পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
স্টাফ রিপোর্টার : পিঠে ব্যাগ নিয়ে কয়েকজন তরুণ ঢুকে পড়েছে গুলশান ১ নম্বরের একটি বহুতল ভবনে। যেখানে রয়েছে কয়েকটি ব্যাংক ও বিভিন্ন বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান। গতকাল মঙ্গলবার সকালে এমন খবর পায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা। হলি আর্টিসান বেকারিতে হামলার কথা মাথায় রেখে ব্যাপক প্রস্তুতি নিয়ে পুলিশ, র্যাব ও সোয়াট সদস্যরা ঘিরে ফেলে ওই ভবন ও আশপাশ এলাকা। ঘটনাস্থলে আনা হয় পুলিশের সাঁজোয়া যান (এপিসি) ও ফায়ার সার্ভিসের গাড়ি। চলে প্রতিটি তলায় তল্লাশি। এতে সেখানকার ব্যবসায়ী ও এলাকাবাসীর মধ্যে দেখা দেয় চরম আতঙ্ক। কয়েক ঘণ্টা পর পুলিশ জানায়, মার্কেটটিতে চোর ঢুকেছিল। তাদের ফেলে যাওয়া পরিত্যক্ত দু’টি ব্যাগ থেকে উদ্ধার করা হয়েছে ১৭টি নতুন মোবাইল ফোন। আর ভবনের পেছনের দিকের গ্রিল কেটে পালিয়ে গেছে অজ্ঞাত চোরেরা।
ঘটনাস্থল গুলশান-১ নম্বর সেকশনের বীর উত্তম মীর শওকত আলী সড়কের ৫১ নম্বর হোল্ডিং। সাততলা ওই ভবনের নিচতলায় রয়েছে কয়েকটি ব্যাংকের এটিএম বুথ ও ওপরে ওঠার সিঁড়ি। এক পাশে দোতলা ও তৃতীয় তলায় এলজি-বাটারফ্লাইয়ের শোরুম। অন্য পাশের দ্বিতীয় ও তৃতীয় তলায় এনসিসি ব্যাংকের কার্যালয়। চতুর্থ তলায় লি ছয় শিয়ং হাউজ নামের একটি প্রতিষ্ঠানের অফিস এবং এক পাশে একটি বিউটি পার্লার। পঞ্চম তলায় নেক্সিম নামের একটি তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান এবং ষষ্ঠ তলায় ইউনিরয়্যাল সিকিউরিটিজের কার্যালয়। সপ্তম তলা খালি।
ওই ভবনের নিচতলায় ব্র্যাক ব্যাংকের এটিএম বুথের নিরাপত্তা কর্মী সবুর মোল্লা সাংবাদিকদের জানান, গতকাল সকাল পৌনে ৭টার দিকে তিনি দেখেন, এনসিসি ব্যাংকের নিচতলার কলাপসিবল গেটের তালা ভেতর থেকে কাটার চেষ্টা করছে এক যুবক। আমি কে কে বলে চিৎকার করে উঠলে কাঁধে ব্যাগ নিয়ে ওই যুবক ভেতরে ঢুকে পড়ে। তারপর গুলশান থানায় খবর দিলাম।
এদিকে এমন খবর পেয়ে সকাল ৯টার পর বিপুল সংখ্যক পুলিশ ওই এলাকা ঘিরে ফেলে। শুরু হয় আতঙ্ক আর নানা গুঞ্জন। মাস দু’য়েক আগে গুলশান হামলার মতো সেখানে নতুন কোনো সন্ত্রাসী হামলার ঘটনা কি না এ নিয়ে জনমনে শঙ্কা দেখা দেয়। নিরাপত্তার স্বার্থে পুলিশ ওই ভবনসহ আশপাশ এলাকার দোকানপাট পর্যন্ত খুলতে দেয়নি। পুলিশের সাঁজোয়া যান এবং ফায়ার সার্ভিসের গাড়িও রাখা হয় ওই সড়কে। ভবনটির সামনে জমে ওঠে কৌতূহলী মানুষের ভিড়। ঘণ্টা তিনেক সেখানকার প্রতিটি তলায় তল্লাশি চালায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। তল্লাশি শেষে বেরিয়ে এসে পুলিশ কর্মকর্তারা জানান, ভেতরে কাউকে পাওয়া যায়নি। আমরা দুটো ব্যাগ পেয়েছি। তারা চুরির উদ্দেশ্য নিয়ে এসেছিল বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করছি আমরা। পরে পুলিশের বোমা নিষ্ক্রিয়করণ ইউনিট এসে ওই ব্যাগে দেখতে পায় ১৭টি মোবাইল ফোন। ঢাকা মহানগর পুলিশের গুলশান জোনের সহকারী কমিশনার রফিকুল ইসলাম বলেন, দু’টি ব্যাগে ১৭টি মোবাইল ফোন পাওয়া গেছে। মনে হচ্ছে, চোরেরা পেছন দিক দিয়ে পাঁচ তলার একটি জানালার গ্রিল কেটে ঢুকেছিল। সকালে তারা নিচতলা দিয়ে বের হওয়ার চেষ্টা করে। কিন্তু দারোয়ান দেখে ফেলে। পরে পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে তারা ভাঙা গ্রিল দিয়ে পালিয়ে যায়।
অতিরিক্ত পুলিশ দেখে গুলশানের হলি আর্টিসান বেকারিতে জঙ্গি হামলার মতো কোনো পরিস্থিতি সৃষ্টি হচ্ছে কি না, সেই শঙ্কা জাগে ওই এলাকার বিভিন্ন ভবনের অফিস ও দোকানকর্মীদের মধ্যে। ভবনটির সামনের অংশ পরিপাটি হলেও পেছনের দিক পুরোই বিপরীত। দ্বিতীয় তলা পর্যন্ত দেয়াল ঘেঁষে ঝুলছে অসংখ্য বৈদ্যুতিক তার। তৃতীয় তলার বারান্দার গ্রিল মরিচা ধরা। কার্নিশের বিভিন্ন জায়গা ভাঙা। দেয়ালের সঙ্গে একটি মইও ঠেস দিয়ে রাখতে দেখা যায়। ভবনের পেছনের দিকে দ্বিতীয় তলা উচ্চতায় এলজি বাটারফ্লাইয়ের বিলবোর্ড, পাশে এনসিসি ব্যাংকের বিলবোর্ড। পঞ্চম তলার একটি জানালার থাই গ্লাস খোলা, ভেতরে গ্রিল কাটা। ওই ভবনের পাশে কমার্শিয়াল ব্যাংক অব সিলোন, তারপর একটি ১৩ তলা নির্মাণাধীন ভবন যেন গায়ে গায়ে লেগে আছে। ব্যাংক অব সিলোনের ছাদ হয়ে এনসিসি ভবনের কার্নিশে উঠে পাইপ বেয়েই জানালার গ্রিল কেটে চোরেরা ভেতরে ঢুকেছিল বলে পুলিশের ধারণা। সকালে সামনের দিকের তালা কেটে বের হওয়ার সময় নিরাপত্তারক্ষী দেখে ফেলায় পেছন দিয়েই চোরেরা পালিয়ে গেছে। তাদের ধরতে অভিযান চলছে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।