পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
নিহত ১ : তিন নারী জঙ্গি গুলিবিদ্ধ অবস্থায় আটক : পুলিশের ধারনা ১ জন মেজর (অবঃ) জাহিদের স্ত্রী : ৫ পুলিশ আহত
স্টাফ রিপোর্টার : রাজধানীর আজিমপুরে জঙ্গি আস্তানায় পুলিশের সাথে গোলাগুলিতে এক জঙ্গি নিহত হয়েছে। অভিযানে তিন নারী জঙ্গিকে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় আটক করেছে পুলিশ। একই ঘটনায় আহত হয়েছেন পুলিশের ৫ সদস্য। তাদেরকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন আইজিপি শহীদুল হকসহ পুলিশের উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা। ঘটনার পর থেকে এলাকায় আতঙ্ক বিরাজ করছে। বাড়িটিঘিরে রেখেছে পুলিশ। পুলিশের ধারণা গুলিতে আহত এই তিন নারী জঙ্গির মধ্যে একজন হলো মিরপুরের রূপনগরে পুলিশের অভিযানে নিহত মেজর (অব.) জাহিদুল ইসলাম ওরফে মুরাদের স্ত্রী জেবুন্নাহার শিলা ওরফে খাদিজা। ওই বাসা থেকে মেজর (অব.) জাহিদের দুই শিশু সন্তান জুনায়েরা (৬) ও মারিয়াম (১) কেও উদ্ধার করেছে পুলিশ। তাদের একজন নারী পুলিশ কর্মকর্তার তত্ত্বাবধানে রাখা হয়েছে। অপর নারী সদস্যরা হলেন, শারমিন আক্তার ও শাহেলা।
পুলিশের কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিটের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার মোহাম্মদ ছানোয়ার হোসেন জানান, আজিমপুরে বিজিবি সদর দফতরের ২ নম্বর গেইট সংলগ্ন ২০৯/৫ নম্বরের ছয়তলা বাড়ির দ্বিতীয় তলায় জঙ্গি আস্তানার খবর পায় পুলিশ। বাড়িটি স্থানীয় হাজী মো. কায়সারের।
গতকাল শনিবার সন্ধ্যার পর ওই বাড়ির দোতালায় জঙ্গি আস্তানায় অভিযান চালাতে যায় পুলিশের কাউন্টার টেরোরিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ইউনিট। অভিযান চালাতে গেলে ভেতরে থাকা নারী জঙ্গিরা পুলিশকে ছুরিকাঘাত ও মরিচের গুড়া মেরে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে। পরে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় তাদের আটক করে পুলিশ। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন কাউন্টার টেররিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ইউনিটের পাঁচ সদস্য। ঘটনার পর পরই বাড়িটি ঘিরে রাখে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী। খবর পেয়ে পুলিশের সোয়াত টিম অভিযানে অংশ নেয়।
অভিযান পরিচালনাকারী পুলিশ সদস্যরা জানান, বাড়ির দরজায় নক করলে দরজা খুলে দুই নারী তাদের লক্ষ্য করে মরিচের গুঁড়ো ছোড়ে। এর পর তারা বাসার ভেতরেই বোমার বিস্ফোরণ ঘটায়। পুলিশও তখন গুলি চালায়।
এলাকার বাসিন্দা প্রত্যক্ষদর্শী হাবিবুর রহমান বলেন, গোলাগুলির এক পর্যায়ে সেলোয়ার কামিজ পরা নারীকে ছুরি হাতে দৌঁড়াতে দেখি। এ সময় পুলিশ ফাঁকা গুলি করে। একই সময় আহত এক পুলিশ সদস্য চিৎকার করে ঘটনাস্থলে আরও পুলিশ সদস্য পাঠাতে বলেন। তখন গুলিবিদ্ধ অবস্থায় এক নারী সদস্যকে পুলিশ আটক করে। তিনিই হচ্ছেন শারমিন।
ঢাকা মেডিকেল সূত্র জানায়, রাত সোয়া ৮টায় প্রথমে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় শারমিন আক্তার (২৫) নামে এক নারীকে নিয়ে আসা হয়। চিকিৎসকরা তার পেট, বুক ও উরু থেকে তিনটি গুলি বের করেন। এর কিছুক্ষণ পর দু’টি অ্যাম্বুলেন্সযোগে আরো দুই নারীকে নিয়ে আসা হয়। তাদের সারা শরীরেই রক্ত। এদের একজন শাহেলা অপর জন জেবুন্নাহার শিলা। পুলিশ বলেছে, তারা গুলিবিদ্ধ। তাদেরকে সঙ্গে সঙ্গেই অপারেশন রুমে নিয়ে যাওয়া হয়। এছাড়া বিস্ফোরকে আহত হয়েছেন পুলিশের পাঁচ সদস্য। এরা হলেন, কনস্টেবল লাভলু জামাল (২০), রামচন্দ্র বিশ্বাস (১৯), শাহজাহান আলী (২৩), মাহতাব উদ্দিন (২১) ও জহির উদ্দিন (২১)। শাহবাগ থানার ওসি বলেছেন, ধারালো অস্ত্রের আঘাতের সাথে সাথে পুলিশ সদস্যদের ওপর মরিচের গুড়া নিক্ষেপ করা হয়েছে। এছাড়াও তারা ধারালো অস্ত্র নিয়ে পুলিশের ওপর হামলা চালায়। যে কারণে পুলিশের সদস্যরা চোখে মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। দু’জন পুলিশ সদস্যের বুকে ধারালো অস্ত্রের আঘাত রয়েছে। এদিকে ঘটনার পর পরই ঘটনাস্থলে ছুঁটে গেছেন পুলিশের উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।
রাত ১০টার কিছু পর ঢাকা মেডিকেল কলেজে চিকিৎসাধীন পুলিশ সদস্যদের দেখতে আসেন আইজিপি শহিদুল হক। তিনি উপস্থিত সাংবাদিকদের বলেন, চিকিৎসাধীন পুলিশ সদস্যরা আশঙ্কামুক্ত। তিনি আরো বলেন, নিহত পুরুষ জঙ্গির নাম তেহজীব করিম ওরফে আবদুল করিম বলে প্রাথমিকভাবে জানা গেছে। এর আগে বসুন্ধরা আবাসিক এলাকায় বাসা ভাড়া নেয়ায় এ জঙ্গির সহযোগিতা ছিলো। তার সম্পর্কে খোঁজ খবর নেয়া হচ্ছে। ওই বাসায় জঙ্গিদের কাছে অস্ত্র ছিলো। তদন্তের পরই বিস্তারিত বলা যাবে। আটক নারীদের মধ্যে জেবুন্নাহার নিহত মেজর (অব.) জাহিদুলের স্ত্রী বলে পুলিশের ধারনা। তবে তদন্তের পরই সবকিছু জানা যাবে। এদিকে চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, গুলিবিদ্ধ নারী জঙ্গিদের অবস্থা গুরুতর।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।