Inqilab Logo

মঙ্গলবার ১৯ নভেম্বর ২০২৪, ০৪ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৬ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

ভোগান্তি দিয়ে শুরু ঈদযাত্রা

ঢাকা-চট্টগ্রাম : ঢাকা-টাঙ্গাইল : ঢাকা-ময়মনসিংহ : ঢাকা-সিলেট মহাসড়কে দীর্ঘ যানজট : শত শত যানবাহন ঘণ্টার পর ঘণ্টা আটকা

প্রকাশের সময় : ৯ সেপ্টেম্বর, ২০১৬, ১২:০০ এএম | আপডেট : ১১:৩৭ পিএম, ৮ সেপ্টেম্বর, ২০১৬

নূরুল ইসলাম : ভোগান্তি দিয়েই শুরু হলো ঈদযাত্রা। গতকাল বৃহস্পতিবার ঈদযাত্রার প্রথম দিনে ঢাকা-চট্টগ্রাম, ঢাকা-সিলেট, ঢাকা-টাঙ্গাইল, ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কসহ আশুলিয়া, কোনাবাড়ি, চন্দ্রা, জয়দেবপুর চৌরাস্তায় যানজটে আটকা পড়ে শত শত যানবাহন। ঢাকার প্রবেশ পথে ঢাকা-চট্টগ্রাম ও শিমরাইল, ডেমরা, টঙ্গী, আমিনবাজারে যানজটে আটকে থাকে যানবাহন। এ ছাড়া ফেরী সার্ভিসের অচলাবস্থার কারণে দৌলতদিয়া ও পাটুরিয়া ফেরীঘাটে ঘণ্টার পর ঘণ্টা শত শত গাড়ি আটকা পড়ে। সব মিলে প্রতিবারের মতো এবারও ঘরমুখো যাত্রীদের সঙ্গী হয়েছে চিরাচরিত সেই ভোগান্তি। ঢাকা-চট্টগ্রাম, ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক ফোর লেন এবং যাত্রাবাড়ী-কাঁচপুর পর্যন্ত মহাসড়ক ৮ লেন হওয়ার পরেও যানজট পরিস্থিতির উন্নতি না হওয়ায় যাত্রী ও পরিবহন মালিক শ্রমিকরা হতাশ। গতকাল বৃহস্পতিবার ঢাকা থেকে সকালে রওনা দিয়ে বিকাল সাড়ে ৫ ঘণ্টায় ময়মনসিংহে পৌঁছে ভুক্তভোগী এক যাত্রী বলেন, ঘরমুখো যাত্রীদের চাপ এখনও বাড়েনি। প্রথম দিনেই এই অবস্থা। তাহলে আগামী কয়েকদিন কি হবে তা সহজেই বোঝা যায়।
গতকাল সকাল সাতটায় ঢাকা থেকে বাসে রওনা করেন বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা মাহফুজুর রহমান। মহাখালী বাস টার্মিনাল থেকে বাস ছাড়াও পর রাজধানীর যানজট ঠেলে গাজীপুর চৌরাস্তায় গিয়ে ভয়াবহ যানজটে পড়ে বাসটি। প্রায় দেড় ঘণ্টা যানজটে আটকে থাকার পর আবার আটকা পড়ে বাসটি। সাড়ে ৫ ঘণ্টায় বাসটি ময়মনসিংহে গিয়ে পৌঁছে। ঢাকার যাত্রাবাড়ীর বাসিন্দা আইনজীবী মিজানুর রহমান গতকাল সকালে বাসে কুমিল্লার উদ্দেশে রওনা করে কাঁচপুরে দেড় ঘণ্টায় যানজটে আটকা পড়েন। এরপর মেঘনা ও গোমতি সেতুতে গিয়ে আবার প্রায় দুই ঘণ্টা আটকে থাকেন যানজটে। যাত্রাপথে নির্ধারিত সময়ের সাথে বাড়তি সাড়ে তিন ঘণ্টা যোগ হওয়ায় ভীষণ ক্ষুব্ধ তিনি। বলেন, মহাসড়কের উন্নতি হলেও আমাদের সিস্টেমের উন্নতি হয়নি। ম্যানুয়াল সিস্টেমে নিজেদের খেয়াল খুশি মতো কাজ করছে পুলিশ। ঈদের যাত্রায় বিশেষ ব্যবস্থার কথা মন্ত্রীর মুখে শোনা গেলেও বাস্তবে চোখে পড়েনি। তিনি ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে ভয়াবহ এই যানজট ও ভোগান্তির জন্য অব্যবস্থাপনাকে দায়ি করে বলেন, পুলিশ তৎপর হলে পরিস্থিতি এতোটা খারাপ হতো না।    
ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে ১৩ কিঃমিঃ যানজট
নারায়ণগঞ্জে ঢাকা-সিলেট ও ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে গতকাল বৃহস্পতিবার সকাল থেকেই ভয়াবহ যানজট ছিল। পরিবহন শ্রমিক ও যাত্রীদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, ভোরে মহাসড়কের মেঘনা সেতু থেকে মেঘনা-গোমতী সেতুর গজারিয়া অংশে প্রায় ১৩ কিলোমিটার দীর্ঘ যানজট ছিল। যানজটে আটকা পড়ে শত শত গাড়ির হাজার হাজার যাত্রী সীমাহীন দুর্ভোগে পড়েন। ভুক্তভোগীদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, সকালে ঢাকা থেকে ছেড়ে যাওয়া যাত্রীবাহী বাসগুলো প্রথমে কাঁচপুর সেতুর কাছে আটকা পড়ে। এরপর মেঘনা ও গোমতী সেতুতে উঠতে গিয়ে শত শত যানবাহন আটকা পড়ে। কাঁচপুর থেকে গোমতী সেতু পার হতে প্রায় আড়াই ঘণ্টা লেগে যায়। ভুক্তভোগীরা জানান, সেতুতে উঠতে গিয়ে গাড়ির ধীরগতি যানজটের প্রধান কারণ হতে পারে না। প্রধান কারণ বিশৃঙ্খলা। কার আগে কে যাবে এই প্রতিযোগিতায় সেতুর মুখে যানবাহনগুলোর জট থেকে যানজটের সৃষ্টি। তার উপর বিকল গাড়িতো আছেই। ফিটনেসবিহীন গাড়িগুলো সেতুতে উঠতে গিয়ে প্রায়ই বিকল হয়ে পড়ে বলে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে রয়েছে কয়েকটি বাসস্ট্যান্ড। এর মধ্যে মদনপুর এলাকায় আবার রয়েছে মদনপুর-গাজীপুর এশিয়ান হাইওয়ে। যে কারণে মদনপুরের ওই স্পটে সর্বদা যানজট থাকায় সেটার প্রভাব পড়ে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কেও। এ মহাসড়কের কাঁচপুর, দড়িকান্দি, মোগরাপাড়া, মেঘনা ও চিপরদী এলাকাতেও বাস, অটোরিকশা, হিউম্যান হলার থামিয়ে যাত্রী উঠানামা করা হয়।
কাঁচপুর হাইওয়ে পুলিশের ওসি শেখ শরিফুল আলম জানান, সোনারগাঁয়ের মেঘনা সেতু এলাকায় বুধবার রাত থেকে ভোর পর্যন্ত ৬টি গাড়ি বিকল হয়ে পড়ে। তাছাড়া একটি দুর্ঘটনাও ঘটেছে। এতে যানচলাচল বন্ধ হয়ে যায়। যাতে করে এ যানজটের সৃষ্টি হয়েছে।
ঢাকা-সিলেট মহাসড়কেও যানজট
ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের কাঁচপুর সেতুর উত্তর দিকে গেছে ঢাকা-সিলেট মহাসড়ক। গতকাল বৃহস্পতিবার সকাল থেকে এই মহাসড়কেও যানজট ছিল। পুলিশ জানায়, কাঁচপুর সেতু থেকে সিলেটের দিকে যেতেই ভুলতায় গাউছিয়া মার্কেটের সামনে চলছে ফ্লাইওভারের কাজ। এতে ওই স্থানে সড়ক সরু হয়ে গেছে। তাছাড়া যাত্রাবাড়ি থেকে ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের রূপসী পর্যন্ত সড়কের গাড়িও মহাসড়কে গিয়ে জড়ো হলে সৃষ্টি হয় যানজটের। কাঁচপুর এলাকায় দায়িত্বে থাকা এক ট্রাফিক সার্জেন্ট জানান, ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের রূপগঞ্জে ভুলতা ফ্লাইওভার নির্মাণ, কাঁচপুর সেতু ও মেঘনা সেতুতে সকালে কয়েকটি যানবাহন বিকল হওয়ার কারণে পুরো এলাকাজুড়ে যানজট প্রকট আকার ধারণ করে।
ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কে ক্ষণে ক্ষণে যানজট      
পরিবহন শ্রমিক ও ঘরমুখো যাত্রীদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, গতকাল দুপুরের পর থেকে ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কে বঙ্গবন্ধু সেতু মহাসড়কে যানজট বাড়তে থাকে। বাড়তি যানবাহন ও ছোট-বড় দুর্ঘটনায় ক্ষণে ক্ষণে দীর্ঘ যানজটের সৃষ্টি হয়। এর আগে গত বুধবার গভীর রাতে মহাসড়কের উপর পশুবোঝাই একটি ট্রাক বিকল হয়ে যাওয়ায় ২০-৩০ কিলোমিটার দীর্ঘ যানজটের সৃষ্টি হয়। সেই যানজট নিরসন করতে সকাল হয়ে যায়। এর মধ্যে যানবাহনের চাপ আরও বাড়তে থাকে। হাইওয়ে পুলিশের একজন কর্মকর্তা জানান, বুধবার দিবাগত রাতে মহাসড়কের টাঙ্গাইলের করটিয়া বাইপাস এলাকায় একটি ট্রাক বিকল হলে দীর্ঘ যানজটের সৃষ্টি হয়। পরে বিকল ট্রাক মহাসড়ক থেকে সরিয়ে নেওয়ায় গতকাল বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ৭টার দিকে যানজট কমে যায়। হাইওয়ে মধুপুর (এলেঙ্গা) ফাঁড়ির ইনচার্জ জাহাঙ্গীর আলম জানান, উত্তরাঞ্চলের ২২টি জেলার যানবাহন ছাড়াও টাঙ্গাইল, জামালপুর, শেরপুর জেলার পশুবাহী ট্রাক ও যানবাহন এখন ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়ক এবং বঙ্গবন্ধু সেতু মহাসড়ক দিয়ে যাতায়াত করছে। এছাড়া দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া ফেরিঘাট বন্ধ থাকায় এই পথেরও বেশ কিছু যানবাহন এই মহাসড়কে চলাচল করছে। এই বিপুল সংখ্যক যানবাহনের চাপের কারণে এ মহাসড়কে যানজট হচ্ছে। তিনি বলেন, ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কে চার লেনের সম্প্রসারণ কাজ, কয়েকটি ফ্লাইওভারের কাজ, দুর্ঘটনা এবং গাড়ি বিকল হয়ে পড়াই এ যানজটের অন্যতম কারণ। এ যানজট নিরসনে গোড়াই ও এলেঙ্গা হাইওয়ে পুলিশের পাশাপাশি ট্রাফিক পুলিশ, জেলা ও থানা পুলিশ, র‌্যাব, আনসার, জেলা প্রশাসন ও এবং নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটসহ বিভিন্ন সংস্থার লোকজন কাজ করে যাচ্ছে। উল্লেখ্য, দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম মহাসড়ক ঢাকা-টাঙ্গাইল-বঙ্গবন্ধু মহাসড়কে প্রতিদিন গড়ে ১৮-২০ হাজার যানবাহন চলাচল করে।
পাটুরিয়া-দৌলতদিয়া ফেরিঘাটে অচলাবস্থা
তীব্র স্রোত ও ভাঙ্গনের কারণে দৌলতদিয়ার চারটি ফেরিঘাটের তিনটিই বন্ধ রয়েছে। তিন নম্বর ঘাটের একটি পকেট দিয়ে আংশিক ফেরি চলাচল করছে। বিআইডব্লিউটিসি সূত্র জানায়, নদীতে স্রোত ও ভাঙ্গনের কারণে চারটি ঘাটের মধ্যে এক ও চার নম্বর ঘাটের মেরামতের কাজ চলছে। এক নম্বর ঘাটটি নদীতে বিলীন হওয়ায় একমাস বন্ধ রয়েছে। শুধু তিন নম্বর ঘাটের একটি পকেট সচল রয়েছে। এ কারণে পাটুরিয়া ও দৌলতদিয়া ঘাটে পারাপারের অপেক্ষায় রয়েছে শত শত যানবাহন। এর মধ্যে কোরবানির পশুবাহী ট্রাকও রয়েছে অনেক।
