পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
রাজধানীর বিমানবন্দর এলাকায় বাস র্যাপিড ট্রানজিট (বিআরটি) প্রকল্পের দুর্ঘটনার কারণ জানতে চীন থেকে আসছে বিশেষজ্ঞ দল। তারা পরবর্তী করণীয় কি হবে তা ঠিক করবেন। আগামী ২১ মার্চ তাদের আসার কথা রয়েছে। এদিকে, দুর্ঘটনার পর থেকে বিমানবন্দর এলাকায় বিআরটি প্রকল্পের কাজ বন্ধ রয়েছে। গত রোববার সকালে কাজ করার সময় বিআরটি প্রকল্পের লঞ্চিং গার্ডার ভেঙে পড়ে। এতে কমপক্ষে ৬জন আহত হয়।
তিনটি সংস্থা মিলে বাস্তবায়ন করছে দেশের প্রথম বিআরটি লেন। দুর্ঘটনাটি ঘটেছে সড়ক ও জনপথ (সওজ) অধিদপ্তরের অংশে (কন্ট্রাক্ট-১)। বিআরটির জন্য বিমানবন্দর এলাকায় ফ্লাইওভার নির্মাণ করছে সওজ অধিদপ্তর। ফ্লাইওভারের জন্য প্রয়োজনীয় পিয়ার গড়ে তোলার কাজ পুরোপুরি শেষ। জানা গেছে, মাসখানেক আগে ফ্লাইওভারের পিয়ারগুলোর ওপর কংক্রিটের রোডওয়ে ¯ø্যাব স্থাপনের কাজ শুরু হয়। গত রোববার ৯ ও ১০ নং পিয়ারের ওপর লঞ্চিং গার্ডারের কাজ করার সময় দুর্ঘটনা ঘটে। দুর্ঘটনার পর থেকেই বন্ধ রয়েছে ফ্লাইওভারটির নির্মাণকাজ।
এ প্রসঙ্গে ঢাকা বাস র্যাপিড ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক শফিকুল ইসলাম জানান, লঞ্চিং গার্ডার হলো এক ধরনের ক্রেন, যা দিয়ে কংক্রিটের রোডওয়ে র্য্যাব স্থাপন করা হয়। এ ক্রেনটি ছাড়া কাজটি করা সম্ভব নয়। লঞ্চিং গার্ডারটি দেখার জন্য ২১ মার্চ চীন থেকে একটি বিশেষজ্ঞ দল আসার কথা রয়েছে। চীনের বিশেষজ্ঞ দল এসে ঠিক করবে, লঞ্চিং গার্ডারটি দিয়ে কাজ করা যাবে কিনা। এ কারণে আপাতত বিমানবন্দর অংশে বিআরটি প্রকল্পের নির্মাণকাজ বন্ধ রয়েছে। এ কারণে প্রকল্পের সার্বিক কাজে কোনো ক্ষতি হচ্ছে না। রোববারের দুর্ঘটনায় আহত ছয় শ্রমিকের বর্তমান অবস্থা সম্পর্কে তিনি বলেন, আহত ছয়জনের মধ্যে চারজন এরই মধ্যে হাসপাতাল থেকে ছাড়পত্র পেয়েছেন। দুজন এখনো এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন, তবে তারা শঙ্কামুক্ত। তবে সেরে উঠতে আরো কিছুুদিন সময় লাগবে।
বিমানবন্দরে বিআরটি প্রকল্পের লঞ্চিং গার্ডার দুর্ঘটনার আগে আব্দুল্লাহপুরে একই প্রকল্পের একটি পিয়ার ক্যাপ ধসে পড়ে। দুটি ঘটনা তদন্তে সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের যুগ্ম সচিব আনিসুর রহমানকে আহ্বায়ক করে একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। এ কমিটি দুর্ঘটনার কারণ উদঘাটন, স্পেসিফিকেশনের মানদন্ড অনুযায়ী কাজ করা হচ্ছিল কিনা, গার্ডার লঞ্চিংয়ের ক্ষেত্রে যথাযথ যন্ত্রপাতি, দক্ষ জনবল, প্রযুক্তি ও কৌশল অবলম্বন বা অনুসরণ করা হয়েছিল কিনা, প্রকল্পের পক্ষ থেকে মনিটরিং বা সুপারভিশনের ঘাটতি ছিল কিনা, ঠিকাদার ও সংশ্লিষ্টদের গাফিলতি ছিল কিনা তা তদন্ত করে দেখবে। পাশাপাশি ভবিষ্যতে এ ধরনের দুর্ঘটনা এড়ানোর লক্ষ্যে সুপারিশ প্রণয়ন করবে এ কমিটি। সাত কর্মদিবসের মধ্যে এ কমিটির প্রতিবেদন জমা দেয়ার কথা রয়েছে।
