Inqilab Logo

রোববার ১৭ নভেম্বর ২০২৪, ০২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৪ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

হজের তাৎপর্য ও শিক্ষা

প্রকাশের সময় : ৮ সেপ্টেম্বর, ২০১৬, ১২:০০ এএম

মোহাম্মদ আবু নোমান
হজ আরবি শব্দ। এর আভিধানিক অর্থ সংকল্প করা, ইচ্ছা করা বা প্রদক্ষিণ করা। পরিভাষায় নির্দিষ্ট দিনসমূহে নির্ধারিত পদ্ধতিতে আল্লাহর নৈকট্য ও সন্তুষ্টি লাভের উদ্দেশ্যে পবিত্র কাবাঘর ও সংশ্লিষ্ট স্থানসমূহে বিশেষ কার্যাদি সম্পাদন করাকে হজ বলে। হজ মুসলিম জাতির এক মহাসম্মিলন, শান্তির স্থল ও মুমিনের মিলনমেলা। হজ হলো পারস্পরিক বন্ধন সুদৃঢ় করা, ঈমানের নবায়ন করা এবং একে অপরের সাথে পরিচিত হওয়ার স্থান। বায়তুল্লাহ অভিমুখে হজের সফর ইবাদতের অন্তর্ভুক্ত যা আল্লাহর সন্তুষ্টি ও নৈকট্য লাভের সফর। এ সফরে অন্য কোনো উদ্দেশ্যে, লক্ষ্যে, পার্থিব স্বার্থে বা আকর্ষণে নয়, শুধু আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভের আকুতিটুকুই একান্ত কাম্য। এতে রয়েছে একই সাথে আত্মিক, শারীরিক ও আর্থিক ইবাদতের অপূর্ব সমন্বয়। জিলহজ মাসের ৮ থেকে ১২ তারিখ পর্যন্ত মক্কা, মিনা, আরাফা এবং মুযদালিফায় আল্লাহ ও তার রাসূল (সা.)-এর নির্দেশ মোতাবেক বিভিন্ন কার্য সম্পাদন করাও হজের অন্তর্ভুক্ত। প্রত্যেক সুস্থ, প্রাপ্তবয়স্ক, বুদ্ধিমান ও সামর্থ্যবান মুসলিম নর-নারীর ওপর জীবনে একবার হজ করা ফরজ। এরপর যতবার হজ করা হবে তা নফল হিসেবে গণ্য হবে।
এহরামের কাপড় গায়ে জড়িয়ে আত্মীয়স্বজন ছেড়ে হজের সফরে রওয়ানা হওয়া, কাফন পরে আত্মীয়স্বজন ছেড়ে আখেরাতের পথে রওয়ানা হওয়াকে স্মরণ করিয়ে দেয়। আরো স্মরণ করিয়ে দেয়, এহরামের কাপড়ের মতো স্বচ্ছ-সাদা হৃদয় নিয়েই আল্লাহর দরবারে যেতে হবে। এহরাম অবস্থায় সকল বিধি-নিষেধ মেনে চলা স্পষ্ট ইঙ্গিত বহন করে- মুমিনের জীবন বল্গাহীন নয় বরং আল্লাহর রশিতে বাঁধা। আল্লাহ যেদিকে টান দেন সে সেদিকে যেতে প্রস্তুত। এমনকি যদি তিনি স্বাভাবিক পোশাক-আশাক থেকে বারণ করেন, প্রসাধনী, আতর, স্নো ব্যবহার, স্বামী-স্ত্রীর সাথে বিনোদন নিষেধ করে দেন, তবে সে তৎক্ষণাৎ বিরত হয়ে যায় এসব থেকে। আল্লাহর ইচ্ছার সামনে বৈধ এমনকি অতি প্রয়োজনীয় জিনিসকেও ছেড়ে দিতে সে ইতস্তবোধ করে না বিন্দুমাত্র। এহরাম অবস্থায় ঝগড়া করা নিষেধ। এর অর্থ মুমিন ঝগড়াটে মেজাজের হয় না। মুমিন শান্তিপ্রিয়। ঝগড়া-বিবাদের ঊর্ধ্বে উঠে সে পবিত্র ও সহনশীল জীবনযাপনে অভ্যস্ত। মুমিন ক্ষমা ও ধৈর্যের উদাহরণ স্থাপন করে জীবনের প্রতিটি অধ্যায়ে।
