পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
স্টাফ রিপোর্টার : যথাযোগ্য ধর্মীয় ভাবগাম্ভীর্যের মধ্য দিয়ে মঙ্গলবার (১৩ সেপ্টেম্বর) দেশজুড়ে পালিত হয়েছে ঈদ-উল-আজহা। দেশে প্রতি বছর পশুর চামড়ার বড় সংগ্রহ আসে কোরবানির ঈদের সময়েই। আর এই সময়ে বাড়তি কিছু টাকা আয়ের আশায় অনেকেই নেমে পড়েন চামড়া ব্যবসায়। তবে এবার চামড়ার আশানুরূপ দাম পাচ্ছেন না বলে অভিযোগ করেছেন সেসব মৌসুমী ব্যবসায়ীরা। ট্যানারি মালিকদের সিন্ডিকেটে পড়ে অনেক মৌসুমী চামড়া ব্যবসায়ী মূলধন হারিয়ে ফেলেছেন বলে অভিযোগ করেন।
মঙ্গলবার বিকালে সরেজমিনে দেখা যায়, বিভিন্ন বাসা থেকে স্থানীয় মৌসুমী ব্যবসায়ীরা চামড়া কিনছেন। নগরীর রাস্তাগুলোর দুই পাশে বিভিন্ন ব্যবসায়ীদের চামড়া কিনতে দেখা গেছে। লালবাগের পোস্তা এলাকার আড়তে খিলগাঁও এলাকা থেকে ৪০টি গরুর চামড়া নিয়ে এসেছেন মো. ফারুখ হোসেন। তিনি জানান, এলাকা থেকে ১৫০০-১৬০০ টাকা দরে চামড়া কিনলেও পোস্তায় ব্যবসায়ীরা এক হাজার থেকে ১১শ’ টাকার বেশি দাম বলছেন না।
ঈদের মধ্যে বাড়তি লাভের আশায় চামড়া ব্যবসায় নেমেছিলেন আরিফুল ইসলাম। তিনিও হতাশার সুরে জানান, যে দামে বিভিন্ন এলাকা থেকে চামড়া সংগ্রহ করেছেন এবং আড়ৎদাররা যে দাম বলছে তাতে লোকসান গুনতে হবে। পরে অধিকাংশ ব্যবসায়ী কম মূল্যে চামড়া বিক্রি করেন বলে জানা যায়। শুধু তাই নয় রাজধানী ঢাকার বিভিন্ন মহল্লায় তরুণ যুবকদের দেখা গেছে কম দামে চামড়া বিক্রি করতে বাধ্য করছেন সাধারণ মানুষকে।
তবে লালবাগ পোস্তার চামড়া ব্যবসায়ী সমিতির সাবেক সভাপতি আফতাব খান দাবি করে বলেন, মৌসুমি ব্যবসায়ীরা বাংলাদেশ ট্যানার্স অ্যাসোসিয়েশন ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের বেঁধে দেয়া দামের চেয়ে বেশি দরে চামড়া কিনে আমাদের ওপর লোকসানের দায় চাপাচ্ছেন। আমরা এর চেয়ে বেশি দরে চামড়া কিনে ট্যানারি মালিকদের কাছে দাম পাব না। বাংলাদেশ ট্যানার্স অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক শাখাওয়াত উল্লাহর দাবি ‘মৌসুমী ব্যবসায়ীদের আনা চামড়া আমাদের অনেক ঝুঁকি নিয়ে কিনতে হচ্ছে। পশু কোরবানি দেয়ার সময় বৃষ্টির কারণে অনেক চামড়া কেটে ফেলেছে। এছাড়া বৃষ্টির কারণে ভেজা চামড়ায় পচনও ধরেছে। ফলে ১১শ’ টাকা থেকে ১২শ’ টাকার বেশি দরে চামড়া কেনা সম্ভব হচ্ছে না।
এদিকে, নামমাত্র মূল্যেই বিভিন্ন এলাকা থেকে মৌসুমী ব্যবসায়ীরা চামড়া সংগ্রহ করছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। অনেককে জোর করেই ইচ্ছামতো দাম হাতে ধরিয়ে দিয়ে, কাউকে পরে টাকা দেয়ার কথা বলে চামড়া নিয়েছেন ‘মহল্লার পোলাপাইন’খ্যাত মৌসুমী ব্যবসায়ীরা। ফকিরাপুল এলাকার বাসিন্দা হাবীবুর রহমান জানান, আমরা বেশ বড় গরু কোরবানি দিয়েছি। মহল্লার একদল ছেলে এসে জোর করে ১ হাজার টাকা হাতে ধরিয়ে দিয়ে চামড়া নিয়ে গেলেন। শনির আখড়ার আবদুর রব জানান, দুই হাজার টাকা মূল্যের চামড়া তাকে মাত্র ১১শ’ টাকা দেয়া হয়েছে। একই এলাকায় চামড়া সংগ্রহকারী মৌসুমী ব্যবসায়ী আবুল কালাম জানান, তারা এলাকা থেকে চামড়া সংগ্রহ করে ট্যানারি মালিকদের দেন। সরকার গরুর চামড়া বর্গফুট প্রতি ৪০ টাকা নির্ধারণ করেছে। তবে এ দামে তাদের পোষায় না বলে কম দামে চামড়া কিনছেন। তিনি জানান, সরকারের রেট অনুসারে বড় গরুর চামড়া প্রায় ২ হাজার টাকা দাম হয়। কিন্তু বেশিরভাগ গরুই ছোট। যে কারণে বর্গফুট অনুযায়ী দাম দিলে খরচের পর কিছু থাকে না। তাই ৫শ’ টাকা থেকে সর্বোচ্চ ১২০০ টাকায় চামড়া কিনছেন তিনি। আরেকজন মৌসুমী ব্যবসায়ী জানান, তারা ৫০টি চামড়া কম দামে কিনে বিক্রি করলেও ২০ হাজার টাকা লোকসান দিয়েছেন।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।