পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
শফিকুল ইসলাম বেবু, কুড়িগ্রাম থেকে : কুড়িগ্রামে ঈদকে ঘিরে সীমান্ত গলিয়ে আসছে হাজার হাজার ভারতীয় গরু। এসব গরুর ৩০ ভাগ করিডোর করা হলেও ৭০ ভাগই করিডোর ফাঁকি দেয়া হচ্ছে।
জেলার ২০টির অধিক রুট দিয়ে কিছু অসাধু গরু ব্যবসায়ী করিডোর না করে এসব গরু দেশের বিভিন্ন প্রান্তে ছড়িয়ে দিচ্ছে। ফলে সরকার রাজস্ব হারালেও গরু ব্যবসায়ীদের পোয়াবারো অবস্থা। তারা চোরাচালানের মাধ্যমে হাতিয়ে নিচ্ছে লাখ লাখ টাকা। এ ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলোর অবহেলাই করিডোর ফাঁকি দেয়ার অন্যতম কারণ বলে মনে করা হচ্ছে। জানা যায়, দেশের উত্তরে সীমান্ত পরিবেষ্টিত জেলা কুড়িগ্রাম। জেলার তিন দিকে ২৭৩ কিলোমিটারব্যাপী ভারতীয় সীমান্ত এলাকা। আন্তর্জাতিক পরিম-লে ভারতীয় সীমানায় কাঁটাতারের বেড়া থাকলেও অরক্ষিত অবস্থায় পড়ে আছে নদ-নদীবেষ্টিত এলাকাগুলো। ৯টি উপজেলার মধ্যে ৭টি উপজেলা দিয়ে সরাসরি ভারত থেকে প্রবাহিত হচ্ছে ছোট-বড় ১৬টি নদ-নদী। এসব নদ-নদী দিয়ে প্রতিদিন স্রোতের মতো আসছে ভারতীয় গরু। এই বিশাল এলাকা নিয়ন্ত্রণে কুড়িগ্রাম-৪৫ বিজিবি ব্যাটালিয়নের অধীন বিওপি ক্যাম্প রয়েছে ২৪টি, অপরদিকে রৌমারী-রাজিবপুর উপজেলার জন্য জামালপুর-৩৫ ব্যাটালিয়নের অধীনে ১০টি ক্যাম্প রয়েছে। ঈদুল আজহাকে সামনে রেখে ৭টি উপজেলার নদী ও সড়কপথে ২০টির অধিক পয়েন্ট দিয়ে গরু আসছে প্রতিনিয়ত। আর এসব অবৈধ কাজে জীবন বাজি রেখে জড়িয়ে পড়ছে শত শত সীমান্তবাসী। অধিকাংশ গরু করিডোর ছাড়াই সড়ক, নৌপথে চলে যায় দেশের বিভিন্ন স্থানে। অবৈধ পথে আসা এসব গবাদি পশুর প্রতিটি ৫শ’ টাকার বিনিময়ে কাস্টমস্ বিভাগের মাধ্যমে করিডোর করে দেয়া হয় বৈধতা।
সরেজমিন সদর উপজেলার হলোখানা ইউনিয়নে গিয়ে দেখা যায়, ভারতীয় গরু এই জেলার একমাত্র প্রবেশপথ ধরলা ব্রিজ দিয়ে না এনে ভিন্ন পথে আনা হচ্ছে। ধরলা ব্রিজ গেটে বিজিবি ও কাস্টমস অফিস গরুগুলো করিডোর করে ছেড়ে দেয়। কিন্তু অসাধু গরু ব্যবসায়ীরা ধরলা ব্রিজ দিয়ে করিডোর না করে কুড়িগ্রামকে ঘিরে যে ধরলা নদী প্রবাহিত হচ্ছে তারই বিভিন্ন পয়েন্ট দিয়ে করিডোর ফাঁকি দিয়ে এসব গরু নদীর মাধ্যমে পার করে করিডোর ফাঁকি দিচ্ছে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে একাধিক গরু ব্যবসায়ী জানান, আমাদের দু’দিকেই লোকসান গুনতে হচ্ছে। অনুমোদনহীন গরুগুলোর জন্য স্থানীয় দালাল থেকে শুরু করে জনপ্রতিনিধিদের এমনকি বিভিন্ন প্রশাসনের সদস্য এবং স্থানীয় সরকারদলীয় নেতাকর্মীরা তুলছে টাকা। ফলে আশাতীত লাভবান হচ্ছে না তারা। এছাড়াও ব্যবসায়ীরা অভিযোগ করেন, করিডোর রসিদে ৫শ’ টাকা বলা থাকলেও গরুপ্রতি ৬২০ টাকা করে নেয়া হচ্ছে।
গরু পারাপারের কাজে নিয়োজিত রাখালরা জানান, শেষ বিকেল থেকে মধ্য রাত পর্যন্ত ধরলা নদী সাঁতরিয়ে গরু পারাপার করতে আড়াইশ’ থেকে ৩শ’ টাকা করে নেন তারা।
দেখা গেল একটি ভটভটিতে ১৬ থেকে ১৭টি গরু তোলা হচ্ছে। এ জন্য গরুপ্রতি ৭০ থেকে ৮০ টাকা নেয়া হচ্ছে। আর ভটভটির মাধ্যমে জেলার বিভিন্ন বাজারে পৌঁছে দেয়া হয় এসব গরু। এছাড়াও অবৈধ পথে আসা গরু দেখভালের জন্য কমিটি রয়েছে। যারা মসজিদ ও রাস্তা সংস্কারের নামে ৭০ টাকা করে হাতিয়ে নিচ্ছে। এ জন্য রসিদও দেয়া হচ্ছে। তবে এই কর্মে নিয়োজিতরা সাংবাদিক দেখে সটকে পড়েন। স্থানীয়রা জানান, ধরলা নদীর ওপর আরাজী পলাশবাড়ী ঘাট, বড়াইবাড়ী ঘাট, চর লক্ষ্মীকান্ত ঘাট ও মাস্টারের হাট দিয়ে নদী পার করে আনা হয় এসব গরু।
এ ব্যাপারে কুড়িগ্রাম দুর্নীতি প্রতিরোধ কমিটির সভাপতি সামিউল হক নান্টু জানান, হাজার হাজার গরু সীমান্ত গলিয়ে এলেও এর মূল্য পরিশোধ করা হয় হুন্ডির মাধ্যমে। গরু আমদানির ক্ষেত্রে ভারতের সাথে বাংলাদেশের কোনো চুক্তি না থাকায় টাকা লেনদেন হয় অবৈধ পন্থায়। এছাড়াও ধরলা ব্রিজ দিয়ে করিডোর না করে ধরলা নদীর ওপর দিয়ে বিভিন্ন পয়েন্টে অবৈধ পন্থায় গরু পারাপার করা হচ্ছে। এটি দেখেও না দেখার ভান করছে সংশ্লিষ্ট বিভাগগুলো। প্রশাসনের এদিকে নজর দেয়া দরকার।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।