পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
তৃতীয় দফা করোনাভাইরাস পরীক্ষায় নেগেটিভ রিপোর্ট এসেছে বিএনপি চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার। করোনা আক্রান্ত হওয়ার পর থেকেই সেই ভাইরাসের কোন উপসর্গ না থাকলেও করোনা পরবর্তী শারীরিক জটিলতায় ভুগছেন ৭৫ বছর বয়সী এই সাবেক প্রধানমন্ত্রী। তাঁর করোনার শ্বাসকষ্টসহ নানা শারীরিক অসুস্থতা নিয়ে উদ্বিগ্ন দেশের সাধারণ মানুষ, দলের নেতাকর্মী ও পরিবারের সদস্যরা। দীর্ঘদিন ধরে কারাবন্দী ও করোনার কারণে গৃহবন্দী থাকার কারণে যথাযথ চিকিৎসা না হওয়ায় সেগুলো জটিলাকার ধারণ করেছে বলে মনে করছেন চিকিৎসকরাও। বেগম জিয়ার জন্য গঠিত ১০ সদস্যের মেডিকেল বোর্ডের চিকিৎসকরা ইতোমধ্যে তারা বেগম জিয়াকে বিদেশে উন্নত চিকিৎসা প্রদানের জন্য সুপারিশও করেছে। এজন্য দ্রæতই উন্নত চিকিৎসার জন্য বেগম খালেদা জিয়াকে বিদেশে নিতে চায় তার পরিবার। তাই গত বুধবার রাতে খালেদা জিয়ার ছোট ভাই শামীম এস্কান্দার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের ধানমÐির বাসায় গিয়ে বিএনপি চেয়ারপারসনকে বিদেশে নেওয়ার অনুমতি চেয়ে লিখিত আবেদন করেছেন।
এদিকে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার সর্বশেষ স্বাস্থ্য পরিস্থিতি পর্যালোচনায় গতকাল দুপুরে বৈঠকে বসেন তার জন্য গঠিত মেডিকেল বোর্ড। তার ব্যক্তিগত চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, বৃহস্পতিবার বেলা দেড়টার দিকে গুলশানের এভারকেয়ার হাসপাতালে দশ সদস্যের মেডিকেল বোর্ড তাদের পর্যালোচনা বৈঠক শুরু করেন। বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর দুপুরে হাসপাতালে গিয়ে তাদের নেত্রীর সর্বশেষ অবস্থা নিয়ে চিকিৎসকদের সঙ্গে কথা বলেন। হাসপাতালে যাওয়ার আগে এক সংবাদ সম্মেলনে ফখরুল বলেছিলেন, খালেদা জিয়ার মধ্যে কোভিড-১৯ সংক্রমণ পরবর্তী বিভিন্ন জটিলতা রয়েছে। সেজন্য ‘মানবিক’ বিবেচনায় উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে বিদেশে নেওয়ার অনুমতি দিতে সরকারের প্রতি আহবান জানান বিএনপি মহাসচিব।
বিএনপি ও পরিবারের সূত্রে জানা যায়, সরকারের আনুষ্ঠানিক অনুমতি পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই উন্নত চিকিৎসার উদ্দেশে খালেদা জিয়াকে সিঙ্গাপুর অথবা লন্ডন যাত্রা করবেন পরিবারের সদস্যরা। বিএনপি চেয়ারপারসন সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো বলছে, আবেদন পাওয়ার পর স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল জানিয়েছিলেন তারা বিষয়টিকে ইতিবাচকভাবে বিবেচনা করছেন। এজন্য তাদের বিশ্বাস ছিল আবেদন পাওয়ার পর গতকাল বৃহস্পতিবারই তারা হয়তো অনুমতি পেয়ে যাবেন। সেজন্য এ দিনই চার্টার্ড