Inqilab Logo

সোমবার, ২৪ জুন ২০২৪, ১০ আষাঢ় ১৪৩১, ১৭ যিলহজ ১৪৪৫ হিজরী

স্বপ্ন দেখছে উপজেলাবাসী লামায় টিউবওয়েলের পাইপ দিয়ে নির্গত হচ্ছে গ্যাস

প্রকাশের সময় : ১৬ সেপ্টেম্বর, ২০১৬, ১২:০০ এএম

বান্দরবান জেলা সংবাদদাতা : বান্দরবানের লামা উপজেলায় কয়লা খনির সন্ধানের পর এবার দুটি টিউবওয়েলের পাইপ দিয়ে পানির পাশাপাশি অনবরত প্রাকৃতিক জ্বালানি গ্যাস সদৃশ খনিজ পদার্থ নির্গতের সন্ধান পাওয়া গেছে। উপজেলার ফাঁসিয়াখালী ইউনিয়নের ইয়াংছা হেডম্যানপাড়া বৌদ্ধ বিহারের ও আবদুস সালাম মেম্বারের টিউবওয়েল থেকে এ গ্যাস নির্গত হচ্ছে। উপজেলা সদর থেকে প্রায় ১২ কিলোমিটার দূরে এর অবস্থান। তবে তিন সপ্তাহেও সেখানে যায়নি কোন বিশেষজ্ঞদল। ফলে জানা যাচ্ছেনা আসলেই গ্যাসের কোন মজুদ আছে কিনা সেখানে। গ্যাস পাওয়া গেছে এটি আনন্দের খবর হলেও এই গ্যাস কোন বিপদ ডেকে আনে কিনা সেই ব্যাপারে চিন্তিত এলাকার মানুষগুলো। যেভাবে দিন দিন গ্যাস নির্গত হচ্ছে যদি এখন থেকে নিয়ন্ত্রণ করা না হলে সিলেটের টেংরাছড়ির অবস্থা হতে পারে বলে মন্তব্য করেন স্থানীয়রা। উপজেলার নলকূপের পাইপে গ্যাস নির্গমণের লক্ষণগুলোর প্রেক্ষিতে আপাতত সম্ভাবনা উজ্জল বলা চলে। সরজমিন জানা যায়, স্থানীয় বাসিন্দাদের পানীয় জলের সংকট নিরসনের জন্য সাত বছর আগে জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর ইয়াংছা হেডম্যান পাড়াস্থ বৌদ্ধ বিহারে একটি ডিপ টিউবওয়েল স্থাপন করে। টিউবওয়েল স্থাপনের পর থেকেই পাইপ দিয়ে অনবরত পানি ঝরে পড়া শুরু হয়। কড়া লোনা স্বাদের কারণে এ পানি কেউ পান করেন না। গোসল করলেও গায়ে চুলকানি হয়। কেবলমাত্র হাত-পা ধোয়ার কাজে এ পানি ব্যবহৃত হয় মাত্র।
হেডম্যানপাড়া বৌদ্ধ বিহারের অধ্যক্ষ উ. ওয়াইন্দাশিরি ভিক্ষু জানায়, গত ২৩ আগস্ট রাতে বিদ্যুৎ না থাকায় মোমবাতি নিয়ে পানি নিতে টিউবওয়েলের পাইপের পানির ধারে গেলে হঠাৎ পানির উপরিভাগে বাতির আগুন লাগা মাত্রই দাউ-দাউ করে আগুন জ্বলে ওঠে। তাৎক্ষণিকভাবে বিষয়টি স্থানীয় হেডম্যান, ইউনিয়ন পরিষদ সদস্য ও চেয়ারম্যানকে অবহতি করি। তিনি আরও জানান, পাশের আবদুল সালাম মেম্বারের বাড়ির টিউবওয়েলের পানির সাথেও একই ভাবে গ্যাস নির্গত হচ্ছে । স্থানীয় মৌজা হেডম্যান নিংমং মার্মা ও ইউপি সদস্য আপ্রæচিং মার্মা বলেন, গ্যাস নির্গত হওয়ার বিষয়টি জানতে পেরে আমরা দিয়াশলায়ের কাঠি দিয়ে আগুন লাগিয়ে দেখেছি টিউবওয়েলের পানির উপরে আগুন জ্বলছে। এতে বুঝা যায় সেখানে গ্যাস উঠছে। নির্গত গ্যাস সংরক্ষণে কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ জরুরী। এদিকে স্থানীয় প্রবীণ ব্যক্তিরা জানান, গ্যাস নির্গত হওয়ার দৃশ্যটি দেখে ধারণা হচ্ছে, পাহাড় জুড়ে কোথাও না কোথাও বিপুল পরিমাণ গ্যাস মাটির নিচে মজুদ রয়েছে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে ফাঁসিয়াখালী ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান জাকের হোসেন মজুমদার জানান, আমরা বিষয়টি ভুতাত্তি¡ক বিভাগকে অবহিত করেছি। যেসব গ্যাসের পকেট মুখ পাওয়া গেছে তার ভিত্তিতে পর্যাপ্ত অনুসন্ধান হলেই এখানে প্রাকৃতিক খনি রয়েছে কিনা তা সঠিকভাবে বলা যাবে। তিনি আরও বলেন, এই সব লক্ষণ গুলোর প্রেক্ষিতে আপাতত সম্ভাবনা উজ্জল বলা চলে। ডিপ টিউবওয়েলের পাইপ দিয়ে পানির পাশাপাশি গ্যাস নির্গত হওয়ার সত্যতা নিশ্চিত করে লামা উপজেলা নির্বাহী অফিসার খালেদ মাহ্মুদ জানান, টিউবওয়েলের পাইপ দিয়ে গ্যাস বের হওয়ার খবর শোনা গেছে। আমারা বিষয়টি পর্যবেক্ষণ করছি। এ ব্যাপারে পেট্রো বাংলা এবং খনিজ সম্পদ মন্ত্রনালয়কে জানানো হবে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: স্বপ্ন দেখছে উপজেলাবাসী লামায় টিউবওয়েলের পাইপ দিয়ে নির্গত হচ্ছে গ্যাস
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