Inqilab Logo

মঙ্গলবার, ০৭ মে ২০২৪, ২৪ বৈশাখ ১৪৩১, ২৭ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

টুং টাং শব্দে ব্যস্ত কাউখালীর কামারপট্টি

প্রকাশের সময় : ১১ সেপ্টেম্বর, ২০১৬, ১২:০০ এএম

কাউখালী উপজেলা সংবাদদাতা : পবিত্র ঈদুল আজহাকে সামনে রেখে ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছে কাউখালীর কামার স¤প্রদায়ের লোকজন। কাকডাকা ভোর থেকে শুরু করে গভীর রাত পর্যন্ত চলছে দা, বটি, ছুরি, কুড়াল ও চাপাতি তৈরির কাজ।
কামারের দোকানে শোনা যাচ্ছে ‘টুং-টাং’ শব্দ। ভোর থেকে গভীর রাত পর্যন্ত লোহা পিটিয়ে টুং টাং শব্দে চলছে ধারালো অস্ত্র তৈরির কাজ। কোরবানির ঈদকে সামনে রেখে পিরোজপুরের কাউখালীর পাঁচটি উপজেলার সবকটি বাজারে কামারের দোকানগুলোতে এমনই দৃশ্য।
ঈদ কোরবানি ও মাংস কাটার অস্ত্র তৈরিতে ব্যস্ত সময় পার করছেন তারা। কোরবানির পশু জবাই ও মাংস কাটার জন্য অনেকেই আগে থেকে অর্ডার দিয়ে রেখেছে বলে জানান কামাররা। সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, চটের বস্তায় মোড়ানো টুলে বসে পোড়া লোহা পেটাচ্ছেন কারিগররা। দোকানের খোপে সাজিয়ে রাখা হয়েছে ছুরি, বটি, দা, চাপাতি, কুড়ালসহ ধারালো সব অস্ত্র। স্প্রিং এবং সাধারণ লোহা থেকে তৈরি এসব অস্ত্র পছন্দমত কিনছেন ক্রেতারা।
কাউখালীর দক্ষিণ বাজারের কামার উত্তম কর্মকার জানান, বিভিন্ন এলাকা থেকে মানুষ ছুরি, বটি, দা, চাপাতি কিনছে। ঈদের আর বেশি সময় বাকি নেই, তাই আমাদের ব্যস্তুাও বেড়ে গেছে বহুগুণ। ঈদের আগের দিন পর্যন্ত চলবে এ ব্যস্ততা। স্প্রিং লোহা দিয়ে তৈরি উপকরণের মান ভালো, দামও বেশি। লোহার মানভেদে উপকরণের দাম নির্ভর করে।
পশুর চামড়া ছড়ানো ছুরি ১০০ টাকা থেকে ২০০ টাকায়, দা ১৫০ টাকা থেকে ৩০০ টাকা, পশু জবাইয়ের বড় ছুরি ৩০০ টাকা থেকে ৫০০ টাকা, বটি ১৫০ টাকা থেকে ২৫০ টাকা, চাপাতি ৫০০ টাকা থেকে ১০০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া ক্রেতারা লোহা জোগার করে দিলে মজুরি পড়ে ৩০০ থেকে ৪০০ টাকা এবং পুরনো বিভিন্ন অস্ত্র ধার দেয়ার জন্য মজুরি নেয়া হয় ৫০ থেকে ১০০ টাকা। কামার শিল্পের কারিগর ও পাইকাররা জানান, প্রতি বছর ঈদের মৌসুমেই যত কেনাবেচার ধুম। আর এ থেকে অর্জিত টাকায় সারা বছর খোরাক জোগায়। এছাড়া আধুনিকতার ছোঁয়ায় এসব পণ্য তৈরির বেশকিছু আবার প্রযুক্তি নির্ভর হাওয়ায় কামার স¤প্রদায় আর্থিকভাবে পিছিয়ে যাচ্ছে। তবে বছরের প্রায় সময় কাজ না থাকায় অনেকেই এ পেশা ছেড়ে অন্য পেশায় মনোনিবেশ করেছেন। কামার শিল্প অনেক পুরনো সময়ের বিবর্তনে কাজের চাহিদা না থাকায় এ পেশা ত্যাগ করছেন অনেকেই। এ শিল্পের প্রধান উপকরণ লোহা, ইস্পাত ও কয়লা। বর্তমানে কয়লার দাম বেড়ে যাওয়ায় কামাররা এখন অর্থসংকটে ভুগছেন। আগে ৪০-৫০ টাকায় এক বস্তা কাঠের কয়লা পাওয়া যেত। এখন তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১০০-১২০ টাকায়। তারা আরো বলেন, এই শিল্প অনেকটা বিলুপ্তির পথে। সরকারি পৃষ্ঠপোষকতা পেলে কুমাররা হয়তো ঘুরে দাঁড়াতে পারবে।

 



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: টুং টাং শব্দে ব্যস্ত কাউখালীর কামারপট্টি
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