Inqilab Logo

সোমবার ১৮ নভেম্বর ২০২৪, ০৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৫ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

ট্যাম্পাকোতে চলছে ধ্বংসাবশেষ অপসারণ

উদ্ধার অভিযানে সেনাবাহিনী : লাশ ৩৪ নিখোঁজ ১০

প্রকাশের সময় : ১৬ সেপ্টেম্বর, ২০১৬, ১২:০০ এএম

মো. দেলোয়ার হোসেন, গাজীপুর : টঙ্গী বিসিকের ট্যাম্পাকো ফয়েলস কারখানা এখনো উত্তপ্ত। উচ্চ ক্ষমতা সম্পন্ন দাহ্য কেমিকেলের কারণে কারখানার অভ্যন্তরে এখনো ঢুকতে পারেননি উদ্ধারকর্মীরা। ভেতর থেকে এখনো ধোঁয়া বের হচ্ছে। গাজীপুর জেলা প্রশাসনের নিয়ন্ত্রণ কক্ষের হিসেব মতে ট্যাম্পাকো দুর্ঘটনায় এ পর্যন্ত ৩৪ জন নিহত হয়েছেন। এখনো নিখাঁজ রয়েছেন ১০ জন। এর আগে নিখোঁজের তালিকায় ছিলেন ১২ জন। গত সোমবার সকালে দমকল বাহিনীর সাথে উদ্ধার অভিযানে অংশ নেয় সেনাবাহিনী। সেনা অভিযানের প্রথম দিন ৩ লাশ উদ্ধার হলে নিখোঁজদের মধ্যে ২ লাশ শনাক্ত হয়। সে হিসেবে নিখোঁজের তালিকায় এখনো আছেন ১০ জন। এছাড়া আহতদের মধ্যে ৩ জনের অবস্থা এখনো আশঙ্কাজনক। এখনো তাদের জ্ঞান ফিরেনি। তাদের মধ্যে দুইজন ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ও একজন ধানমন্ডির একটি প্রাইভেট হাসপাতালের আইসিইউতে আছেন। টঙ্গী সরকারি হাসপাতালেও এখনো দুইজন চিকিৎসাধীনে রয়েছেন। গত শনিবার ট্যাম্পাকো দুর্ঘটনার দিন টঙ্গী সরকারি হাসপাতাল থেকে গুরুতর আহত মোট ৩৮ জনকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। আরো ৩০ জনকে এই হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে ছেড়ে দেয়া হয়। ইতিমধ্যে আরো ৬ জন এই হাসপাতালে ভর্তি থেকে চিকিৎসা নেন। সর্বশেষ গত মঙ্গলবার রাত সাড়ে ১১টার দিকে রাজধানীর ধানমন্ডির নর্দান হাসপাতালে মনোয়ার হোসেন (৩৮) নামে অগ্নিদগ্ধ এক শ্রমিক মারা যান। মনোয়ার হোসেন ট্যাম্পাকো কারখানার লেদ সেকশনের ইনচার্জ ছিলেন। তিনি শরীয়তপুরের নড়িয়া উপজেলার আনাখন্দ গ্রামের মমতাজ উদ্দিন দেওয়ানের ছেলে।
নিহত ২৭ জনের পরিচয় শনাক্ত : নিহত ৩৪ জনের মধ্যে ২৭ জনের পরিচয় পাওয়া গেছে। এরা হলেনÑ টাঙ্গাইলের গোপালপুর থানার ভেংগুলা গ্রামের কৃষ্ণ প্রসাদের ছেলে সুভাষ চন্দ্র প্রসাদ, ভোলার দৌলতখান গ্রামের জবুল হকের ছেলে জাহাঙ্গীর আলম, ময়মনসিংহের ত্রিশাল থানার কাকচুর গ্রামের আরশাদ আলীর ছেলে রফিকুল ইসলাম, একই জেলার ঈশ্বরগঞ্জ থানার শরিষা গ্রামের আজিম উদ্দিনের ছেলে আব্দুর