ঢাকার যানজট নিরসনের লক্ষ্যে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে গাজীপুরের শিববাড়ী করিডোর পর্যন্ত গ্রেটার ঢাকা সাসটেইনেবল আরবান ট্রান্সপোর্ট প্রজেক্টটি (বিআরটি গাজীপুর-বিমানবন্দর) ২০১২ সালের ২০ নভেম্বরে একনেকে অনুমোদিত হয়। নির্মাণকাজ ২০১৬ সালে শেষ হওয়ার কথা ছিল। তবে কাজ শুরুই হয় ২০১৭ সালে। এর পর থেকে ঢিমেতালে চলছে নির্মাণকাজ। রাস্তার ওপর ফেলে রাখা নির্মাণসামগ্রী, সংকুচিত হয়ে যাওয়া রাস্তা আর নির্মাণযজ্ঞে শুরু থেকেই ভুগছেন গাজীপুর-বিমানবন্দর মহাসড়ক ব্যবহারকারীরা।
সরকারের তিনটি সংস্থা মিলে নির্মাণ করছে এ প্রকল্প। অ্যাট গ্রেড বা মাটির সমান্তরালে বিআরটি লেন নির্মাণ করছে সওজ অধিদপ্তর। ফ্লাইওভার, টঙ্গী সেতু আর উড়াল লেন নির্মাণ করছে বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষ। ড্রেনেজ ব্যবস্থার উন্নয়ন আর বাসের ডিপো নির্মাণ করছে এলজিইডি। দুই দফা বাড়িয়ে প্রকল্পটি বাস্তবায়নের মেয়াদ ঠিক করা হয়েছে ২০২২ সালের জুনে। তবে এখনো নির্মাণকাজের অগ্রগতি ৫০ শতাংশের কম। বিআরটি লেনের মধ্যে সাড়ে ১৫ কিলোমিটার হবে রাস্তার সমান্তরালে। এ অংশটি বাস্তবায়নকারী সংস্থা হিসেবে কাজ করছে সওজ অধিদপ্তর। ২০১৬ সালের ডিসেম্বরে চীনের গেঝুবা গ্রæপকে নির্মাণকাজে ঠিকাদার নিয়োগ করে সওজ অধিদপ্তর। অন্যদিকে ১০ লেনের টঙ্গী সেতু ও উত্তরা হাউজ বিল্ডিং থেকে টঙ্গীর চেরাগ আলী পর্যন্ত সাড়ে চার কিলোমিটার উড়ালসড়ক নির্মাণের দায়িত্বে রয়েছে সেতু বিভাগ। এ অংশটি নির্মাণে চীনা ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান জিয়াংসু প্রোভিন্সিয়াল ট্রান্সপোর্টেশন ইঞ্জিনিয়ারিং গ্রæপকে নিয়োগ দিয়েছে সেতু বিভাগ। এর বাইরে বাস ডিপো, ড্রেন, ফুটপাত ও বাজার এলাকার উন্নয়নকাজ করছে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর।
প্রকল্পের মাধ্যমে ২০ দশমিক ৫ কিলোমিটার দীর্ঘ পৃথক বাস লেন নির্মাণ করা হবে। এর মধ্যে ছয়টি উড়ালসড়ক হবে, যেগুলোর দৈর্ঘ্য ৪ দশমিক ৫ কিলোমিটার। একই প্রকল্পে টঙ্গী সেতুটি সংস্কার করে আট লেনে উন্নীত করা হবে। বিআরটি রুটটিতে সরবরাহ করা হবে ৫০টি শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত আর্টিকুলেটেড (জোড়া লাগানো) বাস। এসবের বাইরে গাজীপুরে একটি বাস ডিপো, উচ্চক্ষমতার ড্রেন, ছয়টি বাজার উন্নয়ন, ২০ কিলোমিটার ফুটপাত নির্মাণ করা হবে। বিআরটি লেনটি নির্মাণে খরচ হচ্ছে ৪ হাজার ২৬৮ কোটি টাকা।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।