Inqilab Logo

মঙ্গলবার ১৯ নভেম্বর ২০২৪, ০৪ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৬ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

ঢাকায় ফিরছে মানুষ

প্রকাশের সময় : ১৭ সেপ্টেম্বর, ২০১৬, ১২:০০ এএম

স্টাফ রিপোর্টার : স্বজনদের সাথে ঈদ উদযাপন শেষে ঢাকা ফিরছে মানুষ। রাজধানীর বাস টার্মিনাল, ট্রেন স্টেশন, সদর ঘাটসহ সর্বত্রই এখন ঢাকামুখী মানুষের ভিড়। প্রিয়জন, বন্ধু-বান্ধব আর আত্মীয়-স্বজনদের সঙ্গে ঈদের আনন্দ উপভোগ শেষে নাড়ির টানে বাড়ি ফেরা কর্মজীবী মানুষগুলো এখন আবারও জীবিকার তাগিদে রাজধানীমুখী হয়েছেন। ঈদের নির্ধারিত ছুটির বাইরে ১১ সেপ্টেম্বর সরকারি ছুটি ঘোষণা করায় এবার ঈদে ছয় দিনের টানা ছুটি মিলেছে। আনুষ্ঠানিক ছুটি শেষে বৃহস্পতিবার প্রথম কর্মদিবসেও ঢাকা ছিল ফাঁকা। সেদিন ঐচ্ছিক ছুটি কাটিয়ে সরকারি কর্মচারীদের অনেকেই পরিবার নিয়ে ঢাকা ফিরতে শুরু করেছেন গতকাল (শুক্রবার) থেকে। আজ সাপ্তাহিক ছুটি শেষে আগামীকাল থেকে রাজধানী ঢাকা তার পুরনো চেহারায় ফিরবে। পরিবহন সংশ্লিষ্টরা জানান, বৃহস্পতিবার রাত থেকেই সড়কপথে ফিরতিযাত্রার চাপ বেড়েছে। সায়েদাবাদ, কল্যাণপুর, গাবতলী ও মহাখালী বাস টার্মিনালে গত দু’দিনের তুলনায় বেশি বাস বিভিন্ন এলাকা থেকে যাত্রী নিয়ে এসেছে বলে জানিয়েছেন তারা। এদিকে, দেশের বিভিন্ন প্রান্তে ঈদ উদযাপন শেষে রাজধানী ঢাকায় ফিরতে ভোগান্তি শিকার হচ্ছেন বলে জানা গেছে। বাস, ট্রেন, লঞ্চসহ বিভিন্ন যানবাহনে ঢাকায় ফিরতে এ ভোগান্তির সম্মুখীন হচ্ছেন তারা। দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে রাজধানী ফেরার দূরপাল্লার বাস বা ট্রেনের অগ্রিম টিকিট আগেই শেষ হয়ে গেছে। ফলে যারা টিকিট পাননি তারা বাধ্যে হয়েই তুলনামূলক খারাপ বা লোকাল গাড়িতে রাজধানীতে ফিরছেন। ফিরতি পথেও যাত্রীদের গুণতে হচ্ছে অতিরিক্ত ভাড়া।
ট্রেনের ক্ষেত্রে ট্রেনগুলোতে উপচে পড়া ভিড়ের মধ্যেই যাত্রীরা গন্তব্যে পৌঁছাছেন। গতকাল সকালে কমলাপুর স্টেশনেও ঈদ উদযাপন শেষে ঢাকা ফেরত মানুষের ভিড় দেখা গেছে। বেলা ১২টায় স্টেশনে আসা নোয়াখালী এক্সপ্রেসে ছিল উপচেপড়া ভিড়। পরিপূর্ণ কামরার বাইরেও ট্রেনের ছাদ ও বগির করিডোর ছিল ভিড়ে ঠাঁসা। ওই ট্রেনে ঢাকায় আসা রফিকুল ইসলাম বলেন, যাত্রীর চাপ থাকলেও পরিবারের ছয় সদস্যকে নিয়ে তার আসতে অসুবিধা হয়নি। ঈদের ছুটি নোয়াখালীর গ্রামের বাড়িতে উদযাপন শেষে ঢাকায় ফিরলেন তিনি। কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশনের ব্যবস্থাপক সিতাংশু চক্রবর্তী জানান, শুক্রবার দুপুর ১টা পর্যন্ত কমলাপুর থেকে ২২টি ট্রেন ছেড়ে গেছে। এই সময়ের মধ্যে ১৮টি ট্রেন কমলাপুরে পৌঁছেছে। সবগুলো ট্রেনই যাত্রীতে ভরপুর ছিল। বিভিন্ন ট্রেনে নতুন বগি সংযোজিত হওয়ার পর এবার ঈদযাত্রা ‘আরও নির্বিঘœ হয়েছে’ বলে দাবি করেন তিনি। মোহনগঞ্জ এক্সপ্রেস ও সোনার বাংলা নামের দুটি ট্রেন নতুন করে যুক্ত হয়েছে এবার। পাশাপাশি চিত্রা, ধূমকেতু, সিল্কসিটিসহ আরও কয়েকটি কোচে বগি সংযোজিত হয়েছে। যাত্রীরা ভোগান্তি ছাড়াই ভ্রমণ করতে পারছেন।