বিমানে করে সিঙ্গাপুর অথবা লন্ডন নিয়ে যাওয়ার সার্বিক প্রস্তুতি রাখা হয়। খালেদা জিয়াকে হাসপাতাল থেকে বিমানবন্দরে পৌঁছে দেয়ার অ্যাম্বুলেন্সও প্রস্তুত রাখা হয়। কিন্তু গতকাল স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে আবেদনটি আইন মন্ত্রণালয়ে গিয়ে আটকে আছে। আগামী রোববার সেটির বিষয়ে মতামত দেওয়ার কথা জানিয়েছেন আইনমন্ত্রী আনিসুল হক। ফলে এখন শুধু সরকারের অনুমতির অপেক্ষায় রয়েছে সাবেক প্রধানমন্ত্রীর বিদেশ যাত্রা।
এদিকে বেগম জিয়ার বোন সেলিমা ইসলাম জানান, পত্রে নির্দিষ্ট কোন দেশের কথা উল্লেখ না করা হলেও বেগম জিয়ার চিকিৎসা লন্ডনে করানোর ইচ্ছা তাদের। যেহেতু এর আগেও সেখানে তার চিকিৎসা করা হয়েছে। যেখানে তার বড় ছেলে দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের কাছে থেকেই খালেদা জিয়া চিকিৎসা করাতে পারবেন বলেও জানান সেলিমা ইসলাম। বিএনপি চেয়ারপারসনকে বিদেশে নিতে সব ধরণের প্রস্তুতি তাদের আছে, তারভ সরকারের গ্রিন সিগনালের অপেক্ষায় রয়েছেনি বলে মন্তব্য করেন তিনি।
কি আছে মেডিকেল রিপোর্টে: খালেদা জিয়ার কিছু মেডিক্যাল রিপোর্ট তার শারীরিক অবস্থা পরীক্ষার প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, তাঁর হাই সেনসেটিভ ট্রপোনিন-১ রিপোর্ট ভালো আসেনি। এ ক্ষেত্রে একজন নারীর স্বাভাবিক রেফারেন্স মাত্রা ধরা হয় ১৫.৬-এর কম। বেগম খালেদা জিয়ার সেই মাত্রা ২১.২। এই রিপোর্টের মাধ্যমে তার হার্টের অবস্থা নির্ণয় করা হয়। রক্ত জমাট বাঁধছে কিনা জানতে ডি-ডিমার পরীক্ষা করা হয়। এর স্বাভাবিক রেফারেন্স মাত্রা ৫০০-এর নিচে। বেগম জিয়ার তা ২১৩৪.৩। স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি হলে তা রক্ত জমাট বাঁধার ইঙ্গিত দেয়।
তার হিমোগেøাবিন মাত্র ৭.৭। স্বাভাবিক অবস্থায় তা ১১.৫-১৬.৫-এর মধ্যে থাকার কথা। এনটি পরীক্ষাও স্বাভাবিকের চেয়ে অনেক বেশি। স্বাভাবিকভাবে ১২৫-এর কম থাকতে হয়। বেগম খালেদা জিয়ার রক্ত পরীক্ষায় তা ২২৩৮ এসেছে। এই পরীক্ষার রিপোর্ট তার হার্ট ও ফুসফুসের অস্বাভাবিক অবস্থা বোঝাচ্ছে। এ ছাড়া সিএ ১২৫ পরীক্ষার উচ্চমাত্রা একটি জটিল রোগের ঝুঁকি নির্ণয় করে। ওই পরীক্ষার স্বাভাবিক মাত্রা ১২৫-এর নিচে হলেও বেগম জিয়ার তা ৯৬২। এ দ্বারা শুধু ওই জটিল রোগের ঝুঁকির মাত্রা বোঝায়। পরীক্ষায় জানা গেছে খালেদা জিয়ার শরীরে দুরারোগ্য কোনো ব্যাধির অস্তিত্ব নেই। করোনা পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার কারণে এ সমস্যাগুলো যে কোন সময় তীব্র খেকে তীব্রতর হতে পারে। তাছাড়া তার ডায়াবেটিক বেশ উঠানামা করেছে। এ পর্যন্ত দুই বার ফুসফুস থেকে অতিরিক্ত পানি অপসারণ করা হয়েছে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।