Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

মুনাফা করমুক্ত করার প্রস্তাব কেন্দ্রীয় ব্যাংকের

ইসলামি বন্ড ‘সুকুক’

অর্থনৈতিক রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ২২ মার্চ, ২০২১, ১২:০০ এএম

ইসলামি বন্ডে বিনিয়োগ থেকে পাওয়া মুনাফাকে করমুক্ত করতে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) কাছে প্রস্তাব দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। শরিয়াহভিত্তিক ইসলামি বন্ড ‘সুকুক’ নামে পরিচিত। আরবি শব্দ ‘সুকুক’ অর্থ সিলমোহর লাগিয়ে কাউকে অধিকার ও দায়িত্ব দেয়ার আইনি দলিল। কেন্দ্রীয় ব্যাংক সুকুকে বিনিয়োগের ক্ষেত্রে পাঁচ শতাংশ উৎস কর প্রত্যাহারের প্রস্তাব দিয়েছে।

গত ৪ মার্চ এনবিআরকে চিঠি দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। অনুরোধ জানিয়ে তারা বলেছে, বিনিয়োগকারীদের সেকেন্ডারি বন্ড মার্কেট থেকে সুকুক সার্টিফিকেট কিনতে উৎসাহ দিতে যেন তাদের প্রস্তাব গ্রহণ করা হয়। গত ২৮ ডিসেম্বর প্রথম বারের মত সুকুক ইস্যু করে বাংলাদেশ ব্যাংক। এর মূল উদ্দেশ্য দেশব্যাপী নিরাপদ পানির সরবরাহ নিশ্চিতকরণ প্রকল্পের জন্য আট হাজার কোটি টাকা সংগ্রহ করা। সরকার প্রাথমিকভাবে এর ৫০ শতাংশ অর্থ সংগ্রহ করতে পেরেছে। ধারণা করা হচ্ছে, মে মাসের মধ্যে বাকি চার হাজার কোটি টাকা সংগ্রহ করা সম্ভব হবে।

প্রাথমিক নিলামে আটটি ইসলামি আর্থিক প্রতিষ্ঠান ও দুজন বিনিয়োগকারীসহ মোট ৩৭টি ব্যাংক অংশ নেয়। ইসলামি বন্ড থেকে বিনিয়োগকারীরা মূলধনের ওপর ৪ দশমিক ৬৯ শতাংশ হারে মুনাফা পাবেন।
সুকুকের মেয়াদ পূর্ণ হবে পাঁচ বছরে। সরকারের লক্ষ্য, নিরাপদ পানি সরবরাহ প্রকল্পটিকে ২০২৫ সালের ৩০ জুনের মধ্যে বাস্তবায়ন করা। বিনিয়োগকারীরা প্রচলিত ট্রেজারি বিল ও বন্ড থেকে প্রাপ্ত আয়ের বিপরীতে বার্ষিক কর দিয়ে থাকেন। এছাড়াও, তাদেরকে মূলধনের ওপর মুনাফা দেওয়ার সময় ৫ শতাংশ হারে উৎস কর দিতে হয়।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের এক কর্মকর্তা জানান, এনবিআর কোনো ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের বার্ষিক আয়করের পরিমাণ হিসাব করার সময় উৎস কর বাদ দিয়ে করে। এই করগুলোর কারণে অনেকে শরিয়াহ ভিত্তিক এই বন্ডে বিনিয়োগ করতে নিরুৎসাহিত হচ্ছেন। করের কারণে সেকেন্ডারি বন্ড মার্কেটে সুকুক বেচাকেনার ক্ষেত্রে প্রতিবন্ধকতার সৃষ্টি হচ্ছে বলে জানান ওই কর্মকর্তা।

