পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
আজ শুরু হল পবিত্র মাহে রমজান। একই সাথে শুরু হয়েছে সরকার ঘোষিত ‘কঠোর লকডাউন’। রমজানের শুরুতে জনগণ নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যসামগ্রি কেনাকাটা করার কারণে স্বাভাবিকভাবে কাচাবাজারের উপর প্রচন্ড চাপ পড়ে, থাকে উপচে পড়া ভীড়। তবে আজ থেকে লকডাউনের কারণে গতকাল এই চাপ ছিল কয়েকগুণ বেশি। সবগুলো বাজার ছিল মানুষে সয়লাব। করোনারভাইরাসের ভয়াবহতা থেকে বাঁচতে বেশিরভাগই মানেননি স্বাস্থ্যবিধি। ক্রেতাদের আনাগোনা দেখে বোঝার উপায় ছিল না, দেশে কোনো মহামারি চলছে। সারাদেশের চিত্র ছিল একই। শুধু কাচাবাজার নয় বিপনীবিতানগুলোতেও ছিল একই অবস্থা। আট দিনের লকডাউনে অনেকেই প্রয়োজনীয় জিনিস কেনার জন্য মার্কেটে ভীড় করেছেন।
গতকাল রাজধানীর যাত্রাবাড়ী আড়ত ঘুরে দেখা গেছে, অন্যান্য দিনের চেয়ে ক্রেতার উপস্থিতি বেশি। করোনাভাইরাসের সংক্রমণরোধে ঘরের বাইরে বের হলেই সার্বক্ষণিক মুখে মাস্ক পরিধান, নির্দিষ্ট দূরত্ব বজায় রাখা ও জনসমাবেশ এড়িয়ে চলাসহ প্রয়োজনীয় স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার কথা বার বার বলা হলেও যাত্রাবাড়ীতে এসবের বালাই নেই। বিক্রেতাদের অধিকাংশের মুখেই মাস্ক নেই। ক্রেতাদের অবস্থা তথৈবচ। কারও কারও মুখে মাস্ক থাকলেও তা সঠিকভাবে পরিধান করা হয়নি। থুতনির নিচে বা কানের পাশে ঝুলে আছে। হৈচৈ চিৎকার চেঁচামেচিতে সরব বাজার দেখে বিন্দুমাত্র বোঝার উপায় নেই দেশে করোনাভাইরাস নামক কোনো মহামারি চলছে।
শনিরআখড়া আন্ডারপাসের দুপাশেই রাস্তা দখল করে বিশাল বাজার। ক্রেতা-বিক্রেতার বেশ ভিড়ে হাঁটা যায় না। চলতে হয় ধাক্কাধাক্কি করে। বাজারে অধিকাংশের মুখেই মাস্ক নেই। এ নিয়ে তাদের কারও কোনো মাথাব্যাথাও নেই।
রাজধানীর কাওরান বাজারেও ছিল একই চিত্র। ক্রেতাদের ভীড়ে করোনাভাইরাস রয়েছে কিনা তা বোঝার উপায় ছিল না। রাজধানীর প্রত্যেকটি বাজারেই ক্রেতাদের এতো পরিমাণ ভীড় ছিল যে মাস্ক পড়া ছাড়া অন্য কোন স্বাস্থ্যবিধি মানার সুযোগ ছিল না। এরপর গরমের কারণে মাস্ক মুখে না দিয়ে থুতনিতে ঝুলিয়ে রেখেছিলেন অনেকেই।
নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য একটু কম দামে কিনতে টিসিবির ট্রাকের সামনেও ছিল প্রচন্ড ভীড়। কিছু জায়গায় টিসিবির গাড়ি কখন আসবে সেজন্যও ক্রেতারা অপেক্ষা করেছেন। গতকাল দুপুরে রাজধানীর হজ্ব ক্যাম্পের সামনে টিসিবির গাড়ি না থাকলেও লম্বা সিরিয়ালে ক্রেতাদের বসে থাকতে দেখা গেছে। এদিকে রাজধানীর প্রতিটি সুপারসপেও ছিল ক্রেতাদের প্রচন্ড চাপ। স্বপ্ন, আগোরা, ফ্যামিলি নিডস, মিনা বাজারসহ সবগুলো সুপারসপের দৃশ্য ছিল একই। মুখে সবার মাস্ক পড়া থাকলেও শারীরিক দূরত্ব মানার কোন দৃশ্য চোখে পড়েনি। রমজান উপলক্ষে সবাই নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য কিনতে ভীড় করেছেন ক্রেতারা।
গত কয়েকদিনে দেশে করোনায় মৃত্যুর রেকর্ড হলেও এর কোনো প্রভাব নেই বাজারে। অসংখ্য ক্রেতা-বিক্রেতা যারা স্বাস্থ্যবিধিকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছেন তাদের সচেতন বা বাধ্য করতে কোনো সরকারি সংস্থা কিংবা বেসরকারি ও স্বেচ্ছাসেবক প্রতিষ্ঠানের কাউকে চোখে পড়েনি।
স¤প্রতি স্বাস্থ্য অধিদফতরের রোগতত্ত¡, রোগনিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (আইইডিসিআর) এক জরিপ প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ছড়ানোর সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ স্থান এখন দুটি, বাজার এবং গণপরিবহন। দেশে এখন পর্যন্ত যারা করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন, তাদের বড় অংশই হয় বাজারে গেছেন, নয়তো গণপরিবহন ব্যবহার করেছেন।
এদিকে আজ থেকে শুরু হওয়া লকডাউন ‘গা ছাড়া’ হবে না সরকার। একাধিক মন্ত্রী ও পুলিশ কর্মকর্তারা গণমাধ্যমে বলেছেন, আজ থেকে জরুরি প্রয়োজন ছাড়া কেউ বাইরে প্রকাশ্যে ঘোরাফেরা করতে পারবেন না। যারা একান্ত জরুরি প্রয়োজনে বাইরে বের হবেন তাদের জন্য পুলিশের পক্ষ থেকে বিশেষ ‘মুভমেন্ট পাস’ ইস্যু করা হবে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।