ঈদের ছুটি শেষে কর্মস্থল ঢাকায় ছুটছেন দক্ষিণাঞ্চলের ২১ জেলার হাজার হাজার মানুষ। গতকাল সকাল থেকে ঢাকামুখী যাত্রীদের স্রোত ছিল মাদারীপুরের কাওড়াকান্দি ও দৌলতদিয়া ঘাটে। ভোর থেকেই কাওড়াকান্দি ঘাটে স্পিডবোটে যাত্রীদের ভিড় ছিল চোখে পড়ার মত। অনেকেই দীর্ঘ সময় লাইনে দাঁড়িয়ে থেকে টিকিট কেটে লঞ্চ ও স্পিডবোটে চড়ে ঘাট পাড়ি দিয়েছেন। এদিকে, বাড়তি যানবাহনের চাপে দীর্ঘ যানজটের সৃষ্টি হয়েছে দুই ঘাটেই। বিভিন্ন জেলা থেকে আসা যাত্রীদের শিবচরের বাইপাস সড়কে নেমে হেঁটে কাওড়াকান্দি ঘাটে পৌঁছতে হচ্ছে। দৌলতদিয়া ঘাটেও গতকাল সময় বাড়ার সাথে সাথে গাড়ির চাপ বাড়তে থাকে। বিআইডব্লিউটিসি’র কাওড়াকান্দি ফেরিঘাটের ব্যবস্থাপক মো. সালাম হোসেন জানান, কাওড়াকান্দি-শিমুলিয়া নৌরুটে ৮৬টি লঞ্চ, দুই শতাধিক স্পিডবোটে যাত্রী এবং ১৭টি ফেরি দিয়ে যাত্রী ও যানবাহন পারাপার করা হচ্ছে। তবে যাত্রীদের সুবিধার্থে বন্ধ রয়েছে ট্রাক পারাপার। এছাড়া প্রশাসনের পক্ষ থেকে যাত্রী হয়রানি বন্ধে একাধিক ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালিত হচ্ছে। অন্যদিকে দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া ফেরিঘাটে কয়েকটি ঘাট বন্ধ থাকায় গাড়ি পারাপারে দীর্ঘ সময় লাগছে। এজন্য ঢাকা ফেরত যানবাহনগুলোকে দীর্ঘ সময় ধরে অপেক্ষা করতে হচ্ছে। অনেকে আবার বাস থেকে নেমে পায়ে হেঁটে দৌলতদিয়া ঘাট দিয়ে ফেরি পার হয়ে ঢাকা ফিরছেন।
ঢাকা ছাড়ার সময় ঢাকা-চট্টগ্রাম, ঢাকা-টাঙ্গাইল, ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কে যেমন যানজটের সৃষ্টি হয়েছিল এবং ঘরে ফেরা মানুষগুলো ভোগান্তিতে পড়েছিল ঢাকা ফিরে আসতে এখনো তেমন পরিস্থিতির দেখা যায়নি। গতকাল পর্যন্ত সবক’টি মহাসড়কেই যান চলাচল ছিল স্বাভাবিক। দু’একটি স্থানে ধীরগতি ছাড়া বাধাহীনভাবেই ঢাকা পৌঁছেছেন যাত্রীরা। রোজিনা পরিবহনে ঠাকুরগাঁও থেকে ঢাকায় আসা যাত্রী সুমন শাহরিয়ার জানান, ঈদের আগে ঢাকা থেকে ঠাকুরগাঁও যেতে যেখানে ২২ ঘণ্টা লেগেছিল সেখানে ফিরতি পথে মাত্র ৯ ঘণ্টাতেই পৌঁছে গেছেন। বগুড়া থেকে মাত্র সাড়ে তিন ঘণ্টায় ঢাকা আসতে পেরেছেন বলে জানিয়েছেন শরিফুল ইসলাম। চট্টগ্রাম মহাসড়কেও স্বাচ্ছন্দ্যে ভ্রমণ করতে পেরেছেন বলে জানিয়েছেন নাহিদ। তিনি জানান, সাড়ে তিন ঘণ্টায় চট্টগ্রাম থেকে রাজধানীর আরামবাগে পৌঁছেছেন। রাজশাহীর তাহেরপুর থেকে পুঠিয়া-নাটোর হয়ে ঢাকায় ফেরা হুমায়ন অভিযোগ করে বলেন, বাস সব স্টপেজ থেকে যাত্রী তুলছে। বাস ভরে গেলে ছাদ, চালকের পাশে যাত্রীদের বসিয়ে এনেছে। এছাড়াও তুলনামূলক ভাড়াও বেশি নিয়েছে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: ঢাকায় ফিরছে মানুষ

১৭ সেপ্টেম্বর, ২০১৬
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