পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
বাংলাদেশে মূল ধারা গণমাধ্যমে সেলফ সেন্সরশিপের প্রবণতা বেড়েই চলেছে বলে সাংবাদিকদের অনেকে মনে করেন। বিশ্ব মুক্ত গণমাধ্যম দিবসের প্রেক্ষাপটে বাংলাদেশে গণমাধ্যমের সাথে জড়িতদের অনেকে স্বীকার করছেন, সেলফ সেন্সরশিপ, অর্থাৎ নিজেরাই খবর চেপে যাওয়া বা প্রকাশ না করার ঘটনা অনেক বেড়ে গেছে।
বাংলাদেশে গণমাধ্যমের স্বাধীনতার প্রশ্ন উঠলে সাধারণত সরকারের নানা কালাকানুন, বিধিনিষেধ বা চাপের প্রতি ইঙ্গিত করেন অনেকে। বিশেষ করে বর্তমান সরকারের আমলে করা ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের কথা উল্লেখ করা হয়। কিন্তু গণমাধ্যমের স্বাধীনতার পথে বাধা কি কেবল সরকার? গণমাধ্যমের মালিক যারা- তারা নিজেরাও কি স্বাধীন সাংবাদিকতার পথে বাধা সৃষ্টি করছেন না? বাংলাদেশের সম্পাদক এবং সাংবাদিকরা স্বীকার করছেন, গণমাধ্যমে বিগত দশকগুলোতে যে ধরণের পুঁজির লগ্নি হয়েছে, তাতে করে মালিকের ব্যবসায়িক স্বার্থ প্রাধান্য পাচ্ছে এবং সাংবাদিকতার নয়, মালিকের স্বাধীনতার নিশ্চিত হচ্ছে। সম্প্রতি বাংলাদেশের মুল ধারার গণমাধ্যমের প্রতি মানুষের আস্থার সংকটের অভিযোগ নিয়ে সামাজিক মাধ্যমে ব্যাপক আলোচনা চলছে।
ঢাকার গুলশানে একজন কলেজ ছাত্রীর কথিত আত্নহত্যায় প্ররোচনা দেয়ার অভিযোগে সম্প্রতি যে মামলা হয়, মামলাটির খবর প্রকাশের ক্ষেত্রে মুলধারার কিছু প্রভাবশালী সংবাদ মাধ্যমে প্রথমে অভিযুক্ত বসুন্ধরা গ্রুপের এমডি সায়েম সোবহান আনভীরের নাম প্রকাশ করা হয়নি। সেই প্রেক্ষাপটে গণমাধ্যমে সেলফ সেন্সরশিপের ইস্যু আবারও আলোচনায় এসেছে। এই প্রবণতা উদ্বেগজনকহারে বেড়ে চলেছে বলে গণমাধ্যমের সাথে জড়িতদের অনেকে মনে করেন।
বাংলাদেশের মুলধারার গণমাধ্যমের বিরুদ্ধে মানুষের আস্থার অভাবের অভিযোগ নিয়ে নানা আলোচনা চলছে সামাজিক মাধ্যমে। ইংরেজি দৈনিক দ্য ডেইলি স্টারের সম্পাদক মাহফুজ আনাম গণমাধ্যমে সেলফ সেন্সরশিপের প্রবণতা বৃদ্ধির পেছনে বড় কারণ হিসাবে দেখেন ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনকে। তিনি বলেন, ‘সামগ্রিকভাবে আমাদের পেশাটা একটুখানি হুমকির মুখে। তারপর এই যে কোভিড এবং ডিজিটাল যে ট্রানজিশন-সব মিলিয়ে প্রিন্ট মিডিয়া বেশ কিছুভাবে আক্রান্ত বলা যেতে পারে। কিন্তু আমার ব্যক্তিগত মত হচ্ছে, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন একটা ভয়াবহ পরিবেশ সৃষ্টি করেছে। যেখানে সঠিক এবং স্বাধীন সাংবাদিকতা করা অত্যন্ত দুরহ ব্যাপার হয়ে গেছে।’
যদিও বিভিন্ন সময় সরকারের বিরুদ্ধে চাপ সৃষ্টি করার নানা অভিযোগ রয়েছে সাংবাদিকদের। কিন্তু কোনো ক্ষেত্রে যখন সরকারের স্বার্থ বা চাপ সৃষ্টির তেমন কোন বিষয় থাকে না, তখনও গণমাধ্যমে সেলফ সেন্সরশিপের অভিযোগ উঠছে। সেখানে মালিকের স্বার্থের প্রশ্নকে বড় কারণ হিসাবে উল্লেখ করেন সাংবাদিক-সম্পাদকদের অনেকে। সাংবাদিক মোস্তফা ফিরোজ বলেছেন, গণমাধ্যমে প্রশ্নবিদ্ধ পুঁজি এবং কর্পোরেট হাউজের বিনিয়োগ বেড়েই চলেছে। তিনি মনে করেন, বিনিয়োগকারীদের অনেকে তাদের ব্যবসার স্বার্থে এবং অনেক ক্ষেত্রে ক্ষমতা বা রাজনৈতিক স্বার্থে গণমাধ্যমকে ঢাল হিসাবে ব্যবহারের চেষ্টা করেন। অন্যদিকে দলীয় বিবেচনায় বা রাজনৈতিক কারণে সাংবাদিকদের ইউনিয়নগুলোও বিভক্ত।
সাংবাদিকদের অধিকার আদায়ের আন্দোলনের একজন নেতা ইকবাল সোবহান চৌধুরী এখন একটি ইংরেজী দৈনিকের মালিক সম্পাদক। তিনি বেসরকারি টেলিভিশন ডিবিসি নিউজেরও অন্যতম একজন মালিক। তিনিও বলেছেন, এখন মালিকদের স্বাধীনতা রয়েছে, কিন্তু স্বাধীনতা নেই সাংবাদিকের। কর্পোরেট হাউজগুলোর এখন মিডিয়ার মালিক হওয়ার একটা প্রবণতা দেখা যাচ্ছে।
তিনি বলেন, ‘আমাদের এখানে নতুন যে ট্রেন্ড দেখা যাচ্ছে, তা হচ্ছে, কর্পোরেট গোষ্ঠীর মালিকানার যে হাউজগুলো, সেখানেও একটা বিভক্তি দেখা যায়। কখনও কখনও এক হাউজ আরেক হাউজকে তাদের ব্যবসায়িক বা রাজনৈতিক স্বার্থে আঘাত হানছে, সেখানে কিন্তু কর্মরত সাংবাদিকরা অংশীদার হয়ে যাচ্ছেন। এটি কিন্তু সাংবাদিকতার নীতি নৈতিকতার বিপরীত।’ সূত্র: বিবিসি।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।