পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
একদিকে কবর খুঁড়ছেন, অন্যদিকে লাশ দাফন হচ্ছে। কবরের পর কবর খুঁড়ে একটু বিশ্রামের ফুরসত পাচ্ছেন না গোরখোদকরা। যত সময় যাচ্ছে ততই দীর্ঘ হচ্ছে কবরের সারি। গতকাল রাজধানীর রায়েরবাজার কবরস্থানে গিয়ে এমন দৃশ্য দেখা গেছে।
জানা গেছে, দুই শিফটে ২৮ জন গোরখোদক কাজ করেও কাজ ফুরাচ্ছে না তাদের। চলতি বছর এপ্রিলে করোনায় মৃতের সংখ্যা বৃদ্ধি পাওয়ায় আগের তুলনায় অনেক ব্যস্ত সময় কাটাতে হচ্ছে রায়েরবাজার কবরস্থানের গোরখোদকদের। কবরস্থানের সরদার লিয়াকত আলী সরকার বলেন, গত বছর করোনায় মৃত অনেকের লাশ দাফন করেছি। মাঝে কিছু কমেছিল, এখন আবার করোনায় মৃতদের লাশ দাফন করা হচ্ছে বেশি। তিনি বলেন, আমি ২০১৬ সাল থেকে এখানে কর্মরত আছি। কিন্তু করোনার সময় যত মানুষের লাশ দাফন করেছি, এর আগে এমন কখনো হয়নি। এত মানুষের মৃত্যু আগে কখনো দেখিনি।
রাজধানীর দুই সিটি করপোরেশন এলাকায় মোট ১০টি সরকারি কবরস্থান রয়েছে। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি করোনায় মৃত ব্যক্তির লাশ দাফন হচ্ছে রায়েরবাজার কবরস্থানে। মিজানুর রহমান নামে এক গোরখোদক দীর্ঘদিন ধরে কবর খুঁড়ছেন রায়েরবাজার কবরস্থানে। তিনি বলেন, অনেক দিন ধরে এই কবরস্থানে কবর খুঁড়ছি। আগে কখনো একসঙ্গে এত লাশ দাফন করতে দেখিনি। একদিকে খুঁড়ে শেষ করছি, আরেক দিকে দেখছি লাশ দাফন হচ্ছে। এসব মৃত ব্যক্তির সবাই করোনা রোগী। চারপাশে যত কবর আছে সব করোনা রোগীর। এখানে শুধু করোনা রোগীদের দাফন করা হচ্ছে। গত কয়েকদিনে পুরোটা ভরে গেছে। নতুন নতুন লাইনে কবর খুঁড়ছি আর করোনা রোগীর লাশ দাফন করা হচ্ছে।
রায়েরবাজার কবরস্থানের আট নম্বর বøকের পুরোটা বরাদ্দ করা হয়েছে করোনায় মৃত ব্যক্তিদের দাফন করার জন্য। এই বøকে একের পর এক লাশ দেখে অবাক হচ্ছেন গোরখোদকরাও। আগে কখনো এত লাশ একসঙ্গে দেখেননি তারা। আর এত কবরও খুঁড়তেও হয়নি তাদের।
লিয়াকত আলী সরকার বলেন, সকাল থেকে মধ্যরাত পর্যন্ত লাশ আসে অ্যাম্বুলেন্সে করে আট নম্বর বøকে। প্রতিদিনই কমবেশি ১০টি লাশ এই বøকে দাফন করা হচ্ছে। প্রতিদিন বেলা যত গড়ায় লাশের সংখ্যাও তত বাড়ে।
রায়েরবাজার কবরস্থানে দেখা যায়, করোনা রোগীর লাশ নিয়ে নির্ধারিত বøকে অ্যাম্বুলেন্স আসে, লাশের সঙ্গে আসেন হাতেগোনা কয়েকজন। একদিকে যখন একটি লাশ দাফন চলছে, সেই কবরটির পাশেই চোখে পড়ে সারি সারি কবর খুঁড়ে রাখা হয়েছে লাইন ধরে। গোরখোদকরা ক্লান্তি কমাতে প্রথমে কবর খোঁড়া হয় মেশিনে। তারপর সেগুলো শাবল আর কোদাল দিয়ে ঠিক করে রাখেন গোরখোদকরা। কিছুক্ষণের মধ্যেই শেষ হয় লাশ দাফনের কাজ। মোনাজাত শেষে চলে যায় অ্যাম্বুলেন্স ও লাশের সঙ্গে আসা অন্যান্যরা। তবে গোরখোদকদের শাবল-কোদাল চলতেই থাকে!
ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন ও রায়েরবাজার কবরস্থান সূত্রে জানা গেছে, এ কবরস্থানের ৮ নম্বর বøকটিতে কেবল করোনায় মৃত ব্যক্তিদের দাফন করা হচ্ছে। চলতি বছরের এপ্রিলে করোনায় মৃত প্রায় ১৫০ জনের লাশ দাফন করা হয়েছে। এ পর্যন্ত করোনায় মৃত এক হাজার একশো জনের বেশি দাফন হয়েছে ৮ নম্বর বøকে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।