পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
আজ ২০ রমজান। রমজানের শেষ দশদিন শুরু হচ্ছে আজ। এই শেষ ১০ দিনেই রয়েছে কুরআন মাজিদ নাযিলের রজনী তথা হাজার মাস অপেক্ষা উত্তম লাইলাতুল কদর। এর রজনীর ফযিলত লাভের উদ্দেশ্যে যাদের ই’তেকাফ করার নিয়্যাত আছে তারা আজই সন্ধ্যার পূর্ব থেকে মসজিদে অবস্থান নেবেন। তবে আজকের দিনটি গুরুত্ব একটি ঐতিহাসিক কারণে। ইসলামের ইতিহাসে অত্যন্ত তাৎপর্যবহ একটি ঘটনার সাক্ষী রমজানের ২০ তারিখ। শুধু ইসলামের ইতিহাসে নয়, বিশ্ব সভ্যতার ইতিহাসে অনন্য সাধারণ বৈশিষ্ট্য ও মর্যাদার অধিকারী এ ঘটনাটি। আর তা হলো মক্কা বিজয়। এ ঐতিহাসিক দিনেই বিজয়ীর বেশে মাতৃভ‚মিতে প্রবেশ করেন মহানবী সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম। এক রক্তপাতহানী বিজয়াভিযানে ইসলামের পতাকা উড্ডীন হয় মক্কা মোয়াজ্জমায়।
আল্লাহ প্রদত্ত অহির জ্ঞানের বিরুদ্ধে বুদ্ধিবৃত্তিক লড়াইয়ে পেরে না উঠে মক্কার কাফিররা মহানবী সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে হত্যার ষড়যন্ত্র করে। আল্লাহর নির্দেশে মহানবী সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এসময় তার বিশ্বস্ত সাহাবী হযরত আবু বাকারকে সঙ্গে নিয়ে মদীনায় হিজরত করেন। এর ৮ বছর পর তিনি বিজয়ীর বেশে এই ২০ রমজান মক্কায় প্রবেশ করেন।
মক্কা জয়ের জন্য মহানবী সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের অভিযান পরিচালনার পেছনে কাজ করেছিল হুদায়বিয়ার সন্ধি। হিজরি ষষ্ঠ বছরে সম্পাদিত এ চুক্তির শর্ত ভঙ্গ করেছিল মক্কার কুরাইশরা। মহানবী সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর প্রতিকার চেয়েছিলেন, নইলে সন্ধির সমাপ্তি হয়েছে মনে করার ঘোষণা দিয়েছিলেন। কুরাইশরা কোনো সাড়া না দেয়ায় তিনি অভিযান পরিচালনার সিদ্ধান্ত নেন।
অষ্টম হিজরির ১০ রমজানে সম্পূর্ণ গোপনে মক্কা অভিমুখে যাত্রা শুরু হয়। এ অভিযানে বিভিন্ন মিত্র গোত্রের লোকেরা মুসলিম বাহিনীর সঙ্গে যুক্ত হয়। এভাবে মোট সৈন্য সংখ্যা দাঁড়ায় ১০ হাজার। আচমকা মুসলিমদের এ বিশাল বাহিনীর উপস্থিতিতে প্রতিরোধের কোন চেষ্টাই করেনি মক্কার কাফিররা। ২০ রমজান মহানবী সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম মক্কায় প্রবেশ করেন। প্রায় রক্তপাতহীন সে অভিযানে ইসলামের নবীর পতাকা সেখানে সমুন্নত হয়। আর সত্য ধর্মের গৌরব প্রতিষ্ঠিত হয় আরবের সবচেয়ে সমৃদ্ধ নগরীতে।
মুসলিম জাতির পিতা হযরত ইবরাহিম আলাইহিস সালামের নির্মিত বায়তুল্লাহ ভরে ফেলা হয়েছিল মূর্তি ও বিগ্রহে। মহানবী সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আল্লাহর ঘর থেকে ৩৬০টি মূর্তি অপসারণ করেন। তিনি হাতের ছড়ি দিয়ে মূর্তিগুলো নিচে ফেলেন। দেয়ালের ছবিগুলো মোছার নির্দেশ দেন। এসময় তিনি বলেন, ‘সত্য এসে গেছে, আর মিথ্যা বিলুপ্ত হয়েছে, মিথ্যা তো বিলুপ্ত হওয়ারই’। সূরা বানী ইসরাঈল: ৮১।
এতদিন যারা ইসলামের শত্রæতায় প্রাণপণ ছিল, তাদের জন্য ঘোষণা করেন সাধারণ ক্ষমা। মহানবী (সা.) মক্কায় প্রবেশ করে লোকদের বলেন, হে কুরাইশরা! তোমাদের সঙ্গে আমার কেমন আচরণ করা উচিত বলে মনে করো? তারা বললো, দয়া ও করুণা হে আল্লাহর নবী! আমরা আপনার কাছ থেকে ভালো ছাড়া কিছুই আশা করি না। এরপর তিনি ঘোষণা করলেন, আমি তোমাদের ঠিক তাই বলব যা ইউসুফ (আ.) তার ভাইদের বলেছিলেন ‘সে বলল, আজ তোমাদের বিরুদ্ধে আমার কোনই অভিযোগ নেই, আল্লাহ তোমাদেরকে মাফ করুন! তিনি হলেন সর্বশ্রেষ্ঠ দয়ালু।’ সূরা ইউসুফ : ৯২।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।