হজের রয়েছে রাজনৈতিক, সামাজিক ও আন্তর্জাতিক তাৎপর্য। কেননা ইসলাম কতিপয় আচার-অনুষ্ঠান সর্বস্ব ধর্ম নয় বরং একটি পরিপূর্ণ জীবন ব্যবস্থার নাম। ইসলাম শান্তি, সাম্য ও মৈত্রীর ধর্ম। কল্যাণ ও জনসেবার ধর্ম। প্রেম ও বিশ্বভ্রাতৃত্বের ধর্ম। জীবনের সবদিক ও বিষয়ের যথার্থ দিকনির্দেশনা ইসলামে রয়েছে। ইসলাম বিশ্বের সকল ধর্মের মানুষের সুখ, শান্তি ও কল্যাণ কামনা করে। হজ পরকালের সফরের একটি মহড়া। মৃত্যুর পর বান্দা সাদা কাপড়ে আবৃত্ত হয়। কবরের জীবনের পরে হাশরের ময়দানে সবাই সমবেত হবে ভেদাভেদহীনভাবে। হজের ইহরামের কাপড় পরিধান, আরাফা, মুযদালেফায় সমবেত হওয়া তারই প্রতিচ্ছবি। পবিত্র মক্কা ও সোনার মদিনায় রাসূল (সা.)-এর স্মৃতিবিজরিত বিভিন্ন স্থান দর্শনে ব্যাকুল-বেকারার হয়ে যান আশেকে রাসূলগণ। প্রেমিক যেমন প্রেমাষ্পদকে পাওয়ার জন্য পাগলের মতো সর্বত্র ঘুরে বেড়ায়। কোথাও সে স্থির থাকে না, থাকতে পারে না। নিজের শরীর, খাদ্য, বিশ্রামের চেতনা থাকে না। তেমন হাজীগণ কাবার চারদিকে ঘুরে, কাবার দরজায়, হাজরে আসওয়াদে, হাতিমে, মিযাবে রহমতের নিচে, মাকামে ইব্রাহিমে, কাবার কোণায় কোণায় কাকে যেন খুঁজে বেড়ায়। কাকে যেন পাওয়ার জন্য ব্যাকুল হয়ে ছোটাছুটি করে সাফা, মারওয়ায়, আরাফা, মুযদালেফায়। দিনে-রাতে কোন বিশ্রাম নেই। সফরে আড়ম্বরতা নেই। বিশ্রামের আলস্য নেই। আবার ছুটে যায় মিনায় শয়তানকে পাথর মারতে, কোরবানি করতে, সেখান থেকে আবার আসে তাওয়াফ করতে। এভাবে সর্বত্র অস্থির, ব্যাকুল সে তার পরম প্রেমাষ্পদ, প্রেমময়, দয়াময়, করুণার আঁধার, মহান আল্লাহকে; যে তাকে সৃষ্টি করেছেন, সবকিছু দিয়েছেন না চাইতেই। অলক্ষ্যে জুগিয়ে যাচ্ছেন খাদ্য-পানীয়, বাঁচার উপকরণ, জীবনাবসানে নিজের কাছে ডেকে নেবেন জান্নাতুল ফেরদাউসে, তার আরশের কাছে অনন্ত জীবন থাকার জন্য। এত অসীম ভালোবাসার সেই সত্তাকেই হাজীগণ খুঁজে বেড়ান মৃত্যুর বেশে, পাগলের মতো অস্থির হয়ে হজের সফরে।
বস্তুত হজের কার্যাদি, দৃশ্য বড়ই বিস্ময়কর ও হৃদয়স্পর্শী। এ দৃশ্য দেখে মুমিনগণ আনন্দিত হন এবং একাত্ববাদীগণ হন সম্মানীত ও গর্বিত। সেই সাথে অপরাধীরা হয় লজ্জিত এবং উদাসীনদের ঘটে বোধোদয়। হজ সম্পর্কে আল্লাহপাক বলেন, মানুষের মধ্যে যার আল্লাহর ঘর পর্যন্ত পৌঁছার সামর্থ্য আছে তার উপর আল্লাহর উদ্দেশ্যে ওই ঘরের হজ করা অবশ্য কর্তব্য (আলে ইমরান)।
