পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
বিশেষ সংবাদদাতা : ট্রাকে ট্রাকে গরু আসছে। রাজধানীতে দিনে-রাতে সমানে ঢুকছে গরুবাহী ট্রাক। ট্রাকের কারণে গতকাল কয়েকটি স্থানে যানজটে আটকা পড়ে শত শত যানবাহন। যানজটে ভোগান্তি পোহাতে হয় যাত্রীদের। গরু যত আসছে ইজারাদাররা ততই খুশি। খুশি ক্রেতারাও। গতকাল মঙ্গলবার রাজধানীর কয়েকটি হাট ঘুরে দেখা গেছে, ক্রমে হাটগুলো কোরবানির পশুতে ভর্তি হয়ে যাচ্ছে। বিক্রেতারা জানান, ক্রেতারা আসছেন, দেখছেন, দাম জিজ্ঞাসা করছেন। কিনছেন কমই। তবে একেবারে যে বিক্রি হচ্ছে না, তাও নয়। হাট না জমায় দাম এখনও বেশি বলে জানান কয়েকজন পাইকার। কয়েকজন ক্রেতাও বলেছেন বেশি দামের কথা। তাদের বক্তব্য হলো হাট পুরোপুরি জমে না উঠলে দাম কমবে না। বিক্রেতারা এখন বোঝানোর চেষ্টা করছেন এবার কোরবানির পশুর সংকট হবে। তবে হাটের ইজারাদাররা বলেছেন, এবার কোরবানির পশুর সংকটের কোনো আশঙ্কা নেই। এর পক্ষে যুক্তি তুলে ধরে তারা বলেন, গতবারেও ঈদের সাত দিন আগে এত বেশি সংখ্যক গরু ঢাকায় প্রবেশ করেনি। গতকাল এক দিনে কয়েকশ’ গরুভর্তি ট্রাক ঢাকায় প্রবেশ করেছে।
রাজধানীর কোরবানির হাট গোছানোর কাজ শেষ। এবার রাজধানীতে ২৪টি স্থানে কোরবানির পশুর হাট বসছে। এর মধ্যে ২৩টি অস্থায়ী হাট এবং গাবতলীর স্থায়ী হাট। কয়েকটি হাটের ইজারাদাররা জানান, ইজারা চূড়ান্ত হওয়ার পর গত কয়েক দিন যাবৎ দেশের বিভিন্ন জেলায় ঘুরে ঘুরে ইজারাদাররা গরুর সন্ধান করেছেন। এর মধ্যে যশোর, ফরিদপুর, মাদারীপুর, কুষ্টিয়া, নাটোর, রাজশাহী, চাঁপাইনবাবগঞ্জ, ঝিনাইদহ, নরসিংদী, কিশোরগঞ্জ, সিরাজগঞ্জ, বগুড়া, নওগাঁ, জয়পুরহাট ও দিনাজপুর জেলা থেকে বেশি গরু আসছে। ইজারাদাররা জানান, এবার চাহিদার তুলনায় অনেক বেশি পশু আমদানির সম্ভাবনা রয়েছে। সে হিসাবে দাম খুব একটা বাড়বে না বলে তাদের ধারণা। ভারতীয় গরু না আসার কোনো বিরূপ প্রভাবও কোরবানির হাটে পড়বে না বলে জানিয়েছেন ইজারাদার ও পাইকাররা। তবে গতকাল কয়েকটি হাটে গিয়ে জানা গেছে, সরকারিভাবে নিষেধাজ্ঞা থাকলেও ভারতীয় গরু আসছে।
যাত্রাবাড়ীর দনিয়া পশুর হাটের একজন পাইকার জানান, গতকাল (মঙ্গলবার) দিনের মধ্যে ভারতীয় গরুভর্তি বেশ কয়েকটি ট্রাক এসেছে এই হাটে। হাটের ইজারাদার আবুল কালাম জানান, যে হারে গরুর ট্রাক আসছে তাতে হাটের পরিসর অনেক বাড়বে। দনিয়া হাটে সড়ক ও নদীপথে প্রচুর কোরবানির গরু আসছে জানিয়ে তিনি বলেন, আশা করছি এই এলাকার মধ্যে দনিয়া-শনিরআখড়া হাটে সবচেয়ে বেশি গরু উঠবে। এজন্য তিনি নিজে গত কয়েকদিন ধরে সারা বাংলাদেশ ঘুরেছেন বলে জানান আবুল কালাম। তিনি বলেন, আমি যেসব এলাকায় গেছি সেসব এলাকা থেকে কয়েক হাজার গরু আসবে। ইতোমধ্যে এসেও গেছে অনেক।
যাত্রাবাড়ীর পাইকারি কাঁচাবাজার সংলগ্ন হাটে গরুর সংখ্যা তুলনামূলকভাবে কম। তবে ইজারাদারের লোকজন জানান, এই হাটও কোরবানির পশু দিয়ে ভরে যাবে।
আলাপকালে দনিয়া হাটের কয়েকজন ক্রেতা জানান, তারা হাট ঘুরে ঘুরে গরু দেখছেন। প্রতিটি মুহূর্তেই গরুর ট্রাক প্রবেশ করছে এই হাটে। মাঝারি থেকে শুরু করে বড় সাইজের গরুও উঠেছে এই হাটে। দনিয়া কলেজের গেটের সামনে একজন পাইকার বড় সাইজের একটি গরুর দাম হেঁকেছেন দুই লাখ টাকা। কয়েকজন ক্রেতা বলেন, হাট জমেনি বলে পাইকাররা একটু বেশি দাম হাঁকছেন। হাট জমলে এই গরু এক লাখ ১০ থেকে ২০ হাজার টাকার মধ্যে বিক্রি হয়ে যাবে।
সিটি কর্পোরেশনের নির্দেশনা অনুযায়ী কোরবানির হাটগুলোতে ঈদের তিন দিন আগে বেচাকেনা শুরু হওয়ার কথা। তবে ইতোমধ্যে হাটগুলোতে কোরবানির পশু বিক্রি শুরু হয়েছে। হাটগুলোতে ক্রেতার সংখ্যা কম হলেও দামে মিললে ক্রেতারা দেরি না করে কোরবানির পশু কিনে ফেলছেন। গতকাল রাস্তা দিয়ে একটি মাঝারি সাইজের গরু নিয়ে যাওয়ার সময় একজন ক্রেতা জানান, ৬৫ হাজার টাকায় কমলাপুর থেকে কিনেছেন গরুটি। ইজারাদারদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, আজ ও কাল রাতের মধ্যে হাজার হাজার গরু রাজধানীর হাটগুলোতে চলে আসবে। এরই মধ্যে ঢাকার বাইরে থেকে শত শত গরুভর্তি ট্রাক ঢাকার উদ্দেশে রওনা করেছে। মাওয়া ও দৌলতদিয়া ফেরি ঘাটে পারাপারের অপেক্ষায় রয়েছে বহু গরুভর্তি ট্রাক। সেগুলো ঢাকায় আসার পর দু’দিনের মধ্যেই পাল্টে যাবে হাটগুলোর চিত্র। জমে উঠবে কোরবানির হাট।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।