পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
বিশেষ সংবাদদাতা : শেষ মুহূর্তে জমে উঠেছে রাজধানীর কোরবানির হাটগুলো। বেচাকেনা বেড়েছে। তবে দাম খুব একটা কমেনি। তারপরেও মানুষ কোরবানির পশু কিনছে। গতকাল কয়েকটি হাট ঘুরে দেখা গেছে, বেশি দাম দিয়ে হলেও মানুষ কোরবানির পশু কিনছে। এর মধ্যে গরুই বেশি বিক্রি হচ্ছে। হাটের ক্রেতারা জানিয়েছেন, দাম বেশি জেনেও তারা গরু কিনেছেন। না কিনে উপায় কী? অন্যদিকে, বিক্রেতাদের দাবি তারা গ্রামাঞ্চল থেকে বেশি দামে গরু কিনেছেন। এজন্য দামটা বেশি হাঁকতে হচ্ছে। হাটের ইজারাদার, পাইকার, বেপারী, ক্রেতা ও বিক্রেতাদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, ভারতীয় গরু না আসার পরও এবার পর্যাপ্ত গরু এসেছে রাজধানীর হাটগুলোতে। সে কারণে এবার কোরবানির পশু সংকটের কোনো আশঙ্কা না থাকার কথা। তবে গতকাল রোববার সন্ধ্যার পর হঠাৎ করেই গরুর সংকট দেখা দেয় বলে টেলিফোনে বেশ কয়েকজন জানিয়েছেন। তারা এও জানিয়েছেন, সন্ধ্যার পর গরুর দাম অনেকটাই কমে যায়। আজ শেষ দিনে কোরবানির পশুর দাম আরও কমে যাবে বলে তাদের ধারণা।
রাজধানীর কয়েকটি কোরবানির হাট ঘুরে দেখা গেছে, ক্রেতারা হাটে ঘুরছেন দাম যাচাইয়ের জন্য। দুপুরের পর বেচাকেনা পুরোদমে শুরু হয়। দুপুরে দাম সহনীয় পর্যায়ে থাকায় বিক্রি বেড়ে যায়। এরপর বিকালের দিকে আবার দাম বেড়ে যায়। দনিয়া কলেজ মাঠ হাটের একজন বিক্রেতা জানান, মহাসড়কে গরুবাহী বহু ট্রাক ঢাকার পথে আটকে আছে একথা জানার পর তারা গরু বিক্রি করে দেয়ার সিদ্ধান্ত নেন। ওই বিক্রেতা জানান, বিকালের মধ্যে তিনি ৮টা গরু বিক্রি করে দিয়েছেন। একেকটা গরুতে তিনি ৮ থেকে ১০ হাজার টাকা করে লাভ করেছেন বলে জানান। আরেক বিক্রেতা জানান, দুপুরের পর থেকে হাটে ক্রেতার ভিড় অস্বাভাবিক হারে বাড়তে থাকে। ক্রেতাদের ভিড়ে আসলে বিক্রিটা বাড়ে। তখন একজন একটা দাম বললে আরেকজন সেই দাম বাড়িয়ে বলা ছাড়া উপায় থাকে না। এভাবেই ক্রেতারা যখন নিজেদের মধ্যে প্রতিযোগিতায় নেমে পড়ে তখনই বিক্রি করা সহজ হয়। গতকাল দুপুরে রাজধানীর মিরপুরে হাবিব নামের একজন গাবতলী থেকে কেনা গরু নিয়ে ফিরছিলেন। তিনি জানান, গরুটি কেনা হয়েছে ৬৮ হাজার টাকায়। হাসিল দিয়ে দাম পড়েছে প্রায় ৭১ হাজার টাকা। তিনি আরো বলেন, হাট থেকেই ফেরার পথে মানুষ শুধু জানতে চাচ্ছে দাম কত? এই প্রশ্নের উত্তর দিতে দিতে আসছি। হাটেই অনেকে জানতে চেয়েছেন। প্রথম দিকে ভালো লাগছিল। এরপর রাস্তার এত মানুষ এই প্রশ্ন করেছে, উত্তর দিতে দিতে এখন বিরক্ত লাগছে। তারপরও বলতে হচ্ছে। এর মধ্যেও এক ধরনের আনন্দ পাচ্ছি। বাজারে পশুর দাম এবার অনেক বেশি। তবুও পছন্দের গরুটি কিনতে পেরে খুশি বলে তিনি জানান। পশুর হাটে গরু কিনতে যাবেন রাজধানীর মিরপুরের কালসির বাসিন্দা ইকতেদার হায়দার। রওনা দেয়ার আগে বিভিন্ন পশুর দাম জানতে চাচ্ছেন তিনি। জানতে চাইলে তিনি বলেন, নিজের কুরবানির পশুটি এখনো কিনিনি। যারা কিনে নিয়ে যাচ্ছেন তাদের কাছে দাম জেনে বাজারে গেলে একটু সুবিধা হয়। রাস্তার পাশে দাঁড়িয়ে থাকা কয়েকজন যুবকের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, শুধু কৌতূহলবশতই তারা জানতে চাচ্ছেন পশুর দাম। দাম জেনে নিজেদের মধ্যে তা নিয়ে আলাপ-আলোচনা করছেন। তাদের ভাষ্যমতে, এবার গরুর দাম গতবারের তুলনায় বেশি। সেই দাম কমতেও পারে নাও পারে।
এদিকে, গতকাল রোববার সন্ধ্যার পর হঠাৎ করেই হাটগুলোতে গরুর সঙ্কট দেখা দেয়। খবর আসে শ্যামপুর, ধোলাইখাল, নয়াবাজার হাটের গরু শেষের দিকে। এ খবর ছড়িয়ে পড়লে যারা কোরবানির পশু কেনেনি তারা অস্থির হয়ে ওঠেন। অনেকে তাৎক্ষণিকভাবে গরু কেনার জন্য ঘর থেকে বেরিয়ে যান। যাত্রাবাড়ী হাটের ইজারাদারের একজন সহযোগীর কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, এই মুহূর্তে হাটে গরু আছে পর্যাপ্ত। তবে ক্রেতার সংখ্যাও কম নয়। ক্রেতাদের ভিড় দেখে মনে হচ্ছে রাতেই সব গরু শেষ হয়ে যেতে পারে। দনিয়া হাটের নূরে আলম শামীমের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, গরু বিক্রি হচ্ছে। বিক্রি বেড়ে যাওয়ার কারণে সঙ্কটের গুজব ছড়ানো হচ্ছে বলে আমার ধারণা। তিনি জানান, সন্ধ্যার পর গরুর দাম অনেকটাই কমে এসেছে। রাতে আরও কমতে পারে। আবার যদি সত্যি সত্যি সঙ্কট দেকা দেয় তাহলে অস্বাভাবিক হারে বাড়তেও পারে। অন্যদিকে, ঢাকা-টাঙ্গাইল, ঢাকা-ময়মনসিংহ, ঢাকা-সিলেট মহাসড়কে খবর নিয়ে জানা গেছে, ঢাকার পথে বহু গরুবাহী ট্রাক মহাসড়কে অপেক্ষা করছে। রাতে সেগুলো ঢাকায় প্রবেশ করবে। টাঙ্গাইলের একজন ব্যবসায়ী জানান, শুধুমাত্র টাঙ্গাইল মহাসড়কে যতোগুলো ট্রাক অপেক্ষা করছে সেগুলো ঢাকায় প্রবেশ করলে কাল হাটগুলোতে গরুর সংখ্যা অনেক বেড়ে যাবে। তখন আর সেগুলো কেনার মানুষ থাকবে না।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।