পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
অর্থনৈতিক রিপোর্টার : মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে শেষ পর্যন্ত মৃত্যুদ- কার্যকর হলেও জামায়াত নেতা মীর কাসেম আলীর বিরুদ্ধে বিদেশে ২৫ মিলিয়ন ডলার (প্রায় ২৫০ কোটি টাকা) পাচারের অভিযোগের সুরাহা হলো না। যুদ্ধাপরাধের বিচার প্রক্রিয়া ব্যাহত করতে মার্কিন লবিস্ট ফার্মের কাছে ২৫ মিলিয়ন ডলার পাচার করেন মীর কাসেমÑএমন অভিযোগের প্রেক্ষিতে দুদক ৫ বছর আগে অনুসন্ধান শুরু করলেও কর্মকর্তা বদল ছাড়া দৃশ্যত কোনো অগ্রগতি হয়নি।
কেন্দ্রীয় ব্যাংক ও দুদক সূত্রে জানা গেছে, ওই অর্থ পাচারের প্রয়োজনীয় তথ্য পেতে যুক্তরাষ্ট্রে ২০১২ সালের ৩ অক্টোবর অ্যাটর্নি জেনারেলের মাধ্যমে মিউচ্যুয়াল লিগ্যাল অ্যাসিসট্যান্স রিকোয়েস্ট (এমএলএআর) পাঠায় দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। তথ্য পেতে ৫ বছরে প্রতিষ্ঠানটির পক্ষ থেকে এ পর্যন্ত ৫ বার তাগিদপত্র দেওয়া হয়েছে। এরপরও মেলেনি কাক্সিক্ষত এমএলএআরের জবাব। শুধু ২০১৬ সালেই তিনবার তাগিদ দিয়েছে প্রতিষ্ঠানটি, কিন্তু কাজের কাজ কিছুই হয়নি।
এ বিষয়ে নাম প্রকাশ না করার শর্তে দুদকের একজন কর্মকর্তা ইনকিলাবকে জানান, ২০১২ সালে যুক্তরাষ্ট্রে অ্যাটর্নি জেনারেলের মাধ্যমে এমএলএআর পাঠানো হয়। কিন্তু অর্থ পাচারসংক্রান্ত কোনো তথ্য এখনো দুদক পায়নি। শুধু তাই নয়, অর্থ পাচারসংক্রান্ত তথ্য পেতে ২০১৩ সালের ২৪ মার্চ, ২০১৪ সালের ১৭ নভেম্বর, ২০১৬ সালের ১৩ এপ্রিল ১২ মে ও সর্বশেষ ৮ জুন তাগিদপত্র দেওয়া হয়েছে। এতবার তাগিদপত্র দেওয়ার পরও অর্থ পাচারসংক্রান্ত এমএলএআরের উত্তর মেলেনি। কোনো রেকর্ডপত্র পাওয়া যায়নি বলে অনুসন্ধানে অগ্রগতি হচ্ছে না।
একাত্তরের মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচার প্রক্রিয়া ব্যাহত করতে প্রায় আড়াইশ কোটি টাকা (২৫ মিলিয়ন ডলার) চুক্তিতে মার্কিন লবিস্ট ফার্ম ক্যাসিডি অ্যান্ড অ্যাসোসিয়েটসকে নিযুক্ত করার অভিযোগ রয়েছে মীর কাসেম আলীর বিরুদ্ধে। আইন মন্ত্রণালয় থেকে এ অভিযোগসংক্রান্ত নথিপত্র দুদকে পাঠানো হলে ২০১১ সালের শেষের দিকে অনুসন্ধানের সিদ্ধান্ত নেয় কমিশন। এজন্য দুদকের উপপরিচালক নূর হোসেন খানকে অনুসন্ধানী কর্মকর্তা হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়েছিল। পরবর্তীতে নূর হোসেন খানের পরিবর্তে দায়িত্ব দেওয়া হয় আরেক উপপরিচালক ফরিদ আহমেদ পাটোয়ারীকে। তিনি দায়িত্ব নিয়ে এমএলএআর পাঠানোর আবেদন করলে কমিশন তা অনুমোদন করে।
