Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

ইলিয়াস আলীর গুম নিয়ে দেয়া বক্তব্য বিকৃত করা হয়েছে

সংবাদ সম্মেলনে মির্জা আব্বাস

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ১৯ এপ্রিল, ২০২১, ১২:০১ এএম

ইলিয়াস আলীর গুম নিয়ে দেয়া বক্তব্য বিভিন্ন গণমাধ্যমে বক্তব্য বিকৃত করা হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন- বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস। তিনি বলেন, একটি পত্রিকায় ছাপা হয়েছে- ইলিয়াস আলী গুমের জন্য বিএনপির কিছু নেতা দায়ী। এই কথা কী আমি বলেছি- কেউ কী প্রমাণ করতে পারবে। অসম্ভব, সম্ভব নয়। আমি স্পষ্ট করে বলতে চাই- আমরা কথা বিকৃত করা হয়েছে। পত্রিকায় এসেছে- সরকার বা আওয়ামী লীগ ইলিয়াসকে গুম করেনি, এই কথাও আমি বলিনি। আমার বক্তব্যকে বিকৃত করে পেঁচিয়ে লেখা হয়েছে, টুইস্ট করা হয়েছে। বিএনপির নেতারাই ইলিয়াস আলীকে গুম করেছে- এই কথাটা কী আমি বিএনপির স্থায়ী কমিটির একজন সদস্য হয়ে আমার বক্তব্য দেয়া সম্ভব? অর্থাৎ নিজের মাথায় নিজের বোমা ফাটানো- এটা সম্ভব না। এখানেও টুইস্ট করা হয়েছে।
শনিবারের এক ভার্চুয়াল আলোচনায় বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত সংবাদের উদ্ধৃতি দিয়ে গতকাল রোববার বিকালে শাহজানপুরে নিজের বাসায় এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন। সিলেট বিভাগ জাতীয়তাবাদী সংহতি সম্মেলনীর উদ্যোগে এক ভার্চুয়াল আলোচনায় যুক্ত হয়ে মির্জা আব্বাস ইলিয়াস আলী গুমের সাথে আওয়ামী লীগ বা সরকার জড়িত নয় বলে মন্তব্য করেন এবং ‘গুমের’ পেছনে দলের কারো সংশ্লিষ্টতার ইঙ্গিত দেন।

তিনি বলেন, ইলিয়াস গুম হওয়ার আগের রাতে দলীয় অফিসে কোনো এক ব্যক্তির সঙ্গে তার বাকবিতন্ডা হয় মারাত্মক রকমের। ইলিয়াস তাদের খুব গালিগালাজ করেছিল তাকে। সেই যে পেছন থেকে দংশন করা সাপগুলো আমাদের দলে এখনো রয়ে গেছে।

সংবাদ সম্মেলনে মির্জা আব্বাস বলেন, আমি পরিষ্কারে করে একটা কথা বলতে চাই, আমার সহজ-সরল পরিষ্কার মনের সরল উক্তিগুলোকে যার যেখানে প্রয়োজন বিকৃত করা হয়েছে। সম্পূর্ণ বক্তব্য যদি বলি তার একটা লাইন কোড করে, যার যেখানে দিয়ে প্রয়োজন কেটে-ছিঁড়ে, পোস্টমর্টেম করে, কাঁটপিছ করে ইচ্ছামতো লাগিয়ে দেয়া হয়েছে। কী কারণে করা হয়েছে তা আমি জানি না।
বিএনপির এই নেতা বলেন, আজকে সকালে ইলিয়াস আলীর বাসা গেছে একদল সাংবাদিক। তার স্ত্রীকে গিয়ে রীতিমতো চার্জ করেছে, বিভিন্ন প্রশ্ন করে হেনস্তা করার চেষ্টা করা হয়েছে। এটাই বা কেনো? কী এমন ঘটনা ঘটল যে, হঠাৎ করে এই বিষয়টা নিয়ে এতো মাথা ঘামাতে হবে?