রাশেদ (২৫), চাঁদপুর জেলার মতলব উত্তর থানার রুহিতারপাড় গ্রামের মৃত খালেক মাস্টারের ছেলে আব্দুল হান্নান, কুড়িগ্রামের ভুরুঙ্গামারী থানার মানিককাজী গ্রামের নিজাম উদ্দিনের ছেলে ইদ্রিস আলী (৪০), ঢাকার নবাবগঞ্জ থানার বড়বাহা গ্রামের মৃত নবদীপ দাসের ছেলে গোপাল দাস (২৫), একই থানার চরমানপুর গ্রামের নিতাই সরকারে ছেলে শংকর সরকার, পিরোজপুরের মঠবাড়িয়া থানার পশ্চিম ফুলজুড়ি গ্রামের মৃত ইনজাম উদ্দিন আজাদের ছেলে আল মামুন (৪০), সিলেটের গোলাপগঞ্জ থানার সুন্দিসাই গ্রামের সোনা মিয়ার ছেলে এনামুল হক (৩৮), কিশোরগঞ্জের হোসেনপুর থানার আস্তাফলা গ্রামে করিম বক্সের ছেলে সোলায়মান (৩৫), টাঙ্গাইল সদরের মধুপুর গ্রামের আবুল কাশেমের ছেলে আনিছুর রহমান (৫০), একই এলাকার মৃত তোফাজ্জল হোসেনের ছেলে ওয়ালি হোসেন (৩৫), ভোলা দৌলতখান থানার লেজপাড়া গ্রামের মৃত তোফাজ্জল হোসেনের ছেলে মাইন উদ্দিন (৩৫), সিলেটের গোলাপগঞ্জের সুন্দিসাড়ি গ্রামের তানজিদ আলীর ছেলে সাইদুর রহমান (৫০), টাঙ্গাইল সদরের মধুপুর গ্রামের মৃত মচর আলীর ছেলে হাসান সিদ্দিকী (৫০), চট্টগ্রামের সন্দীপ এলাকার মোস্তাফিজুর রহমানের ছেলে মামুন, সিলেটের মিবগঞ্জ সোনাপাড়া এলাকার আবদুল আহাদের ছেলে মিজানুর রহমান, হবিগঞ্জের চুনারঘাট থানার পমদশপ্যানপুর গ্রামের হাবিবুর রহমানের মেয়ে রেজিনা, বাগেরহাটের মোরেলগঞ্জ উপজেলার আদর্শপাড়া এলাকার মৃত মুকুল চন্দ্র দাসের ছেলে রিপন দাস (৩০)। এ ছাড়া শরীয়তপুরের ভেদরগঞ্জ উপজেলার উত্তর মহিষা গ্রামের মৃত ওয়াজেদ আলীর ছেলে আনোয়ার হোসেন (৪০), সিরাজগঞ্জের চৌহালী উপজেলার মুরাদনগর এলাকার ওয়াহিদুজ্জামান তপন (৩৬), শেরপুরের শীবর্ধী উপজেলার পুরাঘর এলাকার আবদুল খালেকের ছেলে দেলোয়ার হোসেন (৫০), হবিগঞ্জের চুনারুঘাট উপজেলার আদমপুর এলাকার হাবিবুর রহমানের মেয়ে তাহমিনা আক্তার (২০), ময়মনসিংহের মুক্তাগাছা উপজেলার পাবাডুবি এলাকার রসি মিয়ার ছেলে আশিক (১৪) ও মনোয়ার হোসেন (৩৮)।
যারা এখনো নিখোঁজ : ট্যাম্পাকো দুর্ঘটনায় এখনো ১০ জন নিখোঁজ রয়েছেন। নিখোঁজ শ্রমিকের তালিকায় রয়েছেনÑ মাগুরা সদরের চনপুর ইডারন গ্রামের আব্দুল মালেক মোল্লার ছেলে আজিম উদ্দিন (৩৬), টাঙ্গাইলের মির্জাপুরের উকুলকি গ্রামের মৃত আবুল হোসেনের ছেলে জহিরুল ইসলাম (৩৭), ল²ীপুরের রামগঞ্জের শিবপুর গ্রামের মো. আবু তাহেরের ছেলে রিয়াদ হোসেন মুরাদ (৩২), একই গ্রামের সুলতান গাজীর ছেলে আনিসুর রহমান (৩০), সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুরের ঝিগারবাড়িয়া গ্রামের মমতাজ আলীর ছেলে মো. ইসমাইল হোসেন (৪৫), একই এলাকার সুলতান গাজীর ছেলে মো. আনিছুর রহমান (৩০), কিশোরগঞ্জের হোসেনপুরের মেছেরা গ্রামের মৃত আব্বাস আলীর ছেলে মো. রফিকুল ইসলাম (৪০), চাঁদপুরের কচুয়ার তেগরিয়া গ্রামের ইউনুস পাটোয়ারীর ছেলে নাসির উদ্দিন পাটোয়ারী (৪৫), কুমিল্লার মুরাদনগরের টনকী গ্রামের মো. তোফায়েল হোসেনের ছেলে মাসুম আহমেদ (৩০) ও ফরিদপুর জেলার বোয়ালমারি থানার বাহির নগর গ্রামের মোজাম মোল্লার ছেলে চুন্নু মোল্লা (২২)।
উদ্ধার অভিযানে সেনাবাহিনী : ফায়ার সার্ভিসের সহকারী পরিচালক দেবাশীষ বর্ধন জানান, রোববার রাত সাড়ে নয়টার দিকে লে. কর্নেল মো. শফিউল আজমের নেতৃত্বে ১৪ স্বতন্ত্র ইঞ্জিনিয়ার ব্রিগেডের সেনাসদস্যরা কারখানাটির অবস্থা পর্যবেক্ষণে আসেন। পর্যবেক্ষণ শেষে পরিকল্পনা অনুযায়ী, সোমবার সকাল থেকে উদ্ধারকাজ শুরু করেন। সেনাবাহিনীর দল প্রথমে কারখানার পূর্ব পাশে রাস্তায় ধসে পড়া ভবনের অংশ সরিয়ে ফেলার কাজ শুরু করে। ধসে যাওয়া ওই স্থান থেকে দুর্গন্ধ বের হচ্ছিল। বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ১৪ স্বতন্ত্র ইঞ্জিনিয়ারিং ব্রিগেডের কমান্ডার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এএসএম মাহমুদ হাসানের নেতৃত্বে সোমবার সকালে একটি দল ট্যাম্পাকো ফয়েলস লিমিটেড কারখানার ধ্বংসাবশেষ সরানোর কাজ শুরু করেন। এ কারখানার ধ্বংসাবশেষ সরাতে কত সময় লাগতে পারে জানতে চাইলে ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এএসএম মাহমুদ হাসান জানিয়েছিলেন, ‘কত সময় লাগবে, এটা বলা মুশকিল। আগে বলেছি যে, এটা (গার্বেজ) রানা প্লাজার চেয়ে অনেক বেশি। এখানে গার্বেজ (ধ্বংসাবশেষ) যেগুলো জমে আছে, তা ব্যবস্থাপনায় আমাদের মাসের ওপর সময় লাগবে। দুই মাসও লাগতে পারে।
কারখানা কর্তৃপক্ষের কেউ এখনো আসেননি : ট্যাম্পাকো কারখানায় ভয়াবহ অগ্নিকাÐের পর এখনও ঘটনাস্থলে আসেননি কোম্পাটির এমডি বা চেয়ারম্যান কিংবা কর্তৃপক্ষের কেউ। অগ্নিকাÐের পরপরই গা ঢাকা দিয়েছেন কারখানার কর্মকর্তারা। তাদের কাউকে না পাওয়ায় ঘটনার সময় কারখানাটিতে কত শ্রমিক কাজ করছিলেন তার সঠিক পরিসংখ্যান পাওয়া যাচ্ছে না। কোম্পানিটির চেয়ারম্যান সিলেটে-৬ (গোলাপগঞ্জ) আসনের সাবেক দুই বারের স্বতন্ত্র এমপি সৈয়দ মকবুল হোসেন লিচু। ক্ষতিগ্রস্ত শ্রমিকদের জন্য মালিকপক্ষ থেকে কোনো ধরণের সহযোগিতার কথাও জানা যায়নি।