সকল ইবাদতের মতো হজের প্রাণ হচ্ছে ইখলাস। অর্থাৎ একমাত্র আল্লাহ তায়ালার সন্তুষ্টি ও নৈকট্য লাভের উদ্দেশ্যে হজ করা। লৌকিকতা, সুনাম-সুখ্যাতি, হাজী উপাধি লাভ ইত্যাদি যে কোনো দুনিয়াবী স্বার্থ ও উদ্দেশ্য থেকে এই আমলকে মুক্ত রাখা অতি জরুরি। ইখলাস ছাড়া কোনো আমলই আল্লাহর দরবারে কবুল হয় না। রাসূল (সা.) এরশাদ করেন, যে ব্যক্তি লোকসমাজে প্রচারের উদ্দেশ্যে নেক আমল করে, আল্লাহ তায়ালা তার কর্মের প্রকৃত উদ্দেশ্যের কথা লোকদের শুনিয়ে দিবেন। আর যে ব্যক্তি লোক দেখানোর উদ্দেশ্যে কোনো সৎ কাজ করে আল্লাহ তায়ালাও তার প্রকৃত উদ্দেশ্যের কথা লোকদের মাঝে প্রকাশ করে দিবেন (বুখারি, মুসলিম)। এ জন্য হজের সৌভাগ্য লাভকারীদের উচিত, আল্লাহতায়ালার নিকট রিয়ামুক্ত হজের জন্য দুআ করতে থাকা। এটাই আল্লাহর প্রিয় হাবিব (সা.)-এর আদর্শ ও শিক্ষা। রাসূল (সা.) এই দুআ করতেন, হে আল্লাহ! আমার হজকে রিয়া ও খ্যাতির আকাক্সক্ষামুক্ত হজরূপে কবুল করুন (বুখারি)। হজ হল বিনয় ও কাতরতা সহযোগে আল্লাহর এশ্ক ও মহব্বত প্রকাশের ভিতর দিয়ে তার নিকট হতে পাপ ও অপরাধসমূহ মার্জনা করানো এবং আল্লাহর রহমত ও অনুকম্পা লাভে ধন্য হওয়া। হাজীদের অন্তরে যখন আল্লাহর রহমত লাভের দৃঢ় প্রত্যয় দানা বেঁধে ওঠে তখনই আল্লাহর অনুকম্পা, ক্ষমা ও দয়া অপরিহার্যরূপে অবতীর্ণ হতে থাকে।
‘মাবরুর (মকবুল) হজের প্রতিদান জান্নাত ভিন্ন অন্য কিছু নয়’। সর্বোত্তম আমল কী এ ব্যাপারে এক ব্যক্তি রাসূল (সা.)কে জিজ্ঞাসা করলে তিনি উত্তরে বললেন, ‘অদ্বিতীয় আল্লাহর প্রতি ঈমান, তারপর মাবরুর হজ যা সকল আমল থেকে শ্রেষ্ঠ। সূর্য উদয় ও অস্তের মধ্যে যে পার্থক্য ঠিক তারই মত।’ উত্তম আমল কি এই মর্মে রাসূল (সা.)-কে জিজ্ঞাসা করা হলে উত্তরে তিনি বললেন, মাবরুর হজ।
হজযাত্রীরা একই পোশাকে, ছন্দে, একই ধারাবাহিকতায় বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তের, বর্ণের, ভাষা এবং আকার-আকৃতির মানুষ একই কেন্দ্রবিন্দুতে এসে সমবেত হয়ে হজের আনুষ্ঠানিকতা পালন করে। সমবেত হয় আরাফা, মোযদালেফায়। মনে থাকে একই আল্লাহর নৈকট্য পাওয়ার ব্যাকুলতা, মুখে থাকে একই তাকবির ধ্বনী। অঞ্চল, দেশ, জাতি, রং, আভিজাত্য সব একাকার হয়ে পরিলক্ষিত হয় মানুষের একতা। সবারই লক্ষ্য বিশ্ব মানবের প্রথম ইবাদতের কেন্দ্র কাবার জিয়ারত। সম্মিলিত কণ্ঠে আওয়াজ করে বলতে থাকে, ‘লাব্বাইকা আলাহুম্মা লাব্বাইক, লাব্বাইকা লা শারিকা লাকা লাব্বাইক, ইন্নাল হামদা ওয়াননি’মাতা