যদি কেউ মেয়াদ শেষের আগেই সুকুক বিক্রি করেন, তাহলে বর্তমান বিধি অনুসারে তাদের উৎস কর দিতে হয়। একইভাবে, যে ওই বন্ডটি কিনতে আগ্রহী তাকেও একই পরিমাণ উৎস কর পরিশোধ করতে হয়।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের এই কর্মকর্তা বলেন, ক্রেতা ও বিক্রেতার মাঝে একটি সমঝোতা প্রয়োজন, যাতে করে তারা উৎস কর নিজেদের মধ্যে আনুপাতিক হারে ভাগ করে নিতে পারেন। এতে করে একই বন্ডের জন্য দুবার কর দিতে হয় না। বিনিয়োগকারীরা সুকুক থেকে বছরে দুবার মুনাফার টাকা পেয়ে থাকেন।
এমন পরিস্থিতিতে বিনিয়োগকারীরা ইসলামি বন্ড কেনাবেচার ক্ষেত্রে জটিলতার শিকার হচ্ছেন বলে জানান কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ওই কর্মকর্তা। চলতি অর্থবছরের শুরুর দিকে এনবিআর ট্রেজারি বিল ও বন্ডের ওপর উৎস কর চালু করে।

কেন্দ্রীয় ব্যাংক ইতোমধ্যে এনবিআরকে চিঠি দিয়ে ট্রেজারি বিল ও বন্ডের মুনাফার ওপর উৎস কর প্রত্যাহার করতে বলেছে। কিন্তু এনবিআর এখনো এর কোনো উত্তর দেয়নি। কেন্দ্রীয় ব্যাংক এনবিআরকে অনুরোধ করেছে, সুকুককে প্রবাসী বাংলাদেশিদের জন্য প্রচলন করা আরও তিনটি সরকারি বন্ডের মত উৎস কর মুক্ত রাখতে।
বাংলাদেশি বিনিয়োগকারীদের ইউএস ডলার প্রিমিয়াম বন্ড, ইউএস ডলার ইনভেস্টমেন্ট বন্ড ও ওয়েজ আর্নার্স ডেভেলপমেন্ট বন্ডে বিনিয়োগের ক্ষেত্রে কোনো উৎস কর দিতে হয় না। কেন্দ্রীয় ব্যাংক বলছে, এনবিআরের উচিৎ সুকুককে আকর্ষণীয় করতে একই পন্থা অবলম্বন করা। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের চিঠিতে বলা হয়েছে, মালয়েশিয়া, পাকিস্তান ও তুরস্কসহ বিভিন্ন দেশে সুকুক বন্ডে বিনিয়োগকারীদেরকে ট্যাক্স রিবেট দেয়া হয়েছে। প্রয়োজনে এর জন্য আলাদা কর পলিসিও তৈরি করা হয়েছে।



 

Show all comments
  • মুহাম্মদ ইউনুস ২২ মার্চ, ২০২১, ১:০৮ এএম says : 0
    ভালো উদোগ।
    Total Reply(0) Reply
  • রাজিব ২২ মার্চ, ২০২১, ১:০৮ এএম says : 0
    মুনাফা করমুক্ত করলে ভালো হবে।
    Total Reply(0) Reply
  • গাজী ওসমান ২২ মার্চ, ২০২১, ১:০৮ এএম says : 0
    মুনাফা করমুক্ত করা হোক।
    Total Reply(0) Reply
  • Rahmatullah Mukhtar ২২ মার্চ, ২০২১, ৮:৪৬ এএম says : 0
    আমরাও চাই সুকুকে বিনিয়োগের ক্ষেত্রে পাঁচ শতাংশ উৎস কর প্রত্যাহার করা হোক
    Total Reply(0) Reply
  • সোলায়মান ২২ মার্চ, ২০২১, ৮:৪৭ এএম says : 0
    ক্রেতা ও বিক্রেতার মাঝে একটি সমঝোতা প্রয়োজন, যাতে করে তারা উৎস কর নিজেদের মধ্যে আনুপাতিক হারে ভাগ করে নিতে পারেন।
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: কেন্দ্রীয় ব্যাংক

২৬ সেপ্টেম্বর, ২০২২

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