প্রতিষ্ঠানটির কর্ণদার সৈয়দ মকবুল হোসেন কিংবা মালিকপক্ষের কেউ ঘটনাস্থলে না আসায় ক্ষুব্ধ প্রশাসন। তার সঙ্গে কোনো ধরনের যোগাযোগও করতে পারছেন না কেউ। তিনি এখন কোথায় আছেন এ বিষয়ে কোনো তথ্য দিচ্ছেন না তার ঘনিষ্ঠজনরাও।
শনিবার ঘটনাস্থল পরিদর্শনে গিয়ে পুলিশের মহাপরিদর্শক একেএম শহীদুল হক ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেছিলেন, মালিকপক্ষের এ ধরনের আচরণ দায়িত্বহীনতার পরিচায়ক।
এ সময় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেন, মালিকপক্ষের কোনো ধরনের গাফিলতির প্রমাণ পাওয়া গেলে তাদের বিরুদ্ধে যথাযথ আইনি ব্যবস্থা নেয়া হবে।
কিন্তু এখনো পর্যন্ত দেখা মেলেনি মালিকপক্ষের কারো। গাজীপুরের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক রাহেনুল ইসলাম বলেন, ঘটনার পর কারখানার মালিক বা ম্যানেজারদের কাউকে পাননি তারা।
মকবুল হোসেনের ঘনিষ্ঠ হিসেবে পরিচিত সিলেটের স্থানীয় আইনজীবী দেলোয়ার হোসেন দিলু জানান, মকবুল এখন কোথায় আছেন, তার সঙ্গে কীভাবে যোগাযোগ করা যাবে- এ বিষয়ে কিছু বলতে পারছেন না তিনি।
ঈদের দিনও থেকে থাকেনি উদ্ধার কাজ : ট্যাম্পাকো ফয়েলস লিমিটেডের কারখানায় ঈদের দিনেও সেনা ও দমকল বাহিনীর উদ্ধার কাজ অব্যাহত ছিল। ঈদের উৎসব ভুলে নিখোঁজদের স্বজনরা ভিড় করছিলেন কারখানা চত্বরে। সোমবার সকালে ট্যাম্পাকো কারখানার ধ্বংসাবশেষ সরাতে দমকাল বাহিনীর সাথে যোগ দেন সেনা সদস্যরা। ওই দিন সকালে সেনা সদস্যরা কারখানার সামনে বিসিক প্রধান সড়ক থেকে ধ্বংসাবশেষ অপসারণ করে একজনের খÐিত লাশ উদ্ধার করেন। ভবনের নিচে চাপা পড়ে থেতলে যাওয়ায় লাশটি শনাক্ত করা যাচ্ছিল না। এর আগে কারখানার ভেতরের অংশ থেকে আরো দুটি লাশ উদ্ধার করেন দমকল বাহিনীর সদস্যরা। উদ্ধারকাজে অংশ নেয়া সেনা ও ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা জানান, কারখানার অভ্যন্তরে ইথাইলের ড্রামগুলো বিস্ফোরণের আশঙ্কায় সতর্কতার সঙ্গে কাজ করা হচ্ছে।
কারখানার এমডি, চেয়ারম্যানসহ ৮ জনের বিরুদ্ধে থানায় মামলা : টঙ্গী মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ফিরোজ তালুকদার জানান, বিস্ফোরণ থেকে অগ্নিকাÐের ঘটনায় নিহত জুয়েল মিয়ার বাবা মো. আবদুল কাদের পাটোয়ারি টঙ্গী মডেল থানায় একটি মামলা করেন। মামলা নং ১৫, ধারা ৩০২,৩০৭,৩২৬,৩৩৬,৩৩৮,৪২৭ দন্ডবিধি। মামলায় কারখানার