তিনি সাংবাদিকদের উদ্দেশ্যে বলেন, গত ৯টি বছর ইলিয়াস গুম হওয়ার পরে কোনো পত্র-পত্রিকায় একটি দিবস পালন করেনি। সেই ইলিয়াস আলীর জন্য আজকে কেন সাংবাদিকদের মাথা খারাপ হয়ে গেল? আমি কোনো সাংবাদিককে দোষারোপ করছি না। দয়া করে সত্য বক্তব্যটা যদি তুলে ধরতেন তাহলে ভালো হতো। আমি এমন কোনো কথা বলিনি যার জন্য জাতির কাছে, দেশের কাছে, বিএনপির কাছে কিংবা আমার নেতাকর্মীর কাছে আমাকে বিব্রত হতে হবে। আমার বক্তব্য যারা শুনেছেন তারা হয়ত বুঝে উঠতে পারেননি। আমি দুঃখিত যে, আমি বুঝাতে পারিনি।

মির্জা আব্বাস বলেন, আমি আবারো বলছি যে, আমার বক্তব্যের কাটপিছকে তুলে ধরে সামনের অংশ, পেছনের অংশ বাদ দিয়ে মাঝখান থেকে যার যেখানে যতটুকু প্রয়োজন নিয়ে মনের মাধুরী দিয়ে বিস্তারিত লিখেছেন। এর সঙ্গে আমার কোনো সম্পৃক্ততা নেই। এর সঙ্গে আমার দল এবং আমি কোনো দায়-দায়িত্ব বহন করি না। যারা বলছেন, যারা লিখেছেন তার জন্য তারাই দায়িত্ব বহন করবেন। আমি যা বলেছি আমার সংগঠনের ভালোর জন্য বলেছি। আমি কাউকে ক্ষতিগ্রস্ত করার জন্য বলিনি। আমি যা বলেছি, ইলিয়াসকে স্মরণ করে বলেছি, ইলিয়াস আমাদের মধ্যে ছিলেন, আমাদের মাঝে আসবেন, সেই কথা স্মরণ করে আমি বলেছি। দয়া করে আর টুইস্ট করে নিউজ করবেন না। আমাকে কেনো এ সরকার বা কিছু সাংবাদিকের টার্গেট করার প্রয়োজন হলো আমি তা বুঝতে পারছি না। এতো লোক থাকতে ইলিয়াসকে নিয়ে আমাকে টার্গেট করা- এই লক্ষণটা কিন্তু ভালো না, আমি এটাকে অশুভ লক্ষণ বলে মনে করি।

সরকার ইলিয়াসকে গুম করেনি এই বক্তব্য সম্পর্কে জানতে চাইলে আব্বাস বলেন, আমি বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য হয়ে কেনো বলব যে, আমি জানি সরকার জড়িত নয়। আমি কটাক্ষ করে বলেছি। ইট মিনস সরকারই বলুক ইলিয়াস আলী কোথায় আছে? সরকারকেই জবাব দিতে হবে। এই সরকারের সময়ে একজন জলজ্যান্ত ইলিয়াস, একজন তরতাজা ইলিয়াস, সত্যভাষী একজন ইলিয়াস গুম হয়ে যাবে? সরকার জানে না। তাহলে কে করল গুম? আমি এটা বলতে চেয়েছি।
গণমাধ্যমকর্মীদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, আপনারা কী বের করতে পেরেছেন সাগর-রুনি হত্যাকান্ড কারা করল? পারেননি। কারা করেছে বলতে পারবেন আপনারা? ইলিয়াস গুম হয়েছে, সালাহউদ্দিন আহমেদকে পাচার করা হয়েছে, আমাদের চৌধুরী আলমকে গুম করা হয়েছে, এরকম আরো হাজার হাজার নেতাকর্মী গুম করা হয়েছে। কে করল? তারা হাওয়া হয়ে গেল?

এসময় সংবাদ সম্মেলন বিএনপির আসাদুজ্জামান রিপন, খায়রুল কবির খোকন, ফজলুল হক মিলন, কামরুজ্জামান রতন, আবদুস সালাম আজাদ ও কাইয়ুম চৌধুরী উপস্থিত ছিলেন।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: মির্জা আব্বাস


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