পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
স্টাফ রিপোর্টার : রাজধানীর বনশ্রী ও কেরানীগঞ্জ এলাকায় অভিযান চালিয়ে এক কোটি টাকার জাল নোট উদ্ধার করেছে র্যাব। এ ঘটনায় অগ্রণী ব্যাংক থেকে চাকুরীচ্যূত সাবেক কর্মকর্তা এবং দুই নারীসহ ৫ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। গ্রেফতারকৃতদের জিজ্ঞাসাবাদে বনশ্রীতে সন্ধান মিলেছে জাল নোট তৈরির কারখানার।
গ্রেফতারকৃতরা হলো অগ্রণী ব্যাংকের সাবেক কর্মকর্তা আ. রশিদ, মোছা. ফাতেমা বেগম (২৫), রুবিনা বেগম (২৪) দুলাল এবং সারোয়ার হোসেন।
র্যাব-১ এর অধিনায়ক লেপ্টেনেন্ট কর্নেল তুহিম মোহাম্মদ মাসুদ জানান, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে বনশ্রী রোড নং-১০/৪, বাসা নং এফ/৭৭-এ অভিযান চালিয়ে মোছা. ফাতেমা ও রুবিনা বেগমকে গ্রেফতার করা হয়। এ সময় ওই ফ্ল্যাটে তল্লাসী চালিয়ে ১ হাজার ও ৫শ’ টাকা নোটের মোট ৭৮ লাখ জাল টাকা উদ্ধার হয়। বাসায় তল্লাসী চালিয়ে জাল নোট তৈরির কাজে ব্যবহৃত ল্যাপটপ, প্রিন্টার ও নিরাপত্তাসুতাযুক্ত কাগজসহ বিভিন্ন সরঞ্জাম উদ্ধার করা হয়। পরে তাদের দেয়া তথ্যে এ চক্রের সক্রিয় সদস্য অগ্রণী ব্যাংকের সাবেক কর্মকর্তা (চাকরিচ্যূত) মোঃ আব্দুর রশিদ. দুলাল এবং মোঃ সারোয়ার হোসেনকে গ্রেফতার করা হয়। অগ্রণী ব্যাংকের কর্মকর্তা মোঃ আব্দুর রশিদকে জিজ্ঞাসাবাদ করলে তারা সবাই জাল টাকার ব্যবসার সাথে জড়িত বলে স্বীকার করে। গ্রেফতারকৃতরা জানায়, তারা দীর্ঘদিন ধরে ঢাকা শহরে জালনোট তৈরি করে আসছে। বিভিন্ন জায়গা থেকে জালনোট তৈরির কাঁচামাল সংগ্রহ করে জালনোট ছাপিয়ে ঈদ-উল-আযহা’কে লক্ষ্য রেখে বিপুল পরিমাণ জালনোট বাজারে সরবরাহ করে আসছিল। ঈদকে সামনে রেখে তারা ইতোমধ্যে কোটি টাকার বেশী জালনোট বাজারজাত করেছে। আরও ২ কোটি টাকা বাজারে ছাড়ার পরিকল্পনা ছিল তাদের।
র্যাব জানায়, জাল নোট তৈরির কারখানার পরিচালানার দায়িত্বে থাকা গ্রেফতার ফাতেমা ও রুবিনার স্বামীর নাম আব্দুর রহিম। আব্দুর রহিম পূর্বে জালটাকা তৈরী ও বাজারজাত করতে গিয়ে র্যাবের হাতে গ্রেফতার হয়েছিল জেলে যায়। পরে রহিমের দুই স্ত্রী জেল থেকে জামিনে মুক্ত করলে সে ছাড়া পেয়ে পুনরায় এই ব্যবসা শুরু করে। কিন্তু সে আবারও গ্রেফতার হয়ে আবার জেলে যায়। জেলে থেকেই দুই স্ত্রীকে দিয়ে সে জাল নোট ছাপিয়ে আসছে। দুই স্ত্রী তার স্বামী আব্দুর রহিমের কাছ থেকেই জাল নোট তৈরির প্রশিক্ষণ নিয়ে জালনোট তৈরি করে আসছিলো। জালটাকার ব্যবসা করতে গিয়ে তাদের সাথে পরিচয় হয় ব্যাংক কর্মকর্তা আঃ রশিদের। পরে রশিদের সহযোগিতায় ব্যাংকের নিরাপত্তা সুতা, বঙ্গবন্ধুর ছবি সম্বলিত টাকা ছাপানোর অমসৃণ কাগজসহ বিভিন্ন সরঞ্জাম সংগ্রহ করতো রুবিনা ও ফাতেমা।
র্যাব জানায়, বনশ্রীর ওই ফ্লাটটি জালনোট তৈরির জন্য টাকশাল হিসেবে তৈরি করা হয়। পরে জালটাকাগুলো চক্রের সদস্যদের মাধ্যমে বিভিন্ন এলাকায় ছড়িয়ে দেওয়া হতো।
র্যাব জানায়, জালটাকা ব্যবসায়ী মোঃ আব্দুর রশিদ অগ্রণী ব্যাংকের জুনিয়ার কর্মকর্তা হিসেবে চাকরি করতো। ব্যাংক থেকে চাকরিচ্যুতি হয়ে জেলও খাটে। জেল থেকে জামিনে ছাড়া পাওয়ার পর রশিদ কাটাবনে প্রিন্টিং প্রেস এর ব্যবসা শুরু করে। জেলে থাকাকালীন রশিদের সাথে ভারতীয় জাল মূদ্রা প্রস্তুতকারী নূরুজ্জামানের সাথে পরিচয় হয়। নুরুজ্জামান জেল থেকে ছাড়া পেয়ে কাটাবনে প্রিন্টিং এসে রহিমের তার সাথে পুনরায় দেখা করে। এর পর ওই প্রিন্টিং প্রেস ব্যবসার অন্তরালে তারা ভারতীয় জাল মূদ্রা তৈরী শুরু করে। প্রথম দিকে আব্দুর রশিদ জাল ভারতীয় মূদ্রার কাগজে নিরাপত্তা ছাপ দেয়ার কাজ করত। ভারতীয় মুদ্রা ছাপানোর পাশাপাশি ধীরে ধীরে দেশীয় মূদ্রার নিরাপত্তা ছাপও দেয়া শুরু করে। রশিদ। একটি দূর্ঘটনার পর সে তার প্রিন্টিং প্রেস বিক্রয় করে দেয়। এই প্রক্রিয়ায় তার সাথে জাল টাকার বড় বড় চক্রের সাথে পরিচয় ঘটে এবং এক সময় নিজেই এই ব্যবসায় নেমে যায়।
গ্রেফতারকৃতরা জানায়, জাল নোটের নিরাপত্তা সুতা, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এর ছবি ছাপাসহ অমসৃণ রেখাগুলো এত নিখুঁতভাবে করে যে সাধারণ মানুষের পক্ষে ছাপানো নোটগুলো জাল কিনা তা ধরা প্রায় অসম্ভব।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।