Inqilab Logo

সোমবার, ০১ জুলাই ২০২৪, ১৭ আষাঢ় ১৪৩১, ২৪ যিলহজ ১৪৪৫ হিজরী

আত্মহত্যার ঝুঁকিতে ৬৫ লাখ মানুষ!

প্রকাশের সময় : ৭ সেপ্টেম্বর, ২০১৬, ১২:০০ এএম

প্রতিদিন গড়ে ২৮ জন আত্মহত্যা করছে
স্টাফ রিপোর্টার : দেশে আত্মহত্যার প্রবণতা কমছে। আত্মহত্যা সম্পর্কে জনসচেতনতা, কীটনাশক, স্লিপিং পিলসহ আত্মহত্যার উপকরণের সহজলভ্যতা হ্রাস পাওয়ায় এর প্রবণতা কমছে। তবে দেশে এখনও প্রতিদিন গড়ে ২৮ জন আত্মহত্যা করছে।
এছাড়া তরুণ-তরুণীসহ আত্মহত্যার ঝুঁকিতে রয়েছেন ৬৫ লাখ মানুষ! একাধিক মনোরোগ বিশেষজ্ঞ ও পুলিশ প্রশাসনের উদ্ধৃতি দিয়ে এসব তথ্য তুলে ধরা হয়েছে। আত্মহত্যা নিয়ে দেশব্যাপী হালনাগাদের কোনো গবেষণা জরিপ পরিচালিত না হলেও পুলিশের রেকর্ডে বছরে ১০ হাজারেরও বেশি নারী, পুরুষ ও শিশুর আত্মহত্যার রেকর্ড রয়েছে। রেকর্ডে চুয়াডাঙা, ঝিনাইদহসহ দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলে আত্মহত্যার ঘটনা বেশি ঘটছে। নেপথ্যের কারণ অনুসন্ধানে জানা গেছে, দেশে কৃষিজমিতে ব্যবহৃত কীটনাশকের সহজলভ্যতা, যৌতুক, পারিবারিক নির্যাতন, পারিবারিক কলহ, উত্ত্যক্ত ও প্ররোচিত করা, প্রেম ও পরীক্ষায় ব্যর্থতা, দারিদ্র্য ও বেকারত্ব, মানসিক অসুস্থতা, জটিল রোগ, নগরায়ন ও পরিবারতন্ত্রের বিলুপ্তি, নৈতিক অবক্ষয় ও অস্থিরতার কারণে আত্মহত্যার ঘটনা ঘটছে।
আগামী ১০ সেপ্টেম্বর বিশ্ব আত্মহত্যা প্রতিরোধ দিবস। এ উপলক্ষে গতকাল মঙ্গলবার জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউটে এক সায়েন্টিফিক সেমিনারে বক্তারা এসব তথ্য তুলে ধরেন। সেমিনারে ‘সুইসাইড : বাংলাদেশ সিনারিও’ বিষয়ক প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউটের সহকারী অধ্যাপক ডা. ফারজানা রহমান এবং আত্মহত্যা বিষয়ক কেস রিপোর্ট ও ভিডিওচিত্র উপস্থাপন করেন জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউটের সহকারী অধ্যাপক ডা. হেলাল উদ্দিন আহমেদ। সেমিনারের প্রধান অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব সাইকিয়াট্রিস্টের সভাপতি প্রফেসর ডা. মো. গোলাম রাব্বানী।
পুলিশের পরিসংখ্যানে বিগত ২০১২, ২০১৩ ও ২০১৪ সালে প্রতিবছর গড়ে ১০ হাজার মানুষের আত্মহত্যার রেকর্ড থাকলেও বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার হিসেবে তা প্রতি লাখে ৭ দশমিক ৮ জন।
ডা. হেলাল উদ্দিন আহমেদ জানান, এখনও তরুণ-তরুণীসহ বিভিন্ন বয়সের ৬৫ লাখ মানুষ আত্মহত্যার ঝুঁকিতে রয়েছে। জনসচেতনতা বৃদ্ধি ও কীটনাশকের সহজলভ্যতা হ্রাস পাওয়ায় বর্তমানে আগের তুলনায় এ আত্মহত্যার প্রবণতা হ্রাস পেয়েছে।
ডা. মো. গোলাম রাব্বানী বলেন, আত্মহত্যাজনিত মৃত্যুর অধিকাংশই প্রতিরোধযোগ্য। গবেষণায় দেখা গেছে, অধিকাংশ ব্যক্তিই আত্মহত্যার সময় কোনো না কোনো গুরুতর মানসিক রোগে আক্রান্ত থাকেন। তিনি আরো বলেন, আত্মহত্যাপ্রবণ ব্যক্তিরা অধিকাংশ ক্ষেত্রেই প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে তাদের আত্মহননের ইচ্ছার কথা আত্মীয় বা বন্ধুর কাছে ব্যক্ত করে থাকেন। হয়তো সেটা গুরুত্ব দেয়া হয় না বা মানসিক রোগ নিশ্চিত হলেও যথাযথ চিকিৎসা করা হয় না।
‘সোসাইটি ফর সুইসাইড প্রিভেনশন বাংলাদেশ’-এর সাধারণ সম্পাদক ও জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউটের প্রফেসর ডা. মোহিত কামাল বলেন, সামাজিক ও ধর্মীয় রীতিনীতি, অনুশাসন, ভালো বন্ধু, প্রতিবেশী ও সহকর্মীর সঙ্গে সামাজিক সুসম্পর্কের পাশাপাশি সুষম খাদ্য গ্রহণ, পর্যাপ্ত নিদ্রা, নিয়মিত শরীরচর্চা, ধূমপান ও মাদকাসক্তি থেকে দূরে থাকা তথা স্বাস্থ্যকর জীবনযাপন এবং শারীরিক-মানসিক যে কোনো অসুস্থতায় যথাযথ স্বাস্থ্যসেবা লাভের সুযোগ আত্মহত্যা প্রবণতা কমায়। সেমিনারে বিশেষ অতিথি হিসেবে ছিলেন জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউটের পরিচালক প্রফেসর ডা. মো. আব্দুল হামিদ এবং বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের মানসিক রোগ বিভাগের চেয়ারম্যান প্রফেসর ডা. ঝুনু শামসুন্নাহার।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: আত্মহত্যার ঝুঁকিতে ৬৫ লাখ মানুষ!
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