পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
বিশেষ সংবাদদাতা : বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্ককে ‘সর্বোচ্চ গুরুত্ব’ দিয়ে ভারত তাকে নতুন উচ্চতায় নিয়ে যেতে আগ্রহী বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশে দেশটির নতুন হাইকমিশনার হর্ষ বর্ধন শ্রিংলা। গতকাল (রোববার) সকালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে তার কার্যালয়ে সাক্ষাৎ করেন হর্ষ বর্ধন। পরে প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব ইহসানুল করিম সাংবাদিকদের এ বিষয়ে ব্রিফ করেন।
নয়াদিল্লিতে গত বৃহস্পতিবার বাংলাদেশের পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলমের সঙ্গে ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী সুষমা স্বরাজের দেয়া একটি বক্তব্যের উদ্ধৃতি করে হাইকমিশনার বলেন, শেখ হাসিনার সরকারকে ভারত সব ধরনের সহযোগিতা দিয়ে যাবে।
প্রেস সচিব জানান, ভারতের হাইকমিশনার গত সাত বছরে বাংলাদেশের বিভিন্ন খাতের উন্নয়ন ও আর্থিক প্রবৃদ্ধি ৬.৫৫ শতাংশ অর্জনের প্রশংসা করে এ সাফল্যকে ‘অসাধারণ’ হিসেবে অভিহিত করেন। বাংলাদেশকে ২০২১ সালের মধ্যে মধ্যম আয়ের ও ২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত দেশ হিসেবে গড়ে তুলতে যে লক্ষ্য আওয়ামী লীগ সরকার নির্ধারণ করেছে তা ‘অর্জনযোগ্য’ বলেও মন্তব্য করেন হর্ষ বর্ধন। বৈঠকে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধে ভারতের অবদানের কথা তুলে ধরেন এবং ভারতের রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীকে শুভেচ্ছা জানান। ১৯৬৫ সালে পাক-ভারত যুদ্ধের আগে বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে যেসব রেল রুট চালু ছিল তা আবার চালু করার ওপর গুরুত্ব আরোপ করেন শেখ হাসিনা। তিনি ভারতের পার্লামেন্টে স্থল সীমান্ত চুক্তি সর্বসম্মতভাবে অনুসমর্থন করায় ধন্যবাদ জানান। এ জন্য ভারতের সব রাজনৈতিক দলকে ধন্যবাদ জানান প্রধানমন্ত্রী।
বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী বিদ্যুতের বিষয়ে ভারতসহ, নেপাল ও ভুটানের সঙ্গেও আঞ্চলিক সহযোগিতার ওপর গুরুত্বারোপ করেন। আঞ্চলিক সহায়তা বৃদ্ধির লক্ষ্যে সৈয়দপুর বিমানবন্দরকে ‘মুক্ত’ করে দেয়ার কথাও তুলে ধরেন প্রধানমন্ত্রী। এছাড়া দারিদ্র্য বিমোচনে আঞ্চলিক সহযোগিতার প্রয়োজনীয়তার ওপরও গুরুত্বারোপ করেন তিনি।
ভারতের হাইকমিশনার দুই দেশের মধ্যে যাত্রী চলাচল ও পণ্য পরিবহন আরো সহজ করতে সীমান্তে চেকপোস্ট বাড়ানোর প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরেন। বঙ্গবন্ধুর ‘অসমাপ্ত আত্মজীবনী’ হিন্দিসহ অন্যান্য ভারতীয় ভাষায় অনুবাদ করা হবে বলে জানান তিনি। ভারতে বাংলাদেশের পণ্য রপ্তানি বাড়ছে উল্লেখ করে হর্ষ বর্ধন বলেন, বাংলাদেশের জ্বালানি খাতে বিনিয়োগে ভারতীয় উদ্যোক্তারা আগ্রহী। সার্ক স্যাটেলাইট চালুর বিষয়টি তুলে ধরে হর্ষ বর্ধন বলেন, বাংলাদেশ এতে যোগদান করতে পারে। জ্বালানি খাতে ভারতীয় কোম্পানিগুলো বিনিয়োগে আগ্রহী বলেও জানান তিনি।