লাকা ওয়ালমুলক লা শারিকা লাক’। যার অর্থ- ‘আমি হাজির, হে আল্লাহ আমি হাজির, আমি হাজির, তোমার কোনো শরিক নেই, সব প্রশংসা ও নিয়ামত শুধু তোমারই, সব সাম্রাজ্যও তোমার, তোমার কোনো শরিক নেই’। মুমিনের হৃদয় থাকে এ আকুলতা- হাজির হয়েছি ওগো আল্লাহ! হাজির হয়েছি! এসেছি, তোমার ডাকে সাড়া দেয়ার জন্য এসেছি। আমার সবকিছু তোমার কাছে সমর্পণ করতে এসেছি। এই তালবিয়া পাঠ করে মহান সৃষ্টিকর্তার কাছে নিজের উপস্থিতি জানান দিয়ে পাপমুক্তির আকুল বাসনায় লাখ লাখ ধর্মপ্রাণ হাজি মিনা থেকে আরাফাতের ময়দানে সমবেত হন। এরপর সূর্যোদয় থেকে সূর্যাস্ত পর্যন্ত তারা আরাফাতের ময়দানে থাকেন।
ধন-সম্পদ, বর্ণ-গোত্র ও জাতীয়তার দিক থেকে পার্থক্য থাকলেও হজ এসব ভেদাভেদ ভুলিয়ে মুসলমানদের মধ্যে ঐক্যবদ্ধ হতে শেখায়। হজ মুসলমানদের আদর্শিক ভ্রাতৃত্ব বন্ধনে আবদ্ধ করে। রাজা, প্রজা, মালিক, ভৃত্য সকলকে সেলাইবিহীন একই কাপড় পরিধান করায়। একই উদ্দেশ্যে মহান প্রভুর দরবারে উপস্থিত হয়ে সাম্যের প্রশিক্ষণ দেয়। হজ মানুষকে পারস্পরিক সম্প্রীতি ও শৃঙ্খলা বোধের শিক্ষা দিয়ে সহানুভূতিশীল করে গড়ে তোলে। বিশ্বভ্রাতৃত্ববোধ শেখায়। মহানবী (সা.) বলেন, পথ খরচা ও বায়তুল্লাহ পর্যন্ত পৌঁছবার মতো বাহন থাকা সত্ত্বেও যে ব্যক্তি হজ করে না সে হয়ত ইহুদী বা নাসারা অবস্থায় মৃত্যুবরণ করবে। তিনি আরো বলেন, যে মুসলমান আমার মৃত্যুর পর আমার যিয়ারত করবে সেও তদ্রƒপই বরকত পাবে, যেরূপ আমার জীবিত অবস্থায় আমার সাথে মুলাকাত করলে পেত।
হজ যেন এক বিশ্ব সম্মেলন। এ বিশ্ব সম্মেলনে সব শ্রেণী, পেশার, ভাষার, গোত্রের, অঞ্চলের, জাতির মানুষের কথা ভাবতে হবে। তাদের সুখ-শান্তি নিশ্চিত করার উপায় কি? জাতিতে-জাতিতে, দেশে-দেশে যুদ্ধ-বিগ্রহের সমাধান কি? ফেৎনা-ফ্যাসাদ, দ্বন্দ্ব-কলহ, হিংসা-বিদ্বেষ দূর করে সবার মাঝে ভ্রাতৃত্ববোধ ও ভালোবাসা সৃষ্টির জন্য করণীয় কি? ক্ষুধা-দারিদ্র্য অসুখ-অশান্তি দূর করার উপায় কি? বিশ্বভ্রাতৃত্ব ও বিশ্বশান্তির পন্থা কি? এসব কিছু নিয়ে বিশ্ব মুসলিমের প্রতিনিধি হজযাত্রীদেরই ভাবতে হবে। আরাফাত ও মোযদালেফার সম্মেলন এরই আহ্বান জানায় বিশ্ব মুসলিমকে। এ তাৎপর্য উপলব্ধি করার জন্যই বছরে একবার মহান আল্লাহ এ মহাসম্মেলনের বিধান করেছেন। এর যথার্থতা বাস্তবায়নে মুসলমানদেরই পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে। কারণ তারা জগৎবাসীর কল্যাণের জন্য আবির্ভূত হয়েছে।
