পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
বাংলাদেশের আভ্যন্তরীণ বিষয়ে মতামত দেয়া হস্তক্ষেপের শামিল
কূটনৈতিক সংবাদদাতা : একাত্তরে মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচার বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়। এ নিয়ে পাকিস্তানের মন্তব্য করার কোনো সুযোগ নেই বলে পাকিস্তানকে জানিয়ে দিয়েছে বাংলাদেশ। গতকাল রবিবার দুপুরে পাকিস্তানের ভারপ্রাপ্ত হাইকমিশনার সামিনা মেহতাবকে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে তলব করে এ বার্তাই দিয়েছে বাংলাদেশ।
মীর কাসেম আলীর ফাঁসি কার্যকর হওয়ার পর পাকিস্তানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বিবৃতির পরিপ্রেক্ষিতে এই বার্তা দেয়া হয়েছে বলে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে। তলব পেয়ে বেলা পৌনে তিনটার দিকে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে আসেন তিনি।
গত শনিবার রাতে জামায়াতে ইসলামী নেতা মীর কাসেম আলীর ফাঁসির রায় কার্যকর করা হয়। এর পরই পাকিস্তানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে এ ঘটনায় গভীর শোক প্রকাশ করে মীর কাসেমের পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা জানায়। বিবৃতিতে পাকিস্তান দাবি করে, ১৯৭১ সালের ডিসেম্বরের পূর্বের অপরাধের জন্য মীর কাসেমের ফাঁসি হয়েছে। একই সঙ্গে ‘বিচার প্রক্রিয়াকে ত্রুটিপূর্ণ’ দাবি করেছে দেশটি।
এর আগেও একই ধরনের মন্তব্য করেছিল পাকিস্তান। অভ্যন্তরীণ বিষয়ে কোনো হস্তক্ষেপ না করতে পাকিস্তানকে বারবার বাংলাদেশের অনুরোধের পরও যুদ্ধাপরাধীদের মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচার নিয়ে দেশটি মীর কাসেমের রায় বাস্তবায়নের পর আবারও মন্তব্য করে। এরপরই পাকিস্তানের ভারপ্রাপ্ত হাইকমিশনার সামিনা মেহতাবকে তলব করা হয় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে।
পরে পাকিস্তানকে বার্তা দেয়ার ব্যাপারে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব কামরুল হাসান সাংবাদিকদের বলেন, সর্বোচ্চ আদালত মনে করেছে যে, ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের জনগণের বিরুদ্ধে, বাংলাদেশের গণহত্যায় তিনি যে অংশগ্রহণ করেছেন, এটা তাঁর (মীর কাসেমের) প্রাপ্য শাস্তি ছিল। এবং এ বিষয়ে পাকিস্তান সরকারের মতামত দেয়ার কোনো সুযোগ নেই। মীর কাসেম আলীর মৃত্যুদ- নিয়ে পাকিস্তান যে মতামত দিয়েছে, সেটি অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপের শামিল।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিবের কক্ষে এ সময় উপস্থিত ছিলেন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের দক্ষিণ এশিয়া অনু বিভাগের মহাপরিচালক মনোয়ার হোসেন।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক কর্মকর্তা বলেন, মীর কাসেম আলীর ফাঁসি নিয়ে পাকিস্তানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় যে বিবৃতি দিয়েছে, এর প্রতিবাদে বাংলাদেশের পক্ষ থেকে একটি কূটনৈতিক পত্র পাকিস্তানের ভারপ্রাপ্ত হাইকমিশনারের কাছে তুলে দেয়া হয়েছে।
এদিকে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক দীপু মণি বলেছেন, পাকিস্তান যুদ্ধাপরাধীদের রায়ে প্রতিক্রিয়া দেখাবে এটা একটা স্বাভাবিক বিষয়। এর আগেও তারা যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের রায় কার্যকরের সময় প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছিল। এ ধরনের প্রতিক্রিয়া ন্যক্কারজনক। গতকাল দুপুরে আওয়ামী লীগ সভাপতির রাজনৈতিক কার্যালয়ে গঠনতন্ত্র উপ-কমিটির বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন।
জানা গেছে, পাকিস্তানকে দেয়া পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কূটনৈতিক পত্রে বলা হয়, মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধ ও গণহত্যার অভিযোগে অভিযুক্ত বাংলাদেশীদের পক্ষে পাকিস্তান বার বার কথা বলছে। পাকিস্তান আরও একবার স্বীকার করল ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে সংঘটিত নির্মম অপরাধে তারা সরাসরি জড়িত ছিল ও সে সব কুকর্মের দোসর ছিল। এটা করার মধ্য দিয়ে পাকিস্তান অবিরত ৪৫ বছর আগে সংঘটিত অপরাধের বিচার নিশ্চিত করা এবং অপরাধীদের পার না পাওয়ার সংস্কৃতি ভাঙার বাংলাদেশের প্রচেষ্টার বিরোধিতা করছে।
সেখানে আরও বলা হয়, যুদ্ধাপরাধীদের বিচার নিয়ে পাকিস্তানের বলা ‘রাজনৈতিক ফায়দা অর্জনের অভিযোগ’-এর বিষয়টি বাংলাদেশ সরকার কড়াভাবে প্রত্যাখ্যান করছে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।