জামায়াত নেতা মীর কাসেম আলীর বিরুদ্ধে আনা এই অভিযোগে সিটি ব্যাংক এনএ’র মাধ্যমে ওই অর্থ পাচার করা হয়েছে বলে উল্লেখ করা হয়। কিন্তু এ অভিযোগ সম্পর্কে দুদক থেকে বাংলাদেশ ব্যাংকের কাছে জানতে চাওয়া হলে, বাংলাদেশ ব্যাংক সার্চ করে এ সম্পর্কে কোনো তথ্য পায়নি। ওই পরিমাণ টাকা সৌদি আরব অথবা অন্য কোনো দেশ থেকে মীর কাসেমের লবিস্ট ফার্মে পাঠানো হতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
দুদকে আসা অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, ২০১০ সালের ১০ মে ৬ মাসের জন্য যুক্তরাষ্ট্রের কনসালটেন্সি ফার্ম কেসিডি অ্যান্ড অ্যাসোসিয়েটসের সঙ্গে চুক্তি করেন মীর কাসেম আলী। পরে সিটি ব্যাংক এনএ’র মাধ্যমে ইলেক্ট্রনিক মানি ট্রান্সফার করে চুক্তির অর্থ কেসিডি অ্যান্ড অ্যাসোসিয়েটসের হিসাবে, যার নম্বর সিএমজিআরপি.আইএনসি ৩০৭১৭২৪৮ (সুইফ্ট কোড : সিটি ইউএস ৩৩)। এই প্রতিষ্ঠানের অন্যতম উদ্যোক্তা হচ্ছেন সাবেক মার্কিন কংগ্রেসম্যান মার্টি রুশো। তিনি কেসিডি অ্যান্ড অ্যাসোসিয়েটসের প্রধান নির্বাহী।
আইন মন্ত্রণালয়ের অনুসন্ধানে পাওয়া নথিতে উল্লেখ আছে, প্রতিষ্ঠানটির ঠিকানা ৭০০/১৩ স্ট্রিট, ১১ ডব্লিউ, সুইট-৪০০ ওয়াশিংটন ডিসি। যুক্তরাষ্ট্র ও বাংলাদেশ সরকারের ওপর চাপ প্রয়োগ ও লবিং করাসহ মীর কাসেম আলীর উদ্দেশ্য সফলের জন্য এ চুক্তি হচ্ছে বলে চুক্তিপত্রে উল্লেখ করা হয়। এ চুক্তিতে মীর কাসেম আলী এবং লবিস্ট ফার্মের পক্ষে জেনারেল কাউন্সিল জে ক্যামেরুজ স্বাক্ষর করেন। চুক্তি অনুযায়ী প্রতিষ্ঠানটি ২০১০ সালের ৬ অক্টোবর থেকে ৫ এপ্রিল, ২০১১ পর্যন্ত এ ৬ মাস মীর কাসেম আলীর উদ্দেশ্য সফল করতে যুক্তরাষ্ট্র ও বাংলাদেশ সরকারের উচ্চপর্যায়ে লবিং করার কথা। প্রয়োজনে ৬ মাসের জন্য চুক্তির মেয়াদ আরো ২৫ মিলিয়ন ডলার দিয়ে বাড়ানো যাবে বলে চুক্তিপত্রে উল্লেখ করা হয়। যুক্তরাষ্ট্রের কলাম্বিয়া অঙ্গরাজ্যের আইন অনুযায়ী ফার্মটির সঙ্গে চুক্তি সম্পন্ন হয়। চুক্তিনামায় ফার্মটির পক্ষে স্বাক্ষর করেন অ্যান্ড্ররু জে ক্যামেরুজ এবং লবিস্ট নিয়োগকারীর পক্ষে মীর কাসেম আলী। আর এসবের জন্য এ প্রতিষ্ঠানকে মীর কাসেম আলী ১৮২ কোটি টাকার রেমিট্যান্স স্লিপ পাঠায় বলে অভিযোগে উল্লেখ করা হয়েছে।
এ বিষয়ে দুদক সচিব আবু মো. মোস্তফা কামাল বলেন, এ বিষয়টি সম্পর্কে আমি অবগত নই, তাই কোনো বক্তব্য দেওয়া যাবে না।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের মুখপাত্র শুভঙ্কর সাহা বলেন, কেন্দ্রীয় ব্যাংক প্রাথমিক অনুসন্ধানে তথ্য না পেলেও এখন আবার নতুন করে তদন্ত চলছে। তদন্তাধীন বিষয়ে মতামত দেওয়া যাবে না।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।