পোশাক রপ্তানিতে উৎসে কর ০.৫ শতাংশ নির্ধারণের প্রস্তাব
আগামী পাঁচ বছরের জন্য তৈরি পোশাক রপ্তানির বিপরীতে প্রযোজ্য উৎসে করহার ১ শতাংশ থেকে হ্রাস করে ০.৫ শতাংশ নির্ধারণের প্রস্তাব করেছে পোশাক খাতের দুই সংগঠন
রমজানে কাতার, সউদী আরবসহ মুসলিম দেশগুলোতে প্রতিটি নিত্যপণ্যের মূল্য কমিয়ে দেয়া হয়। ব্যবসায়ীরা রোজাদারদের কথা মাথায় রেখে প্রতিটি পণ্যে কম লাভ করেন। কিন্তু বাংলাদেশ ব্যাতিক্রম। ৯২ ভাগ মুসলমানের এই বাংলাদেশে ব্যবসায়ীরা যেন রমজানে ভোক্তাদের পকেট কাটতে মুখিয়ে থাকেন। রমজানের আগেই প্রতিটি পণ্যের দাম বাড়িয়ে দেন। রমজানে সিন্ডিকেট করে ফল, সবজিসহ প্রতিটি পণ্যের দাম বেশি রাখেন।
গতকাল বাজার ঘুরে দেখা গেছে রমজান উপলক্ষে রাজধানীর বাজারে প্রতিটি সবজির দাম বেড়ে গেছে। দেশব্যাপী লকডাউন অজুহাতে এখন বিভিন্ন সবজির দাম বাড়িয়ে দেয়া হয়েছে অস্বাভাবিকভাবে। করোনার কারণে সরকার ঘোষিত লকডাউনের দ্বিতীয় দিন বৃহস্পতিবার রাজধানীর কয়েকটি বাজার ঘুরে দেখা গেছে, এক সপ্তাহের ব্যবধানে বিভিন্ন সবজির দাম কেজিতে বেড়েছে ৪০ থেকে ৫০ টাকা পর্যন্ত। তবে মুরগির দাম রয়েছে আগের মতোই। রাজধানীর যাত্রাবাড়ি, কারওয়ান বাজার, হাতিরপুল বাজার, আজিমপুর বাজার ঘুরে এ পরিস্থিতি দেখা গেছে।
কাওরান বাজারের পাইকারি ব্যবসায়ীদের দাবি, লকডাউনের কারণে অনেক সবজি পৌঁছাতে পারছে না। ফলে দাম বেড়েছে। তবে সরবরাহের সমস্যা না থাকলে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়ে আসবে। আবার দাম বাড়লেও বাজারে কোনো সবজির কমতি নেই। আলু, পটল, করলা, টমেটো, শিম, লাউ, কাঁচা-পাকা মিষ্টি কুমড়া, ঢেঁড়স, বেগুন, মুলা, লাল শাক, পালং শাক, লাউ শাক সব কিছুই বাজারে ভরপুর। অথচ খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, সারাদেশ থেকে অবাধে সবজির ট্রাক রাজধানীতে প্রবেশ করছে। আগের মতো মহাসড়কে যানজট না থাকায় দ্রুত গতিতে মালামাল আনা নেয়া করা হচ্ছে। এ ছাড়াও মালবাহী ট্রেনে করেও পণ্য আনা নেয়া হচ্ছে।
রাজধানীর যাত্রাবাড়ি বাজারে দেখা গেল দাম বেড়ে প্রতি কেজি ঢেঁড়স ৬০ টাকা, বেগুন (লম্বা) ১০০ টাকা, কালো গোল বেগুন ৯০ টাকা, সাদা/সবুজ বেগুন ৭০ থেকে ৮০ টাকা, পটল ৮০ টাকা, বরবটি বিক্রি হচ্ছে ৮০ টাকা কেজি দরে। এছাড়া প্রতিকেজি শসা ৮০ টাকা, টমেটো ৫০ টাকা, গাজর ৪০ টাকা এবং আলু ২৫ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। এর আগের দিন প্রথম রোজা তথা বুধবারও এসব সবজির অধিকাংশের দাম কেজি প্রতি ১০ থেকে ১৫ টাকা কম ছিল। এছাড়া গত সপ্তাহে প্রতি কেজি ঢেঁড়স, বেগুন, পটল, বরবটি বিক্রি হয়েছে ৬০ থেকে ৭০ টাকায়। তুলনামূলকভাবে বেড়েছে টমেটো, শসা এবং বেগুনের দাম।
হাতিরপুল বাজারের বিক্রেতা আনিসুর রহামন বলেন, অস্বাভাবিকভাবে বেড়ে গেছে কয়েকটি সবজির দাম। সরবরাহ কম থাকায় এ অবস্থা। কারওয়ান বাজারেও প্রতিটি সবজির দাম বেশি। তিনি বলেন, পাইকারিতে কাওরান বাজারে প্রতি পাল্লায় (৫ কেজি) সবজির দাম ৩০ থেকে ৫০ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে। ফলে আমাদেরও বাড়িয়ে বিক্রি করতে হচ্ছে। তবে ক্রেতারা বলছেন, এসব অসৎ ব্যবসায়ীদের মিথ্যা বয়ান। কারণ সবজির সরবরাহ বেশি। প্রতিটি বাজারে প্রচুর পরিমান সব ধরণের সবজি। তারপরও দাম বাড়িয়ে দিয়েছে সরবরাহ কম অজুহাত দেখিয়ে।
সবজির এমন দামে ক্রেতাদের মধ্যেও কিছুটা অস্বস্তি বিরাজ করছে। বাজার করতে আসা কামরুল ইসলাম বলেন, সবজির কোনো কমতি নেই। বাজারে লকডাউনের কোনো প্রভাবও নেই। সেই হিসেবে সব সবজিরই দাম কমার কথা। কিন্তু বাজারে এসে দেখি সব কিছুরই দাম বেড়ে গেছে। কোনো রকম অজুহাত পেলেই দাম বাড়িয়ে দেন বিক্রেতারা। সরকার মুখে বাজার নিয়ন্ত্রণের কথা বললেও বাস্তবে কোনো নিয়ন্ত্রণ নেই। ফলে অসৎ ব্যবসায়ীরা নিজেদের ইচ্ছা মতো পণ্যের দাম বাড়িয়ে দিয়েছে।
এদিকে, বাজারে মুরগির দাম ত‚লনামূলকভাবে কিছুটা কমেছে। প্রতি কেজি ব্রয়লার মুরগি ১৭০ টাকায়, লেয়ার ২৪০ টাকায় এবং সোনালী মুরগি বিক্রি হচ্ছে ৩৪০ টাকায়। তবে ডাল, চাল, তেল, ছোলা, ব্যাসন, খেজুরসহ প্রতিটি ফলের দাম বেশি।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।