প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা গওহর রিজভী, মুখ্য সচিব আবুল কালাম আজাদ এ সময় উপস্থিত ছিলেন।
বাংলাদেশে ব্যবসা বাড়াতে আগ্রহী ব্রিটিশরা
ব্রিটিশ ব্যবসায়ীরা বাংলাদেশে তাদের বাণিজ্য বাড়াতে আগ্রহী বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশে নবনিযুক্ত যুক্তরাজ্যের হাইকমিশনার এলিসন ব্লেইক। গতকাল (রোববার) সকালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎকালে তিনি এ কথা জানান। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে এ সাক্ষাৎ অনুষ্ঠিত হয়। পরে প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব ইহসানুল করিম সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন।
যুক্তরাজ্যের হাইকমিশনার বলেন, বাংলাদেশে ব্রিটিশ ব্যবসায়ীরা তাদের ব্যবসা বাড়াতে আগ্রহী, বিশেষ করে জ্বালানি খাতে। বাংলাদেশের উন্নয়নে যুক্তরাজ্য সরকার সহযোগিতা অব্যাহত রাখবে বলেও জানান হাইকমিশনার এলিসন। সাক্ষাৎকালে জলবায়ু পরিবর্তন ঝুঁকি নিয়েও আলোচনা হয়।
যুক্তরাজ্য পার্লামেন্টে বাংলাদেশী বংশোদ্ভূত তিন সংসদ সদস্য বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ রেহানার কন্যা টিউলিপ রেজওয়ানা সিদ্দিক, সংসদ সদস্য রুশনারা আলী ও রূপা হকের প্রশংসা করেন হাইকমিশনার।
দায়িত্ব পালনকালে দু’দেশের সর্ম্পক বৃদ্ধিতে কাজ করবেন বলে জানান হাইকমিশনার এলিসন ব্লেইক। এ সময় প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে অমর একুশে বইমেলা ঘুরে দেখার অনুভূতি ব্যক্ত করেন তিনি। নতুন হাইকমিশনারকে স্বাগত জানিয়ে সব ধরনের সহযোগিতা দেয়ার আশ্বাস দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। দু’দেশের চলমান সম্পর্কে সন্তোষ প্রকাশ করে এ সম্পর্ক ভবিষ্যতে আরো শক্তিশালী হবে বলে আশা প্রকাশ করেন প্রধানমন্ত্রী। ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধে যুক্তরাজ্যের জনগণ ও রাজনীতিবিদদের সহযোগিতার কথা স্মরণ করেন প্রধানমন্ত্রী। বাংলাদেশের উন্নয়নে যুক্তরাজ্যের অব্যাহত সহযোগিতার প্রশংসা করেন প্রধানমন্ত্রী। তথ্য-প্রযুক্তিতে বাংলাদেশের অসাধারণ অগ্রগতির কথাও তুলে ধরেন তিনি।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা ইন্টারনেট সেবাকে সারাদেশে ছড়িয়ে দিয়েছি। অনলাইনে ২৫৭ ধরনের সেবা দেয়া হচ্ছে। বাংলাদেশের মানুষ প্রযুক্তিবান্ধব বলেও মন্তব্য করেন প্রধানমন্ত্রী।
জলবায়ু পরিবর্তন ঝুঁকি মোকাবেলায় বাংলাদেশের নেয়া বিভিন্ন উদ্যোগের কথা উল্লেখ করেন প্রধানমন্ত্রী। স্বাস্থ্য ও সামাজিক নিরাপত্তা খাতে সরকারের নেয়া বিভিন্ন পদক্ষেপের কথাও উল্লেখ করেন তিনি। এ সময় অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন প্রধানমন্ত্রীর আন্তর্জাতিক উপদেষ্টা গওহর রিজভী, প্রধানমন্ত্রী কার্যালয় সচিব সুরাইয়া বেগম, প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব ইহসানুল করিম।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।