Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

মুজিব-ইয়াহিয়ার চতুর্থ দফা বৈঠক

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ২০ মার্চ, ২০২১, ১২:১৪ এএম

১৯৭১ সালের এই দিনে অসহযোগ আন্দোলনের ঊনবিংশ দিনে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে প্রাক্তন নৌসেনাদের এক সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। সমাবেশে সশস্ত্র বাহিনীর প্রাক্তন বাঙালী সৈনিকদের স্বাধীনতা সংগ্রামে অংশ নেয়ার জন্যে একটি সম্মিলিত মুক্তিবাহিনী কমান্ড গঠনের আহবান জানান হয়।

সকালে রমনা প্রেসিডেন্ট ভবনে শেখ মুজিবুর রহমান এবং প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়া খানের মধ্যে চতুর্থ দফা আলোচনা বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকে বঙ্গবন্ধুর সাথে তার ছয়জন শীর্ষ স্থানীয় সহকর্মী উপস্থিত ছিলেন। প্রায় সোয়া দুই ঘন্টা আলোচনা শেষে শেখ মুজিব প্রেসিডেন্ট ভবন থেকে বের হয়ে এসে সাংবাদিকদের বলেন, আলােচনায় কিছুটা অগ্রগতি হয়েছে। কাল আবার বৈঠক হবে। এ মুহূর্তে এর চেয়ে বেশি আর কিছু বলব না। সময় এলে আমি অবশ্যই সবকিছু বলব।

সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাব শেখ মুজিব জানান, ‘জয়দেবপুরে নিরস্ত্র জনতার ওপর সেনাবাহিনীর গুলিবর্ষণের ঘটনার প্রতি প্রেসিডেন্টের দৃষ্টি আকর্ষণ করে আমি আমার বক্তব্যে বলেছি। প্রেসিডেন্ট ঘটনাটি তদন্ত করে দেখবেন বলে আমাকে কথা দিয়েছেন’।
সারাদিন জনতার দৃপ্ত পদচারণায় রাজধানী রাজপথ উন্মাতাল করে মিছিলের পর মিছিল এগিয়ে চলে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার অভিমুখে। সেখানে সমাবেশের পর একের পর এক শোভাযাত্রা ধানমন্ডি ৩২ নম্বরের বাসভবনে গিয়ে সমবেত হয়। সেখানে সমাগত জনতার উদ্দেশে একাধিক সংক্ষিপ্ত ভাষণদানকালে মুজিব দৃঢ়তার সাথে ঘােষণা করেন, মুক্তিপাগল সাড়ে সাত কোটি বাঙালীর চূড়ান্ত বিজয়কে পৃথিবীর কোনাে শক্তিই রুখতে পারবে না। বাংলাদেশকে কলােনি করে বাজার হিসেবে ব্যবহার করার দিন শেষ হয়ে গেছে।

ন্যাপ (ভাসানী) এদিন ২৩ মার্চ ‘স্বাধীন পূর্ববাংলা দিবস’ পালনের প্রস্তুতি হিসেবে মগবাজার, ফার্মগেট, নিউমার্কেট ও খিলগাঁয়ে পথসভা করে। শেখ মুজিবুর রহমানের সঙ্গে তার ধানমন্ডির বাসভবনে মুসলিম লীগ (কাউন্সিল) প্রধান মিয়া মমতাজ মােহাম্মদ খান দৌলতানা ও জমিয়তে ওলামায়ে ইসলামের মহাসচিব মওলানা মুফতি মাহমুদ পৃথক পৃথক বৈঠকে মিলিত হন।

রাতে এক বিবৃতিতে শেখ মুজিব বলেন, মুক্তি অর্জিত না হওয়া পর্যন্ত সংগ্রাম চলবে। তিনি বলেন, বাংলাদেশ আজ বিশ্ব দরবারে একটি অনুপ্রেরণাদায়ী দৃষ্টান্ত।
সুপ্রিম কোর্টের প্রখ্যাত আইনজীবী ও আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলার অন্যতম কৌসুলী এ.কে. ব্রোহি সকালে করাচী থেকে ঢাকায় আসেন।
পিপলস পার্টির চেয়ারম্যান জুলফিকার আলী ভূট্টো করাচীতে এক সাংবাদিক সম্মেলনে বলেন, তিনি লন্ডন পরিকল্পনা যা ১৯৬৯ সালে লন্ডনে বসে শেখ মুজিব, খান আবদুল ওয়ালী খান ও মিয়া মমতাজ মোহম্মদ খান দৌলতানা কর্তৃক প্রণীত তা মানবেন না। তিনি বলেন ঐ পরিকল্পনা আওয়ামী লীগ প্রধান কর্তৃক ঘোষিত ৬-দফার ভিত্তিতেই করা হয়েছে।

এদিন ভুট্টো সাংবাদিকদের কাছে ২১ মার্চ ঢাকা বৈঠকে যোগদানের ঘোষণা দেন। তিনি বলেন যে তাকে ঢাকায় আসার আমন্ত্রণ জানানাের প্রেক্ষিতে তিনি প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়ার কাছে যে ব্যাখ্যা চেয়েছিলেন, ঢাকা থেকে সে সম্পর্কে সন্তোষজনক জবাব মেলায় ঢাকা বৈঠকে যোগ দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তিনি।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: মুজিব-ইয়াহিয়া
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