পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন বিএনপি চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া অত্যন্ত অসুস্থ। তাঁর শারীরিক অবস্থা অপরিবর্তিত রয়েছে। করোনারি কেয়ার ইউনিটে (সিসিইউতে) চিকিৎসাধীন সাবেক এই প্রধানমন্ত্রীর গতকাল বুধবার সকাল থেকে শ্বাসকষ্ট কিছুটা বেড়ে যায়। তার ডায়াবেটিসের মাত্রা ওঠানামা ছিল। এ ছাড়া অক্সিজেনের মাত্রাও কিছুটা কমে যায়। বেগম জিয়ার মেডিকেল বোর্ডের এক চিকিৎসক এ তথ্য জানিয়েছেন।
তিনি বলেন, বুধবার সকাল থেকে ম্যাডামের শ্বাসকষ্ট কিছুটা বেড়েছে। মেডিকেল বোর্ডের চিকিৎসকরা তার আরো কিছু পরীক্ষার পরামর্শ দিয়েছেন। তাকে অক্সিজেন দিয়ে রাখা হয়েছে। তার জরুরি চিকিৎসা সেবা পর্যবেক্ষণের জন্য হাসপাতালে নার্স, ডাক্তার, টেকনোলজিস্ট, ফার্মাসিস্টসহ সংশ্লিষ্টরা সার্বক্ষণিক যুক্ত রয়েছেন। ওই চিকিৎসক বলেন, খালেদা জিয়ার বয়স যেহেতু বেশি তাই জটিলতাগুলো দ্রুত নিয়ন্ত্রণে আনতে চেষ্টা করছেন চিকিৎসকেরা। কিছু নতুন ওষুধও দেয়া হয়েছে। বিএনপির চেয়ারপারসনের শারীরিক অবস্থা পরিবারকে জানানো হয়েছে। দলকে জানানো হয়েছে। আপাতত হাসপাতালে রেখেই তাকে চিকিৎসা দেয়া হবে। করোনায় যারা আক্রান্ত হয়েছেন, সেরে ওঠার পর তারা কমবেশি সবাই কিছু না কিছু জটিলতায় ভুগেছেন বা ভোগেন। খালেদা জিয়ারও সেটিই হয়েছে। বড় বিষয় হচ্ছে বেগম জিয়া আগে থেকেই বেশ কিছু জটিল রোগে ভুগছেন। বেগম খালেদা জিয়া গত ১১ই এপ্রিল করোনায় আক্রান্ত হন। গত ২৭ এপ্রিল তাকে রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। গত সোমবার শ্বাসকষ্ট অনুভব করায় খালেদা জিয়াকে কেবিন থেকে হাসপাতালের করোনারি কেয়ার ইউনিটে (সিসিইউ) স্থানান্তর করা হয়। এখনো সেখানেই তিনি চিকিৎসা নিচ্ছেন।
এদিকে বেগম খালেদা জিয়া অত্যন্ত অসুস্থ জানিয়েছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর দেশবাসীর কাছে দোয়া চেয়েছেন। তিনি বলেন, আমাদের দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া অত্যন্ত অসুস্থ অবস্থায় হাসপাতালে আছেন। আসুন আমরা সবাই মিলে, আন্তরিকতার সঙ্গে দোয়া করি তার আশু রোগমুক্তির জন্য। গতকাল বুধবার জিয়াউর রহমান ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগীদের স্বাস্থ্যসেবা দিতে তৈরি অ্যাপস এর উদ্বোধন উপলক্ষে আয়োজিত এক ভার্চুয়াল অনুষ্ঠানে তিনি একথা বলেন।
করোনা মহামারীর সরকারের প্রণোদনায়ও দুর্নীতি হচ্ছে অভিযোগ করে মির্জা ফখরুল বলেন, করোনায় যে প্রণোদনা দেয়া হয়েছে তাতে মানুষের জীবিতার প্রশ্ন। সেখানেও পুরোপুরিভাবে দুর্নীতির আশ্রয় গ্রহন করা হয়েছে। জনগণের জন্য কোনো ব্যবস্থা করা হয়নি। এই সরকার সম্পূর্ণভাবে জনবিচ্ছিন্ন একটি সরকার। যেহেতু তাদের কোনো জবাবদিহিতা নেই, সেজন্য মানুষের জীবন-জীবিকার প্রশ্নেও তাদের কোনো দায়িত্ববোধ নাই। সেই দায়িত্বহীনতার কারণে, জবাবহীনতার কারণে আজকে গোটা জাতিকে একটা চরম বিপদের মুখে ঠেলে দেয়া হয়েছে।
