পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
আসামি না হয়েও টানা ১৬ মাস কারাভোগের পর মুক্তি পেলেন হাছিনা বেগম (৪০)। মুক্তি পেয়েই বিনাদোষে কারাপ্রকোষ্ট থেকে অসুস্থ হয়ে পড়া হাছিনা স্বজনদের দেখে কান্নায় ভেঙে পড়েন। যাদের ভুলে তার জীবন থেকে ১৬টি মাস হারিয়ে গেছে তিনি তাদের বিচার দাবি করেন। তার আগে গতকাল মঙ্গলবার চট্টগ্রামের চতুর্থ অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ শরীফুল আলম ভ‚ঁঞা তাকে মুক্তির আদেশ দেন। এ মামলায় সাজাপ্রাপ্ত প্রকৃত আসামির নাম হাছিনা আক্তার (৩০)। তিনি পলাতক।
মাদকের মামলায় ৫ বছর সাজাপ্রাপ্ত হাসিনা আক্তারের বদলে পুলিশ হাছিনা বেগমকে ধরে নিয়ে আসে। পানের বরজে কাজ করে তিন সন্তান নিয়ে সংসার চালাতেন হাছিনা বেগম। তাকে গ্রেফতারের পর পুরো পরিবারটি গভীর সঙ্কটে পড়ে। বড় দুই ভাই বোন মানুষের বাড়িতে কাজে চলে যান। ছোট বোনকে পাঠিয়ে দেয়া হয় নানা বাড়ি।
এদিকে কারাপ্রকোষ্টে গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়েন হাছিনা বেগম। বিষয়টি স¤প্রতি চট্টগ্রাম মহানগর অতিরিক্ত ৫ম আদালতের নজরে আনেন অ্যাডভোকেট গোলাম মাওলা মুরাদ। তিনি জানান, আদালত হাছিনা বেগমকে কারাগার থেকে মুক্তির আদেশ দিয়েছেন। এর আগে সকালে চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগারের ছবিযুক্ত বালামে প্রকৃত হাসিনা আক্তার ও হাছিনা বেগম একই আসামি নন বলে আদালতে প্রতিবেদন দাখিল করে কেন্দ্রীয় কারাগার কর্তৃপক্ষ।
চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগারের জ্যেষ্ঠ তত্ত্বাবধায়ক মো. শফিকুল ইসলাম খান আদালতে এক পৃষ্ঠার প্রতিবেদন দেন। এতে বলা হয়, নগরীর কর্ণফুলী থানায় ইয়াবা উদ্ধারের মামলায় ২০১৭ সালে কারাগারে আসা হাসিনা আক্তারের ছবির সঙ্গে ২০১৯ সালে কারাগারে আসা হাছিনা বেগমের ছবির মিল নেই। দুজনের বয়সের পার্থক্য রয়েছে। আগেই টেকনাফ থানা পুলিশের পক্ষ থেকে কারাবন্দি হাছিনা বেগম আর প্রকৃত আসামি সাজাপ্রাপ্ত হাসিনা আক্তার এক নয় বলে প্রতিবেদন দেয়া হয়।
অ্যাডভোকেট গোলাম মাওলা মুরাদ জানান, ওই দুটি প্রতিবেদনের ভিত্তিতে আদালত তাকে মুক্তি দেয়ার নির্দেশ দেন। এরপর বিকেলে কারাগার থেকে মুক্তি পান হাছিনা বেগম। হাছিনা বেগমের বাড়ি কক্সবাজার জেলার টেকনাফ পৌরসভার চৌধুরী পাড়ায়। তিনি হামিদ হোছনের স্ত্রী। সাজাপ্রাপ্ত আসামি হাসিনা আক্তারও একই এলাকার ইসমাইল হাজি বাড়ির হামিদ হোসেনের স্ত্রী।
আদালত সূত্র জানায়, ২০১৭ সালের ২৪ ফেব্রæয়ারি নগরীর কর্ণফুলী থানার মইজ্জারটেক এলাকা থেকে পুলিশ হাসিনা আক্তার, তার স্বামী হামিদ ও দুই সন্তানকে দুই হাজার ইয়াবাসহ গ্রেফতার করে। এ ঘটনায় পুলিশ বাদী হয়ে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে মামলা করে। তদন্ত শেষে হাসিনা আক্তার ও তার স্বামী হামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দেয় পুলিশ। ওই বছরের ২৭ নভেম্বর জামিনে মুক্তি পান তারা। পরে স্বামী-স্ত্রী আত্মগোপনে যান। আসামিরা পলাতক থাকা অবস্থায় ২০১৯ সালের ১ জুলাই পঞ্চম অতিরিক্ত চট্টগ্রাম মহানগর দায়রা জজ হাসিনা আক্তার ও তার স্বামী হামিদকে পাঁচ বছর করে সশ্রম কারাদন্ড দেন। পরে তাদের সাজা পরোয়ানা আদালত থেকে টেকনাফ থানায় যায়।
টেকনাফ থানার পুলিশ ২০১৯ সালের ডিসেম্বরে টেকনাফ পৌরসভার ৭ নম্বর ওয়ার্ডের ইসমাঈল হাজিবাড়ির হাছিনা বেগমকে গ্রেফতার করে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠায়। কিন্তু প্রকৃত আসামি একই এলাকার চৌধুরীপাড়ার হাসিনা আক্তার ধরাছোঁয়ার বাইরে থেকে যান। সেই থেকে আসামি না হয়েও কারাভোগ করে আসছিলেন হাছিনা বেগম।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।