পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
![img_img-1720386352](https://old.dailyinqilab.com/resources/images/cache/169x169x3_1678437663_IMG-20230310-WA0005.jpg)
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
আইয়ুব আলী : রাজীব দীর্ঘদিন ধরে দাঁতের ব্যথায় ভুগছিল। দাঁতের চিকিৎসার জন্য নোয়াপাড়া রাউজান থেকে এসেছিলেন চট্টগ্রাম জেনারেল হাসপাতালে। যথারীতি টিকিট নিয়ে দন্ত বিভাগের ডাক্তারের শরণাপন্ন হন। ডাক্তার পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে বলেন, দাঁতের এক্স-রে করতে হবে। রাজীব বললেন, কোথায় এক্স-রে করাবো। ডাক্তার উত্তরে বললেন, এখানে এক্স-রে মেশিন নেই।
বাইর থেকে করিয়ে আনতে হবে। ডাক্তারের কথামত রাজীব বাইর থেকে এক্স-রে করে এক্স-রে রিপোর্ট নিয়ে আবার ডাক্তারের কাছে যায়। এবার ডাক্তার বললেন, রুট ক্যানেল করতে হবে। কিন্তু এখানে করা যাবে না। চকবাজার মেডিকেলে যেতে হবে। এ অবস্থা চট্টগ্রাম জেনারেল হাসপাতালের। এরূপ প্রত্যেক বিভাগের একই অবস্থা। জেলার প্রত্যন্ত অঞ্চল থেকে গরিব অসহায় রোগীরা এ হাসপাতালে আসেন। কিন্তু পায় না কাক্সিক্ষত চিকিৎসা সেবা। মহানগরীর প্রাণকেন্দ্র আন্দরকিল্লায় অবস্থিত চট্টগ্রাম জেনারেল হাসপাতাল। বৃহত্তর চট্টগ্রামের অতি পুরনো হাসপাতালটি বর্তমানে খুড়িয়ে খুড়িয়ে চলছে। হাসপাতালে দিন দিন রোগীর সংখ্যা বাড়লেও সেবার মান বাড়েনি। ১৫০ বেডের অবকাঠামো, চিকিৎসক ও জনবল দিয়ে চলছে ২৫০ শয্যার এ হাসপাতালটি। নানা সমস্যায় বিগত ৪৪ বছরেও এটি এখনও পূর্ণাঙ্গ হাসপাতালের রূপ পায়নি। মাত্র একজন করে মেডিকেল অফিসার দিয়ে চলছে ৫টি ওয়ার্ড। চিকিৎসকের অভাবে দুপুরে পর বন্ধ থাকে অপারেশন থিয়েটার। নেই কোন স্থায়ী বাবুর্চি, নিরাপত্তা প্রহরী ও পরিচ্ছন্ন কর্মী।
প্রায় ৮ একর ভূমির উপর ১৯৭২ সালে প্রতিষ্ঠিত হয় চট্টগ্রাম মেডিকেল স্কুল। পরবর্তীতে ১৯৮৭ সালে এটিকে রূপান্তর করা হয় ৮০ শয্যার চট্টগ্রাম জেলা হাসপাতালে। চিকিৎসক ও জনবল না বাড়িয়ে এরপর এটিকে উন্নীত করা হয় ১৫০ শয্যায়। এভাবে আরও কয়েক বছর অতিবাহিত হওয়ার পর সর্বশেষ ২০১১ সালে আরও ১০০ শয্যা বাড়িয়ে ২৫০ শয্যার চট্টগ্রাম জেনারেল হাসপাতালটি আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। কিন্তু বিগত ৫ বছরেও নির্মাণ করা হয়নি নতুন কোন স্থাপনা। অবকাঠামো, চিকিৎসক ও জনবল সংকটের কারণে রোগীরা কাক্সিক্ষত সেবা পাচ্ছে না।
চট্টগ্রাম জেনারেল হাসপাতালে বর্তমানে মঞ্জুরীকৃত পদ রয়েছে ১৭৮টি। এর মধ্যে রয়েছেন ১৫৮ জন। শূন্য রয়েছে ২০টি পদ। এছাড়া আউট সোর্সিং এর মাধ্যমে আরও ৩৬ জনকে নিয়োজিত করা হয়েছে। তবে ২৫০ শয্যার হাসপাতালের জন্য জনবল দরকার আরও বেশি। চিকিৎসক, কর্মকর্তা-কর্মচারীসহ ২৬২ জনের একটি অর্গানোগ্রাম তৈরি করেছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। এর জন্য সরকারের কাছে চাহিদাপত্রও পাঠানো হয়েছে। বর্তমান কাঠামোতে ৫ ওয়ার্ডে মেডিকেল অফিসার রয়েছেন মাত্র ৫ জন।
অথচ হাসপাতালের জন্য মর্নিং, ইভিনিং ও নাইট শিফটের জন্য মেডিকেল অফিসার দরকার ১৫ জন। ফলে চিকিৎসকের অভাবে কাক্সিক্ষত সেবা পান না রোগীরা। এছাড়াও প্রয়োজনীয় বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের অভাবে অপারেশন থিয়েটার পূর্ণাঙ্গভাবে খোলা রাখা যায় না। দুপুর ২টার পর বন্ধ হয়ে যায়। বাবুর্চি না থাকায় রোগীর খাবার পরিবেশন করতে হিমশিম খেতে হয় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে। হাসপাতালে নেই সেন্ট্রাল অক্সিজেনের ব্যবস্থা। পরিচ্ছন্ন কর্মীর অভাবে হাসপাতালের টয়লেটগুলোও প্রায়শ ব্যবহারের অনুপযোগী থাকে বলে রোগীদের অভিযোগ।
চাহিদা অনুযায়ী ভবন না থাকায় ঠাসাঠাসি করে রোগীর সিট বসানো হয়েছে। হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, চট্টগ্রাম জেনারেল হাসপাতালে ওয়ার্ড রয়েছে ৫টি। মেডিসিন, শিশু, সার্জারী, গাইনী, অর্থোপেডিকস, চক্ষু, নাক, কান ও গলা, কিডনি, ইউরোলজি এবং গ্যাসট্রোলজি এ ১০টি বিভাগ নিয়ে ঠাসাঠাসি করে ওয়ার্ডগুলো চালানো হচ্ছে।
এর মধ্যে সর্বশেষ চালু করা হয় কিডনি, ইউরোলজি এবং গ্যাসট্রোলজি বিভাগ। বর্তমানে চালুর প্রক্রিয়ায় রয়েছে হৃদরোগ, লিভার, চর্ম ও যৌন ওয়ার্ড। কিন্তু প্রয়োজনীয় ভবন না থাকায় এসব বিভাগ চালু করা যাচ্ছে না। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ইতিমধ্যে নতুন একটি ১২ তলা ভবন নির্মাণের উদ্যোগ নিলেও সরকারের পক্ষ থেকে এখনও কাক্সিক্ষত সাড়া মেলেনি। এটি নির্মাণ হলে হাসপাতালের চিকিৎসা সেবার মান বৃদ্ধির পাশাপাশি আরও কয়েকটি নতুন বিভাগও চালু করা সম্ভব হবে বলে মনে করেন সংশ্লিষ্টরা।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।