্রধানমন্ত্রী। লন্ডনের হিথ্রো থেকে কানাডার পথে রওনা হওয়ার সময় যুক্তরাজ্যে বাংলাদেশের ভারপ্রাপ্ত হাইকমিশনার খন্দকার মোহাম্মদ তালহা এবং প্রবাসী বাংলাদেশীরা তাকে বিদায় জানান বলে জানিয়েছে বাসস।
স্থানীয় সময় শুক্রবার বিকালে মন্ট্রিলের হায়াত রিজেন্সি হোটেলে গ্লোবাল ফান্ড সম্মেলনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে যোগ দেয়ার কথা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার। ২০৩০ সালের মধ্যে এইডস, যক্ষ্মা ও ম্যালেরিয়ার মত ঘাতক ব্যাধির ব্যাপক বিস্তার রোধে করণীয় ঠিক করতে দুই দিনের এ সম্মেলন হচ্ছে।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের পর একই হোটেলে অন্যান্য রাষ্ট্র ও সরকার প্রধানদের সঙ্গে সম্মেলনের মিনিস্ট্রিয়াল প্লেজিং মোমেন্ট ও সংবর্ধনায় অংশ নেবেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী। পরে কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডোর দেয়া নৈশভোজে যোগ দেবেন।
দ্বিতীয় দিনে শেখ হাসিনা কানাডার প্রধানমন্ত্রী ও গ্লোবাল ফান্ডের নির্বাহী পরিচালক মার্ক ডাইবালের সঙ্গে সম্মেলনে যোগ দেবেন। এছাড়া ‘রিমুভিং ব্যারিয়ার্স থ্রু হেলথ থ্রো এম্পাওয়ারিং উইমেন অ্যান্ড গার্লস অ্যান্ড রিচিং দ্য মোস্ট মার্জিনালাইজড’ এবং ‘এনগেজিং অ্যান্ড মোবিলাইজিং ইয়ুথ টু মিট দ্য সাসটেইনেবল ডেভেলপমেন্ট গোলস’ শীর্ষক প্যানেল আলোচনায় অংশ নেবেন তিনি। এরপর কানাডার গভর্নর জেনারেল ডেভিড জনস্টনের যৌথ আয়োজনের মধ্যাহ্নভোজে অংশ নেয়ার কথা রয়েছে শেখ হাসিনার। সম্মেলনের সমাপনী অধিবেশনে যোগ দেয়ার পর শেখ হাসিনা কানাডার প্রধানমন্ত্রী ট্রুডোর সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বৈঠক করবেন।
বাসস জানিয়েছে, বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সময় ‘দ্ব্যর্থহীন সমর্থন ও অবদানের জন্য’ কানাডার তখনকার প্রধানমন্ত্রী পিয়েরে ট্রুডোকে বাংলাদেশ সরকারের পক্ষ থেকে মরণোত্তর মুক্তিযুদ্ধ সম্মাননা দেয়া হবে। পিয়েরে ট্রুডোর ছেলে জাস্টিন ট্রুডোর হাতে সেই সম্মাননা তুলে দেবেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী। এছাড়া অন্যান্য রাষ্ট্র ও সরকার প্রধানদের সঙ্গে গ্লোবাল ফান্ড ও গ্লোবাল সিটিজেন আয়োজিত কনসার্টেও অংশ নেয়ার কথা রয়েছে শেখ হাসিনার।
কানাডা সফর শেষে ১৮ সেপ্টেম্বর দুপুরে এয়ার কানাডার একটি ফ্লাইটে নিউ ইয়র্ক পৌঁছাবেন প্রধানমন্ত্রী। সেখানে তিনি অবস্থান করবেন পার্ক এভিনিউয়ের হোটেল ওয়ার্ল্ডোফ অ্যাস্টোরিয়ায়।
শেখ হাসিনা ১৯ সেপ্টেম্বর জাতিসংঘের সদরদপ্তরে উদ্বাস্তু ও অভিবাসনের ওপর সাধারণ পরিষদের উচ্চ পর্যায়ের প্ল্যানারি বৈঠকে ভাষণ দেবেন। এরপর মিয়ানমারের স্টেট কাউন্সিলর ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী অং সাং সু চি’র সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বৈঠক করবেন।
ওই দিন বিকালে জাতিসংঘে ‘গ্লোবাল কমপ্যাক্ট ফর সেইফ, রেগুলার অ্যান্ড অর্ডারলি মাইগ্রেশন : টুওয়ার্ডস রিয়ালাইজিং দ্য ২০৩০ এজেন্ডা ফর সাসটেইনেবল ডেভেলপমেন্ট অ্যান্ড অ্যাচিভিং ফুল রেসপেক্ট ফর দ্য হিউম্যান রাইটস অ্যান্ড মাইগ্র্যান্টস’ শীর্ষক গোলটেবিলে কো-চেয়ারের দায়িত্ব পালন করবেন শেখ হাসিনা।
তিনি ২০ সেপ্টেম্বর জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের ৭১তম অধিবেশনের সাধারণ আলোচনার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে যোগ দেবেন। পরে হোটেল ম্যারিয়ট ইস্টসাইডে জাপানের প্রধানমন্ত্রী শিনজো আবে আয়োজিত কাউন্টার টেররিজমের উপর এশিয়ান লিডার্স ফোরামের বৈঠকে যোগ দেবেন। একই দিনে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা আয়োজিত উদ্বাস্তু বিষয়ক একটি বৈঠক এবং এক সংবর্ধনা অনুষ্ঠানেও শেখ হাসিনার যোগ দেয়ার কথা রয়েছে।
বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সুইজারল্যান্ডের প্রেসিডেন্টের দ্বিপক্ষীয় বৈঠক হওয়ার কথা রয়েছে ২২ সেপ্টেম্বর। ওই দিনই সুইডেনের প্রধানমন্ত্রী আয়োজিত গ্লোবাল ডিল ইনিশিয়েটিভের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে যোগ দেবেন হাসিনা।
ওই দিন বিকালে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের ৭১তম অধিবেশনের সাধারণ আলোচনায় বক্তব্য দেবেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী। সেদিন রাতে নিউ ইয়র্কে হোটেল গ্র্যান্ড হায়াতে প্রবাসী বাংলাদেশীদের এক সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে এবং ২২ সেপ্টেম্বর নিউ ইয়র্কে বাংলাদেশের স্থায়ী মিশনে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি বক্তব্য রাখবেন।
প্রধানমন্ত্রী জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে যোগ দেয়ার সময় বিভিন্ন রাষ্ট্র ও সরকার প্রধানের সঙ্গে বৈঠক ছাড়াও কমনওয়েলথ মহাসচিব, ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরামের নির্বাহী চেয়ারম্যান এবং বিশ্ব ব্যাংকের প্রেসিডেন্টের সঙ্গে বৈঠক করবেন। তিনি ২২ সেপ্টেম্বর সড়কপথে ভার্জিনিয়ার উদ্দেশে নিউ ইয়র্ক ত্যাগ করবেন এবং ২৫ সেপ্টেম্বর এমিরেটস এয়ারলাইনের ফ্লাইটে দেশের উদ্দেশে ওয়াশিংটন ডিসি ত্যাগ করবেন। সফর শেষে ২৬ সেপ্টেম্বর বিকালে ঢাকায় ফিরবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।