পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
এসো হে বৈশাখ এসো এসো...। বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের এ গানের সুরে সুরে রমনার বটমূলে ছায়ানটের শিল্পীরা প্রতিবছর ভোরে বাংলা নববর্ষকে স্বাগত জানায়। তবে এবার ছিলনা সে সুরের মুর্ছনা, ছিলনা ডাক ঢোলের বাদ্য-বাজনা। এবারের বাংলা নববর্ষ ভিন্ন মাত্রায় উদযাপিত হয়েছে। গত বছরও করোনামহামারীর কারণে রমনায় ছায়ানটের অনুষ্ঠান হয়নি। চারুকলা থেকে বের হয়নি নববর্ষের মঙ্গল শোভাযাত্রা।
করোনা মহামারীর সংক্রমণ প্রতিরোধে এবার পয়েলা বৈশাখ থেকে সারাদেশে কঠোর লকডাউন শুরু হয়েছে। এ কারণে শারীরিক উপস্থিতিতে রমনার বটম‚লে ছিলনা ছায়ানটের বর্ষবরণ, চারুকলায় ছিল না মঙ্গল শোভাযাত্রা। স্বাস্থ্যবিধি মেনে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখার কারণে জনস্বাস্থ্য ও জনস্বার্থের কথা চিন্তা করে রমনার বটমূল, টিএসসি, ঢাকা বিশ^বিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদ, শিল্পকলা একাডেমি, হাতিরঝিল, বাংলা একাডেমিসহ উৎসবের রঙিন আঙ্গিনাগুলো ছিল স্বাস্থ্যবিধির চাদরে ঢাকা। আর উদীচী, খেলাঘর, গ্রুপ থিয়েটার ফেডারেশন, ছায়ানটসহ সামাজিক ও সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠান ও সংগঠনগুলোও গতবারের মতো এবারো উদযাপন থেকে নিজেদের বিরত রাখে। খুবই সীমিত আকারে প্রতীকী দুয়েকটি কর্মসূচি ছিল। চারুকলা ইনস্টিটিউট একশ’ জনকে নিয়ে একটি প্রতীকি শোভাযাত্রা বের করে। তবে রেডিও-টেলিভিশনে নববর্ষের বিভিন্ন সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান উপভোগ করেছে মানুষ। বাংলা নববর্ষের শুরুতে হালখাতা একটি ঐতিহ্য। ব্যবসায়ীরা পুরনো খাতা বাদ দিয়ে হালনাগাদ করে নেন নতুন খাতা। করোনার প্রভাবে সেখানেও ছিল না কোন আনুষ্ঠানিকতা। বাংলা নববর্ষ উপলক্ষে প্রেসিডেন্ট মো: আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশবাসীকে শুভেচ্ছা জানিয়ে বাণী দিয়েছেন। এছাড়া বাংলা নববর্ষ ১৪২৮ উপলক্ষে গণমাধ্যমকর্মীসহ দেশে ও বিদেশে বসবাসরত সব বাংলা ভাষাভাষীকে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন তথ্য ও স¤প্রচার মন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ।
আবহমানকাল ধরেই চলছে বৈশাখ বরণের আনুষ্ঠানিকতা। নববর্ষের প্রকৃত রূপটি দৃশ্যমান হয় গ্রামে। একসময় গ্রামবাংলায় চৈত্রসংক্রান্তি ছিল প্রধান উৎসব। বছরের শেষ দিনে তেতো খাবার খেয়ে শরীর শুদ্ধ করতেন কৃষাণ-কৃষাণীরা। নির্মল চিত্তে প্রস্তুত হতেন নতুন বছরে প্রবেশ করার জন্য। এখনো বৈশাখ বরণের অংশ হিসেবে বাড়িঘর ধুয়ে-মুছে পরিষ্কার করেন গৃহিণীরা। ঘরে ঘরে সাধ্যমতো বিশেষ খাবার রান্না করা হয়। থাকে পিঠাপুলির আয়োজন। বাংলা নববর্ষে ব্যবসায়ীদের হালখাতা রীতি এখনো এ দেশের নিজস্ব সংস্কৃতির আমেজ নিয়ে উৎসবের পরিধির আরো বিস্তার ঘটিয়েছে। কৃষকসমাজ আজো অনুসরণ করছে বাংলা বর্ষপঞ্জি। এককালে কেবল গ্রামাঞ্চলেই পয়েলা বৈশাখের উৎসবে মেতে উঠতো মানুষ।
নানা অনুষ্ঠান, মেলা আর হালখাতা খোলার মাধ্যমে তখন মিষ্টিমুখের আয়োজন হতো। এখন আধুনিক বাঙালি তাদের বাংলা নববর্ষকে সাজিয়ে তুলছে শহরে নগরে সর্বত্রই। নববর্ষ উপলক্ষে ১৪ এপ্রিল ছিল সরকারি ছুটির দিন। জাতীয় সংবাদপত্রগুলো বাংলা নববর্ষের বিশেষ দিক তুলে ধরে ক্রোড়পত্র বের করেছে। সরকারি ও বেসরকারি টিভি চ্যানেল নববর্ষকে ঘিরে বর্ণাঢ্য অনুষ্ঠানমালা প্রচার করে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।