Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

ভারতে এবার গরুর গোশত ঠেকাতে বিরিয়ানি পুলিশ

প্রকাশের সময় : ৮ সেপ্টেম্বর, ২০১৬, ১২:০০ এএম

ইনকিলাব ডেস্ক
ভারতের হরিয়ানা রাজ্যের পুলিশকে বিরিয়ানি পরীক্ষার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। বিরিয়ানিতে গরুর গোশত মেশানো হচ্ছে কি না, সেটাই পরীক্ষা করবে তারা। পুলিশের সঙ্গেই থাকবেন একজন সরকারি পশু চিকিৎসকও। বিজেপিশাসিত এই রাজ্যে গরুর গোশত নিষিদ্ধ। আইন করে সেখানে গোসেবা কমিশন আর গরু জবাই বা পাচার রোখার জন্য একটি বিশেষ পুলিশ দলও তৈরি হয়েছে। এবার তাদের ওপরে বাড়তি দায়িত্ব পড়েছে বিরিয়ানি পরীক্ষার।
হরিয়ানার গোসেবা কমিশনের চেয়ারম্যান ভানি রাম মঙ্গলা বলছিলেন, ‘মেওয়াট জেলা থেকে প্রচুর অভিযোগ আসছে আমাদের কাছে যে সেখানে বিরিয়ানিতে গরুর গোশত মেশানো হচ্ছে। সেজন্যই আমরা পুলিশকে নির্দেশ দিয়েছি বিরিয়ানি পরীক্ষা করে দেখার জন্য। সঙ্গে একজন পশু চিকিৎসকও থাকবেন। গোশতের নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষাগারে পাঠাবে এই দলগুলো।’
মেওয়াটের মুসলমান সম্প্রদায় অবশ্য বিরিয়ানিতে গরুর গোশত মেশানোর অভিযোগ উড়িয়ে দিচ্ছে। আইনজীবী ও মেওয়াট বার অ্যাসোসিয়েশনের সদস্য নূরউদ্দিন নূর বলছিলেন, ‘বিরিয়ানিতে গরুর গোশত মেশানোর এই অভিযোগ একেবারেই ভিত্তিহীন। বহু যুগ ধরে এখানে বিরিয়ানি তৈরি আর বিক্রি হয়, কখনই গরুর গোশত থাকে না তাতে। মেওয়াটের বদনাম করতে এসব বলা হচ্ছে। এখানে দুই ধর্মের মানুষের মধ্যে যে একটা সম্প্রীতি রয়েছে, সেটা নষ্ট করার চেষ্টা হচ্ছে, মানুষের মনে ভীতি তৈরি করতে চাইছে কেউ কেউ।’ তবে পুলিশ যদি বিরিয়ানির নমুনা নিয়ে গিয়ে পরীক্ষা করায় আর তাতে সত্যিই গরুর গোশত পাওয়া যায়, তাহলে আইন অনুযায়ী যা ব্যবস্থা নেওয়ার, তা নিক পুলিশ। আপত্তির কী আছেÑবলছিলেন মেওয়াটের মুসলমান সম্প্রদায়ের অন্যতম নেতা জনাব নূর। মেওয়াট জেলাটি মুসলমান-প্রধান এলাকা। এখানকার জনসংখ্যার প্রায় ৭০% মুসলমান। ভারতের রাজধানী দিল্লি থেকে প্রায় ১০০ কিলোমিটার দূরে হরিয়ানার অন্তর্গত এই জেলা। মেওয়াটের রাস্তার ধারে বহু জায়গাতেই বিরিয়ানি বিক্রি হয়। মি. মঙ্গলা বলছেন, ওই সব বিরিয়ানিতেই গরুর গোশত দেওয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ পেয়েছেন তারা। অনেকেই নাকি বিরিয়ানিতে গরুর গোশত ব্যবহারের ফলে পরিবেশ খারাপ হওয়ার কথা বলে এটা বন্ধ করার অনুরোধ জানিয়েছেন গোসেবা কমিশনের কাছে, এমনটাই দাবি মি. মঙ্গলার।
বিরিয়ানি থেকে সংগ্রহ করা গোশত হিসারের পশু বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষাগারে পাঠানো হবে। গরুর গোশত পাওয়া গেলে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেবে পুলিশ।
ভারতের বেশ কিছু রাজ্যে গরুর গোশত খাওয়া নিষিদ্ধ। কিন্তু বিজেপি নেতৃত্বাধীন হরিয়ানা সরকারের মতো গরু জবাই বা গরুর গোশত খাওয়ার ওপরে নিষেধাজ্ঞার বলবৎ করতে রীতিমতো সরকারি পরিকাঠামো অন্য কোনো রাজ্যে নেই বললেই চলে।
হরিয়ানা গোসেবা কমিশন ছাড়াও ডিআইজি পদমর্যাদার একজন নারী পুলিশ অফিসারের নেতৃত্বে প্রায় ৩০০ জন পুলিশ কর্মী ছড়িয়ে রয়েছেন গোটা রাজ্যে, যাদের কাজ গরু জবাই বা গরু পাচার রোখা।
বাংলাদেশে যত গরু পাচার হয় ভারত থেকে, তার একটা বড় অংশই আসে হরিয়ানা, রাজস্থান, পাঞ্জাব, উত্তরপ্রদেশের মতো রাজ্যগুলি থেকে। হরিয়ানার গরু পাচার রোধ বাহিনী নিজেরা যেমন বিভিন্ন সূত্রে খবর পেয়ে তল্লাশী অভিযান চালায়, তেমনই গ্রামে গ্রামে নজরদারী চালানোর জন্য স্বেচ্ছাসেবকও নিয়োগ করেছে তারা। রয়েছে বিনা পয়সার টেলিফোন নম্বরও, যেখানে যে কেউ ফোন করে গরু জবাই বা পাচারের ব্যাপারে খবর দিতে পারেন। সূত্র : বিবিসি।

 



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: ভারতে এবার গরুর গোশত ঠেকাতে বিরিয়ানি পুলিশ
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