পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
রাজশাহী ব্যুরো : রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের শিক্ষিকা আকতার জাহান জলির (৪৫) লাশ ময়না তদন্ত শেষে গতকাল দুপুরে তার ছোট ভাই কামরুল হাসানের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। তার লাশ নিতে আসেন, ছোট ভাই রতন, ভগ্নিপতি খোকন, মামাতো ভাই শামিম হাসান রানা ও ইকবাল হোসেন। এসময় রাজশাহী রাবির বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষকবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন। জলি আত্মহত্যার ঘটনায় শিক্ষক জলির ভাই কামরুল হাসান বাদী হয়ে মতিহার থানায় মামলা দায়ের করেন। আরজিতে বলা হয় উক্ত সুইসাইড নোট হতে স্পষ্ট প্রতীয়মাণ হয় যে, তিনি প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে কারো না কারো দ্বারা প্ররোচিত হইয়া আত্মহত্যার পথ বেছে নিয়েছেন। আত্মহত্যার প্ররোচনাকারী-প্ররোচনাকারীদের খুঁজে বের করে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণে মর্জি হয়। বিকেলে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মসজিদ মাঠে তার প্রথম জানাযার নামাজ অনুষ্ঠিত হয়।
এ সময় রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি মিজান উদ্দিন, ছাত্র উপদেষ্টা মিজানুর রহমানসহ গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের অন্যান্য শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা উপস্থিত ছিলেন।
জানাযা শেষে গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগে শেষ বারের মতো তার লাশ রাখা হয়। পরে তার লাশ ঢাকায় নিজ বাড়িতে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। রামেক হাসপাতালের ফরেনসিক বিভাগের ডাক্তার সিনিয়র প্রভাষক এনামুল হক বলেন, ময়নাতদন্তে শরীরে কোন আঘাতের চিহ্ন পাওয়া যায়নি। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে বিষক্রিয়ায় তার মৃত্যু হয়েছে। ভিসেরা পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয়েছে। রিপোর্ট হাতে পেলে বিষয়টি পরিষ্কার হওয়া যাবে।
এর আগে রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশের উপ-পুলিশ কমিশনার আমির জাফর সাংবাদিকদের বলেন, প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে। তিনি আত্মহত্যা করেছেন। তবে এখনো পুরোপুরি বলা যাচ্ছে না। যদিও জলি তার লাশ রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে দেবার জন্য সুইসাইড নোটে উল্লেখ করলেও তার মায়ের ইচ্ছে মতে তার লাশ ঢাকায় নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের আবাসিক ভবন জুবেরী ভবনে উদ্ধার হওয়া গণযোগাযোগ বিভাগের শিক্ষিকা আকতার জাহান জলির লাশের সাথে একটা সুইসাইড নোট উদ্ধার করে পুলিশ। তাতে লেখা রয়েছে আমার মৃত্যুর জন্য কেউ দায়ী নয়। শারীরিক মানসিক চাপের কারণে আত্মহত্যা করলাম। তবে সোয়াদকে (মৃত শিক্ষকের একমাত্র সন্তান) যেন ওর বাবা কোনভাবেই নিজের হেফাজতে নিতে না পারে। যে বাবা সন্তানের গলায় ছুরি ধরতে বাধ্য করতে পারে। সে যে কোন সময় সন্তানকে মেরে ফেলতে বা মরতে বাধ্য করতে পারে। এ সুইসাইড নোটটি তার ল্যাবটপের নীচে চাপা দেয়া অবস্থায় পুলিশ উদ্ধার করে। এখন তার হাতের লেখার সাথে মিলিয়ে দেখা হচ্ছে। গণযোগাযোগ বিভাগের এই শিক্ষকের আত্মহত্যার কারণ হিসাবে তার বৈবাহিক সম্পর্ক ভেঙ্গে যাওয়াকে এবং পরোক্ষভাবে তার প্রাক্তন স্বামীকে দায়ী করছেন অনেকে। একই বিভাগের সহযোগি অধ্যাপক তানভীর আহমেদের সাথে দীর্ঘদিন সংসার করার পর ২০১২ সালে তাদের ছাড়াছাড়ি হয়ে যায়। তাদের একমাত্র সন্তান সোয়াদ ঢাকায় নানা বাড়িতে থেকে একটি ইংরেজী মাধ্যম স্কুলে নবম শ্রেণীতে লেখাপড়া করছিল। সাবেক স্বামী তানভীর সাংবাদিকদের সাথে আলাপকালে বলেন একজন মানুষ মারা যাবার আগে কেন এমন নোট লিখে গেল তা আমার বোধগম্য নয়।
নারীনেত্রী এ্যাড. দিল সেতারা চুনি জানান নারী নিপীড়ন রোধে জলি কাজ করেছেন জীবনের শেষ সময় পর্যন্ত। তিনি বিশ্ববিদ্যালয় যৌন নিপীড়ন প্রতিরোধ সেলের সদস্য ছিলেন। নারী নির্যাতনের বিরুদ্ধে ছিলেন সোচ্চার। তার সুইসাইড নোটে উঠে এসেছে নিজের জীবনের নিপীড়নের কথা। রাবির গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের সহযোগি অধ্যাপক আখতার জাহানের মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি প্রফেসর মুহম্মদ মিজান উদ্দিন ও প্রোভিসি চৌধুরী সারওয়ার জাহান। শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ ভিসির সাথে কথা বলে গভীর শোক ও তার পরিবারের প্রতি সমাবেদনা জানিয়েছেন।
উল্লেখ্য, গত শুক্রবার বিকেলে বিছানার ওপর মশারির ভেতর পড়ে থাকা অবস্থায় বিশ্ববিদ্যালয়ের জুবেরি ভবনের ৩০৩ নম্বর কক্ষ থেকে পুলিশ শিক্ষিকা আকতার জাহান জলির লাশ উদ্ধার করে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।