আল্লাহতায়ালা বলেন, তোমরাই শ্রেষ্ঠ জাতি, বিশ্বমানবের কল্যাণের জন্য তোমাদের আবির্ভাব হয়েছে, তোমরা সৎ কাজের নির্দেশ দাও, অসৎ কাজে নিষেধ কর (আলে ইমরান)।
হাজরে আসওয়াদ চুম্বন ও স্পর্শ মুমিনের হৃদয়ে সুন্নতের তাজিম বা সম্মান বিষয়ে চেতনা সৃষ্টি করে। কেননা নিছক পাথরকে চুম্বন করার মাহাত্ম কী তা আমাদের বুঝের আওতার বাইরে। তবুও আমরা চুম্বন করি, যেহেতু রাসূলুল্লাহ (সা.) করেছেন। বুঝে আসুক না আসুক কেবল রাসূল (সা.)-এর অনুসরণের জন্যই চুম্বন করা হয় হাজরে আসওয়াদ। এ চুম্বন বিনা শর্তে আল্লাহ ও রাসূল (সা.)-এর আনুগত্যে নিজেকে আরোপিত করার একটি আলামত। ওমর (রা.) হাজরে আসওয়াদকে চুম্বন করার পূর্বে বলেছেন, ‘আমি জানি নিশ্চয়ই তুমি একটি পাথর। ক্ষতি-উপকার কোনোটারই তোমার ক্ষমতা নেই। রাসূল (সা.)কে চুম্বন করতে না দেখলে আমি তোমাকে চুম্বন করতাম না’। হাজরে আসওয়াদের চুম্বন, যুক্তির পেছনে না ঘুরে, আল্লাহ ও রাসূলের নিঃশর্ত আনুগত্যের চেতনা শেখায় যা ধর্মীয় নীতি-আদর্শের আওতায় জীবনযাপনকে করে দেয় সহজ, সাবলীল।
আল্লাহর দিদার ও রাসূল (সা.)-এর জিয়ারতের জন্য উন্মুখ হয়ে থাকে প্রতিটি মুসলমান। এ কামনা, বাসনা হজ ছাড়া অন্য কোনো পথে পূর্ণ হওয়া অসম্ভব ব্যাপার। এতে যেমন আছে দীর্ঘ সফর ও বিশেষ স্থানে, বিশেষ আমলের অপরিহার্যতা, তেমনি আছে গভীর রূহানিয়াত ও আধ্যাত্মিক তাৎপর্যের বিষয়। আল্লাহর ঘর মুমিন জীবনের পরম সৌভাগ্যের প্রতীক। ঐ পুণ্যভূমিতে পৌঁছে বান্দা তার রবের উদ্দেশ্যে নিজের আবদিয়াত ও দাসত্বের এবং ইশ্ক ও মহব্বতের প্রমাণ দেয়। এ ছাড়াও সারা দুনিয়ার হাজিদের সাথে ভাব ও মতের আদান-প্রদানে পারস্পরিক কল্যাণ ও মঙ্গলের পথ অবারিত হয়। মহানবী (সা.) বলেছেন- মকবুল হজের বিনিময় জান্নাত ছাড়া আর কিছু নেই। হজের মাধ্যমে বিগত জীবনের গুনাহ মাপ হয়। আরো বলেছেন- যে ব্যক্তি হজ করে সে যেন নবজাতক শিশুর মতো নিষ্পাপ হয়ে যায়। আল্লাহপাক বলেন- মানুষের নিকট হজের ঘোষণা করে দাও; তারা তোমার নিকট আসবে পায়ে হেঁটে ও সর্ব প্রকার ক্ষীণকায় উটের পিঠে আরোহণ করে। তারা আসবে দূর-দূরান্তের পথ অতিক্রম করে (হজ)।
আল্লাহ আমাদের আজীবনের লালিত স্বপ্ন, বহুকাক্সিক্ষত হজ আল্লাহর হুকুম ও রাসূলের সুন্নত অনুয়ায়ী যথাযথভাবে পালনের সামর্থ্য এবং এর তাৎপর্য ও শিক্ষা উপলব্ধি করে জীবন পরিচালনার তাওফিক দান করুন।
[email protected]



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: হজের তাৎপর্য ও শিক্ষা

৮ সেপ্টেম্বর, ২০১৬
আরও পড়ুন