বাংলাদেশ ট্রাক ও কাভার্ডভ্যান মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মোঃ রুস্তম আলী খান বলেন, তীব্র স্রোতের কারণে এক মাসের বেশি সময় ধরে দেশের কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ ফেরিঘাটে সমস্যার সৃষ্টি হয়েছে। ঈদ উপলক্ষে সড়কে বেড়েছে পরিবহনের চাপ। পশুবাহী শত শত পরিবহন এখন ঢাকামুখী। কিন্তু ফেরিঘাটগুলোতে এসে পরিবহনগুলোকে ঘণ্টার পর ঘণ্টা আটকে থাকতে হচ্ছে। জানা গেছে, শুধুমাত্র পাটুরিয়া-দৌলতদিয়া নয়, মাওয়া-চরজানাজাত ফেরিঘাটেও এখন একই অবস্থা বিরাজমান। কোন রকমে একটি ফেরি যানবাহন পারাপারে নিয়োজিত। তীব্র স্রোতে সব ঘাট ভেঙ্গে যাওয়ায় পরিস্থিতির ক্রমে অবনতি ঘটছে। সংশ্লিষ্টরা জানান, আজকালের মধ্যে পরিস্থিতির উন্নতি না হলে ঈদে ঘরমুখো মানুষ ও পণ্যবাহী পরিবহন পারাপারে ভোগান্তির মাত্রা অতীতের সকল রেকর্ড ছাড়িয়ে যাবে।
আশঙ্কা ছিল আগে থেকেই
ঈদ সামনে রেখে সড়ক-মহাসড়কের ছয় পয়েন্টে যানজটের আশঙ্কা করছিলেন পরিবহন মালিক ও শ্রমিকরা। আশঙ্কা ছিল তীব্র স্রোতের কারণে ঘাট ভেঙ্গে যাওয়ায় গুরুত্বপূর্ণ দুটি ফেরিঘাটে ভোগান্তির মাত্রা ছাড়াতে পারে এবার। শেষ পর্যন্ত সেই আশঙ্কাই সত্যি হলো। আজ থেকে ভোগান্তির মাত্রা আরও বাড়বে বলে ধারণা সংশ্লিষ্টদের। পরিবহন সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, এক মাসের বেশি সময় ধরে ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কের কোন না কোন পয়েন্টে প্রতিদিনই যানজট হচ্ছে। এছাড়া জয়দেবপুর চৌরাস্তা থেকে ঢাকার মহাখালী বাস টার্মিনাল পর্যন্ত আসতে বা যেতে সময় লাগছে তিন থেকে চার ঘণ্টা। যেখানে দেড় ঘণ্টার বেশি সময় লাগার কথা নয়। সড়ক পরিবহন মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, ঈদের সময় রাজধানীর প্রবেশদ্বার ও বের হওয়ার ১৪টি পয়েন্টকে যানজটপ্রবণ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। এসব পয়েন্টে এক হাজার স্কাউট সদস্যকে স্বেচ্ছাসেবক হিসেবে নামানো হয়েছে। পাশাপাশি সড়ক-মহাসড়কে যানজট নিরসনে কাজ করবে মহানগর পুলিশ, হাইওয়ে পুলিশ, জেলা পুলিশ, শিল্প পুলিশসহ আনসার সদস্যরা। তবে নিরাপদ নৌসড়ক ও রেলপথ জাতীয় কমিটির পক্ষ থেকে ইতোমধ্যে যানজট নিরসন ও যাত্রী নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সড়ক-মহাসড়কে সেনাবাহিনী মোতায়েন করার দাবি জানানো হয়েছে। এ প্রসঙ্গে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন সমিতির মহাসচিব খন্দকার এনায়েত উল্যাহ বলেন, ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কের কোন কোন পয়েন্টে চার লেনের গাড়ি এক লেনে চলতে হয়। বাইপাসগুলো গাড়ির চাপ সামলাতে পারে না। সব মিলিয়ে যানজটের আশঙ্কা ছিলই।
ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে ৪০ কিলোমিটার তীব্র যানজট
দাউদকান্দি উপজেলা সংবাদদাতা : গতকাল বৃহস্পতিবার ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে কুমিল্লার দাউদকান্দি উপজেলার গৌরীপুর-পেন্নাই থেকে কাঁচপুর সেতু এলাকা পর্যন্ত প্রায় ৪০ কিলোমিটার দীর্ঘ যানজট সৃষ্টি হয়। এতে ঘরমুখো মানুষের সীমাহীন দুর্ভোগ পোহাতে হয়। বুধবার গভীর রাতে সৃষ্টি হয়ে এ যানজট বৃহস্পতিবার দিনব্যাপী অব্যাহত থাকে। এতে অফিসগামী, রোগীবাহী অ্যাম্বুলেন্স ও বাসযাত্রী সীমাহীন দুর্ভোগে পড়েন। ভারী ব্যাগ, মালামাল ও ছোট শিশু এবং বৃদ্ধদের নিয়ে পায়ে হেটে ৮/১০ কিলোমিটার পথ পাড়ি দিতে হয়েছে যাত্রীদের। প্রচ- গরমে বহু যাত্রী অসুস্থ হয়ে পড়েন। বিদেশগামী অনেক যাত্রীদের পড়তে হয় চরম বিপাকে। এদিকে, ট্্রাক েেবাঝাই গরু নিয়ে ব্যবসায়ীদের চরম হিমশিম খেতে হয়। গরু ব্যবসায়ী মো. আমির হোসেন জানান, কাঁচপুর থেকে শহীদনগর পৌঁছতে সময় লেগেছে ৬ ঘণ্টা। অথচ ভোরে আমাকে গরু নিয়ে নোয়াখালী থাকার কথা ছিল।
এদিকে, রাত থেকেই যানজট নিরসনে আপ্রাণ চেষ্ঠা চালিয়ে যাচ্ছে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যবৃন্দ। মহাসড়কের গৌরীপুর, বারপাড়া, শহীদনগর, হাসানপুর, বিশ্বরোড, বলদাখাল, টোলপ্লাজা ও দাউদকান্দি সেতুতে দাউদকান্দি হাইওয়ে ও দাউদকান্দি মডেল থানার বিপুলসংখ্যক পুলিশ যানজট নিরসনে কাজ করছে। এ সময় হাইওয়ে ও জেলা পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদেরও দেখা যায়।
ধীর গতিতে মেঘনা-গোমতী সেতু দিয়ে
গাড়ি চলাচল করায় তীব্র যানজট
চান্দিনা উপজেলা সংবাদদাতা : কুমিল্লার চান্দিনা থেকে মেঘনা-গোমতী সেতু পার হয়ে সোনারগাঁও উপজেলার কাঁচপুর পর্যন্ত তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়েছে। পুলিশ বলছে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে দুই লেনের মেঘনা ও গোমতী সেতু দিয়ে ধীর গতিতে গাড়ি চলচল করায় তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়।
কুমিল্লা হাইওয়ে পুলিশ সূত্রে জানা যায়, গত তিন দিনের যানজটের রেশ কাটতে না কাটতেই গত বুধবার রাতে মেঘনা সেতুর উপর অতিরিক্ত মালবোঝাই একটি ট্রাক বিকল হয়ে পড়লে এ দীর্ঘ যানজটের সৃষ্টি হয়। গজারিয়া হাইওয়ে পুলিশ গাড়িটি সরিয়ে নিলে আবার যানবাহন চলাচল শুরু হয়। কিন্তু ঈদে অতিরিক্ত মালবোঝাই লক্কর-ঝক্কর ফিটনেসবিহীন ট্রাক ও কাভার্ডভ্যানগুলো সেতুর উপর দিয়ে ধীর গতিতে চলাচলের ফলে যানজট আরো দীর্ঘ আকার ধারণ করে।



 

Show all comments
  • ওবায়েদ ৯ সেপ্টেম্বর, ২০১৬, ১২:৫৫ পিএম says : 0
    সবাই তো বড় বড় ভাষণ দেয়া কিন্তু কাজের বেলায় ঠন ঠন....
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: ভোগান্তি দিয়ে শুরু ঈদযাত্রা
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