Inqilab Logo

রোববার ২২ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৭ আশ্বিন ১৪৩১, ১৮ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬ হিজরী

গোল্ড সেক্টরে নীতি সহায়তা দিয়েও কাজে আসেনি

প্রাক বাজেট আলোচনায় এনবিআর চেয়ারম্যান

অর্থনৈতিক রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ২৯ মার্চ, ২০২১, ১২:০১ এএম

জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের চেয়ারম্যান আবু হেনা মো. রহমাতুল মুনিম বলেছেন, সোনা আমদানিতে সরকার নীতিগত সহায়তা দিলেও কোনো কাজে আসেনি। অভ্যন্তরীণ সোনার বাজারে অনেক অদেখা বিষয় আছে এবং লেনদেন ও বিক্রিতে স্বচ্ছতা আসেনি বলে উল্লেখ করেন তিনি।
রাজধানীর সেগুনবাগিচায় এনবিআর এর সমেলন কক্ষে বিভিন্ন শিল্পখাতের সঙ্গে প্রাক বাজেট আলোচনায় সোনার গয়না উৎপাদক ও রফতানিকারকরা আমদানিতে শুল্ক হ্রাস ও প্রণোদনা চাইলে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেন এনবিআর চেয়ারম্যান।

দেশে বছরে ২০ থেকে ২৪ মে. টন সোনার চাহিদা থাকলেও এর মাত্র ১০ শতাংশ পুরনো সোনার অলংকার গলিয়ে সংগ্রহ করা হয়। চাহিদার বাকি ৯০ শতাংশ আসে ব্যাগেজ রুলসের মাধ্যমে ও চোরাই পথে। অবৈধপথে আমদানি ঠেকাতে ডিলারশিপ লাইসেন্স দিয়ে বাণিজ্যিকভাবে আমদানির সুযোগ দেয়া হলেও অবস্থার পরিবর্তন হয়নি। লাইসেন্স পাওয়ার পর গত বছরে দুটি প্রতিষ্ঠান ২৫ হাজার গ্রাম সোনা বৈধভাবে আমদানি করলেও নানা জটিলতায় এরপরে বন্ধ হয়ে যায় আমদানি।
এনবিআর আয়োজিত প্রাক বাজেট আলোচনায় স্বর্ণালঙ্কার রফতানিকারকরা বলছেন, ডিলারশিপ লাইসেন্স দেয়া হলেও শুল্ক কর দিয়ে স্বর্ণ আমদানিতে জটিলতার কারণে অবৈধভাবে বেশি আমদানি হচ্ছে। সোনা আমদানি-রফতানি সহজ করা ও প্রণোদনা দেয়ার দাবি জানান গোল্ড ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টাস অ্যাসোসিয়শনের সভাপতি।

এই দাবির পরিপ্রেক্ষিতে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানিয়ে এনবিআর চেয়ারম্যান বলেন, বৈধভাবে স্বর্ণ আমদানিতে অনেক সুযোগ দেয়া হলেও কোনো লাভ হয়নি। স্বচ্ছতা আসেনি স্বর্ণ কেনা-বেচায়।
তিনি বলেন, গোল্ডের সঙ্গে শুধু পলিসি সাপোর্ট যথেষ্ট নয়। গোল্ডের সঙ্গে আরও অনেক অদেখা বিষয় আছে। সেই বিষযগুলো থেকে উতরিয়ে উঠতে না পারলে এই গোল্ড সেক্টরে কিচ্ছু হবে না। যতই পলিসি সাপোর্ট দেই না কেন।

গতবার সোনা আমদানিতে এত সুবিধা দেয়া হল, কয়টা ইমপোর্ট করছেন। ডমেস্টিক মার্কেটেই স্বচ্ছতা আসেনি। এখন আন্তর্জাতিক বাজারের অনেক কিছু করার কথা বলা হচ্ছে। আরও সাপোর্ট দিলেও কিছু হবে না বলে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেন আবু হেনা মো. রহমাতুল মুনিম।
বাংলাদেশ জুয়েলার্স সমিতির সাবেক সভাপতি গঙ্গাচরণ মালাকার জানান, একজন সোনা আমদানিকারক হতে হলে কমপক্ষে ১০০ কোটি টাকা থাকতে হবে। কিন্তু বাংলাদেশ ব্যাংক যাদের লাইসেন্স দিয়েছে বেশিরভাগেরই সেই সক্ষমতা নেই।
বৈধভাবে সোনা আমদানিতে ২০১৯ সালে একটি ব্যাংকসহ ১৯টি প্রতিষ্ঠানকে লাইসেন্স প্রদান করে বাংলাদেশ ব্যাংক। প্রতি ভরি সোনা আমদানিতে বর্তমানে ২ হাজার টাকা সম্পূরক শুল্ক দিতে হয়।
সেগুনবাগিচায় এনবিআর এর সম্মেলন কক্ষে বিভিন্ন শিল্পখাতের সঙ্গে প্রাক বাজেট আলোচনায় চেয়ারম্যান স্পষ্টভাব জানিয়ে দেন রাজস্ব ক্ষতি করে কোনো খাতকে বাঁচানো হবে না।

তিনি বলেন, নীতিগত সহায়তা দেয়ার পরেও কমপ্লায়েন্ট না হওয়ায় চামড়া শিল্প রফতানির বাজারে সুবিধা করতে পারছে না। শুল্ক বাধা নয় নিজেদের সমস্যার কারণেই এই খাত বিপর্যস্ত। এগ্রো প্রসেসর, চামড়া, বীজ , মিস্টি , বেকারি ও রং শিল্পসহ ১৫টি খাতের প্রতিনিধিরা প্রাক বাজটে আলোচনায় অংশ নিয়ে বিভিন্ন দাবি উপস্থাপন করেন।

ফসলের ন্যায্যমূল্য নিশ্চিতে আলু, গম, ভুট্টা, মরিচ, তরমুজসহ বিভিন্ন শষ্য বীজ আমদানির ক্ষেত্রে শুল্ক মুক্ত সুবিধা নিশ্চিতে অযৌক্তিক শর্ত প্রত্যাহারের অনুরোধ জানান বীজ আমদানিকারক সমিতি। চামড়াজাত পণ্য রপ্তানিতে প্রতিযোগিতায় টিকে থাকতে সব প্রতিষ্ঠানের জন্য সাধারণ বন্ডেড ওয়্যারহাউজ সুবিধা ও করপোরেট কর হার কমানোর দাবি জানান চামড়াজাত পণ্য ও পাদুকা শিল্প খাতের প্রতিনিধিরা।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: গোল্ড সেক্টর
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