মালিক সিলেট-৬ আসনের সাবেক এমপি সৈয়দ মকবুল হোসেনকে প্রধান আসামি এবং আরও সাতজনের নাম আসামি হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে। তারা হলেনÑ কোম্পানিটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক তানভির আহমেদ, মকবুল হোসেনের স্ত্রী কোম্পানির পরিচালক (সার্বিক) মোসা. সাজেদা পারভিন, জিএম শফিকুর রহমান, ম্যানেজার মনির হোসেন, ম্যানেজার (সার্বিক) সমির আহমেদ, ডিএমডি আলমগীর হোসেন ও ম্যানেজার (নিরাপত্তা) হানিফ। শনিবার (১০ সেপ্টেম্বর) ভোর ৬টার দিকে ট্যাম্পাকো ফয়েল কারখানায় বয়লার বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। এতে ভয়াবহ অগ্নিকাÐের ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় এ পর্যন্ত ৩৪ জনের মৃত্যু হয়েছে। এতো বড় দুর্ঘটনার পরও কারখানাটির মালিক মকবুল আহমেদ একবারের জন্যও ঘটনাস্থলে যাননি বলে সংশ্লিষ্টরা অভিযোগ করেছেন।
ট্যাম্পাকো দুর্ঘটনায় হতাহতের জন্য সোমবার বাদ জোহর টঙ্গীতে দোয়া অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
দেশের প্যাকেজিং শিল্পের প্রথম কারখানা টিএফএল : দেশের প্যাকেজিং শিল্পের প্রথম কারখানা ট্যাম্পাকো ফয়েলস লিমিটেড (টিএঅএল)। ট্যাম্পাকো ১৯৭৮ সালে যাত্রা শুরু করে। ব্রিটিশ আমেরিকান টোব্যাকো বাংলাদেশ লিমিটেড এবং সুইজারল্যান্ডের নেসলে বাংলাদেশ লিমিটেড কারখানা পণ্যের মোড়ক সরবরাহ করে টাম্পাকো। এছাড়া আবুল খায়ের গ্রæপ, আকিজ গ্রæপ, প্রাণ গ্রæপ, ইস্পাহানী, কোকোলা ফুড প্রোডাক্টস লিমিটেড, বিডি ফুডস লিমিটেড, অ্যাসেনসিয়াল ড্রাগস কোম্পানি লিমিটেড, মেরিডিয়ান ফুডস লিমিটেড, ফু-ওয়াং ফুডস লিমিটেড, ইউনিভার্সাল ফুডস লিমিটেড, আবদুল মোনেম লিমিটেড, বাংলা-জার্মান লেটেক্স কোং লিমিটেড, শাহ ডেইরি ফুডস লিমিটেড, মোল্লা সল্ট (ট্রিপল রিফাইন্ড) ইন্ডাস্ট্রিজ লিঃ, ভিটালাক ডেইরি অ্যান্ড ফুড ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড, প্রিন্স ফুডস লিমিটেড, হক বি¯ু‹ট এন্ড ব্রেড ফ্যাক্টরী লিঃ, জনতা বি¯ু‹ট এন্ড ব্রেড ফ্যাক্টরী লিঃ, এ.টি.