পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
অদ্ভুত এক ধরনের ‘সেবা কার্ড’। মাত্র ৫ হাজার টাকা জমা দিয়ে ওই কার্ড করতে পারলে ৬ মাস পরে ৫০ হাজার টাকা পাওয়া যাবে। এমন লোভনীয় সুযোগ কে-ই বা হাতছাড়া করতে চায়। কার্ড করার পর কয়েক মাস টাকা পাওয়ায় বিশ্বাস তৈরী হয় সেই প্রতিষ্ঠানের উপর। তাই এক জনের দেখা দেখি অন্যরাও কার্ড করে। যাচাই বাছাই না করে, কিছু না ভেবেই দ্রুত ৫ হাজার টাকা জমা দিয়ে সংশ্লিষ্ট নামধারী প্রতিষ্ঠানে গিয়ে ‘সেবা কার্ড’ করে প্রতারিত হয়েছেন প্রায় ৪০০ নারী। রাজধানীর কদমতলী থানা এলাকায় ঘটে এমন ঘটনা। গত ২০ ফেব্রুয়ারি টাকা নিয়ে উধাও হয়ে যায় প্রতিষ্ঠানটি। এ ঘটনায় গত ২৫ ফেব্রুয়ারি কদমতলী থানায় একটি মামলা দায়ের করেছেন সংশ্লিষ্ট ভুক্তভোগী।
মামলার এজাহার, পুলিশ ও সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, সূর্যের হাসি ক্লিনিক নাম দিয়ে প্রতারকরা কাজ শুরু করেছিল। তবে অফিসে ছিল না কোনো সাইনবোর্ড। পরে জানা যায় ওই প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে ‘সূর্যের হাসি ক্লিনিকের’ কোনো সম্পর্কই নেই। বিদেশি ফান্ড থেকে এই ক্লিনিকের মাধ্যমে টাকা দেয়া হবে বলে জানানো হয়। একটি চক্র অসহায় নারীদের কাছে থেকে টাকা হাতিয়ে নিতে এমন ফাঁদ পেতেছিল। আর এই কাজে তাদের মূল সহায়তাকারী ছিলেন স্থানীয় শিরিন বকুল নামের এক নারী। এই শিরিন বকুলই বহু নারীর কাছে থেকে টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন। ঘটনার পরে থেকেই পলাতক তিনি।
প্রতারণার বহু ধরণ ছিল এই প্রতারকদের। প্রতারিত ও ভুক্তভোগীদের দেওয়া তথ্যমতে, প্রতি সাধারণ সেবা কার্ডে ৫ হাজার টাক জমা করলে ৬ মাস পরে ৫০ হাজার টাকা দিবে তারা। আর ১০ হাজার টাকার অসুস্থ কার্ডে এক বছর পরে এক লাখ টাকা দিবে। অসুস্থতার কার্ডটা তারা ফেব্রুয়ারির ১ তারিখ থেকে নেওয়া শুরু করেছিল। রেশন কার্ডের নামে ৫ হাজার টাকা দিলে এক মাস পর পর ২ হাজার ৫০০ টাকার চাল ডাল দিবে। বলছে এটা দেড় দুই বছর পর্যন্ত দিবে। অসুস্থ কার্ড করে ১০ হাজার টাকা জমা দিলে এক বছর পরে তারা এক লাখ টাকা দিবে। আর সারা বছর চিকিৎসা বিনামূল্যে। আর বিধবা কার্ডের কথা বলছে, ৫ হাজার টাকা জমা দিলে প্রতি মাসে ২ হাজার টাকা করে দিবে। শিশু কার্ডে ৫ হাজার টাকা জমা দিলে ২ মাস পর পর ৫ হাজার টাকা করে দেয়া হবে। পঙ্গু ভাতার কার্ড করে ৫ হাজার টাকা জমা দিলে মাসে মাসে ২ হাজার করে দিবে। আর এ সব টাকা বিদেশি ফান্ডের থেকে সূর্যের হাসি ক্লিনিকের মাধ্যমে দেয়া হবে।
কদমতলী এলাকায় বাসিন্দা মৌসুমী আক্তার জানান, ২০২০ সালের জুন মাসে করোনাকালীন সময়ে অন্তঃসত্ত্বা ছিলেন তিনি। এই সময়ে আলপনা নামের এক নারীর মাধ্যমে ‘লোভনীয়’ এই প্রস্তাব পান মৌসুমী। কোনো কিছু না ভেবেই দ্রুত ৫ হাজার টাকা জমা দিয়ে সংশ্লিষ্ট নামধারী প্রতিষ্ঠানে গিয়ে ‘সেবা কার্ড’ করেন মৌসুমী। আর সেই ‘সেবা কার্ড’ নেওয়ার কিছুদিন পরেই মুনাফার প্রথম ১০ হাজার টাকা পেয়ে যান মৌসুমী। এরপর তার বিশ্বাস জন্মে যায় ওই প্রতিষ্ঠানে ‘সেবা কার্ড’ করলে সত্যি টাকা ১০ গুণ হয়ে যায়।
এই বিশ্বাসেই মৌসুমী নিজে একাধিক কার্ড করেন। এরপর এমন লোভনীয় সুযোগের কথা জানিয়ে দেন প্রতিবেশী এবং নিকট আত্মীয়-স্বজনদেরও। ফলে তার মাধ্যমে আরও বহু নারী ওই প্রতিষ্ঠানে বিভিন্ন অঙ্কের টাকা জমা দিয়ে সেই সেবা কার্ড নেন।
কদমতলী থানায় দায়ের করা মামলার প্রধান আসামিও হলেন শিরিন বকুল। তার নিজ বাসায় বসেই এসব কার্ডের টাকা জমা নিতেন। এই ঘটনার পরে তার বাসায় ভুক্তভোগী নারীরা টাকা ফেরত চাইতে গেলে তাদের লাঞ্চিত এবং মারধোর করেছেন বলে অভিযোগ ভুক্তভোগীদের।
এই ঘটনা সম্পর্কে জানতে চাইলে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা কদমতলী থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) লালবর রহমান বলেন, ‘মামলার প্রধান আসামি পলাতক রয়েছেন। তাকে গ্রেপ্তারের জন্য অভিযান চালানো হচ্ছে। তথ্য-প্রযুক্তির মাধ্যমে লোকেশন সনাক্ত করে খুব দ্রুতই তাকে গ্রেপ্তার করা হবে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।