পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
স্টাফ রিপোর্টার : দীর্ঘদিন দুরারোগ্য ক্যান্সারের সঙ্গে লড়াই করে ক্লান্ত মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক শাহজাহান সিরাজ বাকরুদ্ধ হয়ে মুমূর্ষু অবস্থায় আছেন। এখন চোখের পাতাও মেলেন না তিনি। মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম জীবন্ত সাক্ষী এই নেতার অবস্থা ভালো নয়, খুবই খারাপ বলে জানিয়েছেন তার সহধর্মিণী রাবেয়া সিরাজ। বসুন্ধরায় অ্যাপোলো হাসপাতালে ৫ দিন চিকিৎসা শেষে একরকম বলেই দিয়েছেন চিকিৎসকরাÑ কিছুই আর করার নেই তাদের।
বিএনপি নেত্রী রাবেয়া সিরাজ ইনকিলাবকে বলেন, হাসপাতালের আইসিইউতে চিকিৎসকদের নিবিড় পর্যবেক্ষণে থাকার পর তারা বলে দিয়েছেন, বাসায় নিয়ে যান, আর কিছুই করার নেই। হাসপাতালের ছাড়পত্র দেয়ায় এখন বাসায় নিয়ে এসেছি। উনি নির্বাক, অবশাবস্থায় চোখ খুলেন না। আমিও কিছু বলতে পারছিনা (আবেগ আপ্লুুত কন্ঠে) প্লিজ...।
এখন তার শারীরিক অবস্থা কেমন জানতে চাইলে তিনি বলেন, উনি কথা একেবারেই বলতে পারেন না। ডাক দিলে একটু একটু চোখ মেলে তাকান কিছুক্ষণ থেকে আবার চোখ বন্ধ করে ফেলেন। তার কোনো নড়াচড়া নেই। চোখের পাতা মেললেই দুই পাশ দিয়ে পানি বয়ে পড়ে অবিরাম।
স্বাধীনতার ইশতেহার পাঠকারী মুক্তিযুদ্ধের এই বীর সংগঠক কী খাবার খাচ্ছেন প্রশ্ন করা হলে স্ত্রী জানান, তরল খাবার দেয়া হচ্ছে নলের মাধ্যমে। সেটা মুখ দিয়ে নয়, পেটের কাছে কৃত্রিম ব্যবস্থা করে। ফুসফুসে ক্যান্সার থাকায় সেজন্য মুখে খাবার খাওয়ানো যায় না।
তিনি জানান, তার স্বামী ডায়াবেটিকস, কিডনি জটিলতা, উচ্চ রক্তচাপও রয়েছে। ১/১১-এর পরে ২০১২ সালে ফুসফুসে ক্যান্সার ধরা পড়ে। এরপর কয়েকবছর পর ধরা পড়ে মস্তিষ্কের ক্যান্সার যা এখন জটিল আকার ধারণ করেছে। রাবেয়া সিরাজ তার স্বামীর জন্য দেশবাসীর কাছে দোয়াও চেয়েছেন।
শাহজাহান সিরাজ গুলশানে থাকেন। মেয়ে ব্যারিস্টার সারোয়াত সিরাজ ও ছেলে রাজীব সিরাজ নিয়ে তার সংসার। ছেলে থাকেন বিদেশে।
স্ত্রী রাবেয়া সিরাজ ছাত্র জীবন থেকে রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত। বিএনপির অঙ্গসংগঠন মহিলা দলের নেত্রী, বিএনপির বর্তমান কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-তাঁতী বিষয়ক সম্পাদক নির্বাচিত হয়েছেন। বর্ণাঢ্য জীবনের অধিকারী শাহজাহান সিরাজ, স্বাধীন বাংলাদেশের প্রথম পতাকার ৫ জন পরিকল্পনাকারীর একজন। স্বাধীনতা সংগ্রাম ও মুক্তিযুদ্ধের সময়ে ১৯৭০-৭২ সালে ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ছিলেন তিনি।
স্বাধীনতার পর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সাথে দ্বন্দ্বের কারণে ছাত্রলীগ থেকে আসম আবদুর রব, শাহজাহান সিরাজের নেতৃত্বে বেরিয়ে যে অংশটি জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল-জাসদ প্রতিষ্ঠা করেন, সেই দলের প্রতিষ্ঠাতা সহকারী সাধারণ সম্পাদক হয়েছিলেন শাহজাহান সিরাজ। পরে জাসদের সভাপতিও নির্বাচিত হন তিনি।
ওই সময়ে আওয়ামী লীগ বিরোধী আন্দোলনে সম্পৃক্ত হওয়ার কারণে শাহজাহান সিরাজ কয়েকবছর কারাগারে ছিলেন।
১৯৯৫ সালে বেগম খালেদা জিয়ার নেতৃত্বে বিএনপিতে যোগ দেন। পরে ২০০১ সালের নির্বাচনের পর গঠিত চার দলীয় জোট সরকারের মন্ত্রী ছিলেন শাহজাহান সিরাজ। দলের সহসভাপতিও ছিলেন তিনি। জাতীয় সংসদে কয়েকবার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন শাহজাহান সিরাজ।
১৯৬২ সালের হামিদুর রহমানের শিক্ষা কমিশন বিরোধী ছাত্র আন্দোলন, ১১ দফা আন্দোলন, ’৬৯ এর গণঅভ্যুত্থানে শাহজাহান সিরাজ ছিলেন অন্যতম ছাত্র নেতা। তিনি স্বাধীন বাংলা কেন্দ্রীয় ছাত্র পরিষদ অর্থাৎ মুক্তিযুদ্ধের চার খলিফা হিসেবে পরিচিত সংগঠনের অন্যতম হচ্ছেন শাহজাহান সিরাজ। একাত্তর সালের ৩ মার্চ তিনি স্বাধীনতার ইশতেহার পাঠ করেন।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।