করোনাভাইরাস সংক্রমণে সরকারের ব্যর্থতা তুলে ধরে বিএনপি মহাসচিব বলেন, প্রকৃত পক্ষে মহামারী শুরু হওয়ার পর থেকে সরকারের চরম অযোগ্যতা ও অজ্ঞানতা এই করোনাভারাসকে নিয়ন্ত্রণের বাইরে ঠেলে দিয়েছে। দুর্ভাগ্যজনকভাবে আমাদের এখানে কারোনা চিকিৎসার জন্যে সরকারের তরফ থেকে সেই ধরনের কোনো ব্যবস্থাই গ্রহন করা হয়নি। একদিকে করোনা টেস্টে মিথ্যাচার অন্যদিকে চিকিৎসার ক্ষেত্রে সম্পূর্ণ ভ্রষ্টাচার করে, দুর্নীতি করে তারা দেশটাকে চরম বিপদের মধ্যে ফেলে দিয়েছে। আমরা কিছুদিন আগে দেখলাম যে, দুইটা হাসপাতাল উধাও হয়ে গেছে এবং স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে যে হারে দুর্নীতি হচ্ছে যে, তাতে তারা দুর্নীতির পাহাড় গড়ে তুলেছে। স্বাস্থ্য খাত ভেঙে পড়েছে, চরম ভঙ্গুর একটা স্বাস্থ্যখাত এই সরকার তৈরি করেছে। সরকারের ব্যর্থতা-অযোগ্যতায় গোটা জাতি আজকে বিপদের সম্মুখিন হয়েছে।
করোনা মহামারীর মতো এরকম সংকট গণতান্ত্রিক সরকার ছাড়া মোকাবিলা করা সম্ভব নয় উল্লেখ করে তিনি বলেন, এখন সবচেয়ে বড় প্রয়োজন একটা গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র ব্যবস্থা, গণতান্ত্রিক সরকার, গণতান্ত্রিক পার্লামেন্ট তৈরি করা যেখানে জবাবদিহিতা থাকবে, জনগণের প্রতি দায়িত্ববোধ থাকবে, যেখানে মানুষের সাথে সম্পর্ক থাকবে সেই ধরনের একটা ব্যবস্থা আমাদের তৈরি করা দরকার।
মির্জা ফখরুল আহ্বান জানিয়ে বলেন, আসুন এই ফ্যাসিস্ট দানব সরকার যারা আমাদের সব কিছু তছনছ করে দিয়েছে তাদেরকে সরিয়ে সত্যিকার অর্থেই এই করোনা মহামারী বলুন, এই স্বাস্থ্য ব্যবস্থাকে সুন্দর করে নিয়ে আসা বলুন বা আমাদের জাতির জনগণের একটা ভবিষ্যত নির্মাণ করা বলুন- সব কিছুর জন্য গণতন্ত্রকে ফিরিয়ে আনতে যেটা প্রয়োজন আমরা সবাই মিলে সংগ্রাম করি, লড়াই করি। অবশ্যই আমরা সেই সংগ্রামের জয়ী হবো ইনশাল্লাহ।
জিয়াউর রহমান ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে করোনাভাইরাসে সংক্রমিত রোগীদের চিকিৎসা সেবার জন্য ‘জেডআরএফ ট্রিটমেন্ট অ্যাপস’ এর উদ্বোধন করা হয়। অনুষ্ঠানে লন্ডন থেকে ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান তারেক রহমানের ভিডিও বার্তা প্রচার করা হয়। এই অ্যাপসটি উৎসর্গ করা হয় জাতীয়তাবাদী স্বেচ্ছাসেবক দলের মরহুম সভাপতি শফিউল বারী বাবুর স্মরণে।
ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক প্রফেসর ডা. ফরহাদ হালিম ডোনারের সভাপতিত্বে ও সৈয়দ ইমতিয়াজ উদ্দিন সাজিদের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে স্বেচ্ছাসেবক দলের মোস্তাফিজুর রহমান, ছাত্রদলের ফজলুর রহমান খোকন, ইকবাল হোসেন শ্যামল, ডা. আশরাফুল হাসান মানিক প্রমূখ বক্তব্য রাখেন।
অনুষ্ঠানে প্রফেসর ড. আখতার হোসেন খান, প্রফেসর ড. এবিএম ওবায়দুল ইসলাম, প্রফেসর ড. মোরশেদ হাসান খান, ডা. শাহ মুহাম্মদ আমানউল্লাহ, প্রফেসর আবদুল করীম, প্রফেসর হারুন আল রশিদ, এএস হায়দার পারভেজ, মীর হেলাল উদ্দিন, যুবদলের সুলতান সালাহউদ্দিন টুকু, স্বেচ্ছাসেবক দলের আবদুল কাদির ভুঁইয়া জুয়েল, গোলাম সারোয়ার, সাদরেজ জামান, বিথীকা বিনতে হোসাইন, শফিকুল ইসলামসহ মহানগর বিএনপি, যুবদল, ছাত্রদল ও ড্যাবের সদস্যরা অংশ নেন।#
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।