এন ফুড এন্ড কনজ্যুমার প্রোডাক্টস লিমিটেড, প্রোম কনজিউমার্স প্রোডাক্টস প্রাইভেট লিমিটেড, আল-কাদ ল্যাবরেটরিস লিমিটেড, নুট্রিয়ন ফুডস লিমিটেড, নূর ফুডস লিমিটেড, গেøাব বিস্কিট এন্ড ডেইরি মিল্ক লিমিটেড, নাবিস্কো বিস্কিট এন্ড ব্রেড ফ্যাক্টরী লিঃ, সিদ্দিক ফুড এন্ড অ্যাগরুবেজ ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড, আফতাব ফুডস লিমিটেড, দ্য লালমাই লিমিটেড, আল-আমিন সুইটস, ক্রেকাস লিমিটেড এর কার্যাদেশ সরবরাহ করে টিএফএল। এই তালিকা দৈনন্দিন বাড়ছে বলে কোম্পানিটি তাদের ওয়েব সাইডে প্রকাশ করেছে। টিএফএল বিশ্বমানের সর্বশেষ প্রযুক্তি ব্যবহার করে খাদ্য ও পানীয়জাত পণ্যের ফ্লেক্সিবল মোড়ক প্রস্তুত করে থাকে। এছাড়া টিএফএল দেশে তামাকজাত পণ্যের (বেনসন, গোল্ডলিফ সিগারেটসহ) একমাত্র মোড়ক প্রস্তুতকারক প্রতিষ্ঠান। এছাড়া ট্যাম্পাকোতে সকল প্রকার পেপার ব্যাকড অ্যালুমিনিয়াম ফয়েল, কর্ক টিপিং পেপার, প্লাগ রেপ (মাড়ানো) পেপার, প্রি-প্রিন্টেড টিপিং পেপার, ইনার ফ্রেম বোর্ড ইত্যাদি সব ধরণের পেপার তৈরি করা হয়। এছাড়া এখানে সর্বশেষ প্রযুক্তি ব্যবহার করে সব ধরণের ফ্লেক্সিবল প্যাকেজিং কাজ করা হয়। দেশের গর্বিত এই শিল্প প্রতিষ্ঠানটি নিমিষে ধ্বংসস্তূপে পরিণত হওয়াকে সহজে কেউ মেনে নিতে পারছেন না। দুর্ঘটনায় টিএফএল এর শ্রমিক-কর্মচারী ও তাদের পরিবার-পরিজনের মধ্যে চরম হতাশা বিরাজ করছে।
শ্রমিক-কর্মচারিরা জানান, কখনো তাদের বেতন ভাতা বকেয়া রাখা হয়নি। প্রতি মাসের এক তারিখের মধ্যে তাদেও বেতন পরিশোধ করা হতো। কারখানা কর্তৃপক্ষ শ্রমিক-কর্মচারিদের ছেলে-মেয়েদের কারখানার পাশে শহীদ স্মৃতি উচ্চ বিদ্যালয়ে ফ্রি পড়ালেখার ব্যবস্থা করেছে। এছাড়া সিলেটের গোলাপগঞ্জে ড. সৈয়দ মকবুল হোসেন উচ্চ বিদ্যালয়, সাজেদা পারভীন হোসেন উচ্চ বিদ্যালয়, সৈয়দ তানভীর হোসেন একাডেমি. সৈয়দা আবেদা হোসেন উচ্চ বিদ্যালয়, সৈয়দা ফারহানা হোসেন উচ্চ বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা ছাড়াও আরো অনেক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে অবদান রয়েছে টিএফএল-এর।
সরকারি অনুদান : দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা মন্ত্রণালয়ের অর্থায়নে গাজীপুর জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে নিহতদের প্রত্যেককে ১০ হাজার ও আহতদের প্রত্যেককে ১০ হাজার টাকা করে অনুদান দেয়া হচ্ছে। জেলা প্রশাসনের নিয়ন্ত্রণ কক্ষ সূত্রে জানা গেছে, এ পর্যন্ত আহতদের মধ্যে ১৪ জনকে এবং নিহত একজনকে (রিপন দাসের পরিবারকে) এই অনুদানের টাকা সরবরাহ করা হয়েছে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: ট্যাম্পাকোতে চলছে ধ্বংসাবশেষ অপসারণ
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