পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
হোসাইন আহমদ হেলাল : স্বাস্থ্য শিক্ষা ব্যুরোতে অনিয়ম আর দুর্নীতির মহোৎসব চলছে। কেউ মানছে না আইন, পদে-পদে চলছে অবহেলা, অদক্ষতা আর দুর্নীতি। মূল্যায়ন নেই দক্ষ কর্মকর্তা-কর্মচারীদের। কেউ মানছে না কারোর আদেশ-নির্দেশ। বিজ্ঞ আদালত, মন্ত্রী, এমপিদের আদেশ, সুপারিশেরও কোন তোয়াক্কা করা হচ্ছে না। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অধীন স্বাস্থ্য শিক্ষা ব্যুরো একটি জনগুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠান হলেও গত কয়েক বছর এটি কিছু সংঘবদ্ধ দুর্নীতিপরায়ণ কর্মকর্তার ইচ্ছায় চলছে বলে অভিযোগ উঠেছে। এসব কর্মকর্তা বিগত জোট সরকারের সমর্থিত ব্যক্তি হয়েও এখন বর্তমান সরকারের আস্থাভাজন বলে সুকৌশলে বিধিবহির্ভূত কার্যক্রম চালিয়ে নানা অয়িনম ও দুর্নীতি করেই চলছে। সরকারী আইন ও বিজ্ঞআদালতের নির্দেশ উপেক্ষা করে যোগ্যতা না থাকা সত্ত্বেও নকল কাগজপত্র তৈরী করে পদোন্নতি নেয়ার মতো মহা অনিয়মও রয়েছে। অনেকে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নাম ভাঙ্গিয়ে কোটি কোটি টাকা লুটে খাচ্ছে। আর এই সংঘবদ্ধ চক্রের নেতৃত্ব দিচ্ছেন স্বাস্থ্য শিক্ষা ব্যুরোর উপ-প্রধান (চলতি দায়িত্ব) মোঃ বজলুর রহমান অনেকে এমন অভিযোগ করছেন। এমনকি তার বিরুদ্ধে সাবেক স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী নিজেও লিখিত অভিযোগ করেছেন। গত বছর ৬ জানুয়ারী সাবেক স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহা-পরিচালক বরাবরে (ডিও লেটার নং স্বাস্থ্য/ বিবিধ/ ২০১৫/ ২৪৩) এক ডিও লেটারে উল্লেখ করেন, মোঃ বজলুর রহমান ময়মনসিংহ থাকার সময়ে বিএনপি জোট সরকারের সক্রিয় সমর্থক, সিভিল সার্জন অফিসে বিভিন্ন অনিয়মের সহিত জড়িত ছিলেন। তার অনিয়মের জন্য পঞ্চগড়ে শাস্তিমূলক বদলী করা হয়েছিল। উক্ত কর্মকর্তা কিভাবে ঢাকায় উপ-প্রধান (চলতি দায়িত্ব) পদে বদলী হয়ে যোগদান করেছেন তা বোধগম্য নহে। জরুরী ভিত্তিতে মোঃ বজলুর রহমানকে পঞ্চগড়ের শূন্যপদে বদলী করার জন্য সুপারিশ করা হয়। এ ছাড়া স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সচিব বরাবরে একটি আবেদনে উল্লেখ করা হয়, মোঃ বজলুর রহমান ১৯৮৮ সালে ৭ মার্চ মাদারীপুর জেলার স্বাস্থ্য সহকারী (মাঠকর্মী) হিসেবে চাকরিতে যোগদান করেন। পরবর্তীতে নিয়োগ বিধি মোতাবেক সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে মাদারীপুর সদর হাসপাতালে হেলথ্ এডুকেটর পদে নিজ বেতনে পদায়ন লাভ করেন। কোন স্বাস্থ্য সহকারী হেলথ্ এডুকেটর পদে নিয়োগ লাভের কোন বিধান নেই। এ পদে নিয়মিত হওয়ার জন্য সংশ্লিষ্ট জেলার সিভিল সার্জনের যোগসাজসে ১৯৯১ সালের ৭ জুন পত্রিকায় বিজ্ঞাপন দিয়ে নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পন্ন করেন। এ প্রক্রিয়াটিও ছিল অবৈধ ও বিধিবহির্ভূত। গত ৩১/৬/৯১ ইং তারিখে মাদারীপুরের সিভিল সার্জন মোঃ বজলুর রহমানকে হেলথ্ এডুকেটর হিসেবে ৮০০-১৬৩০ টাকা বেতন স্কেলে নিয়োগ প্রদান করেন। ১৯৯১ সালের ১ জুলাই তিনি যোগদান করেন। সরকারী নিয়োগ বিধি অনুযায়ী মোঃ বজলুর রহমানের নিয়োগ সম্পূর্ণ অবৈধ। ঐ অবৈধ নিয়োগ প্রাপ্তির পরও এ কর্মকর্তাকে আর পিছন ফিরে তাকাতে হয়নি। অবৈধ নিয়োগের পর দু’বছরের মাথায় ১৯৯৩ সালের ৪ ডিসেম্বর ১ম শ্রেণীর পদ জুনিয়র স্বাস্থ্য শিক্ষা অফিসার হিসেবে একই কর্মস্থলে চলিত দায়িত্বে পদায়ন লাভ করেন। স্বাস্থ্য শিক্ষা ব্যুরোর নিয়োগ বিধিতে ১০ বছর হেলথ্ এডুকেটর পদে চাকরি করার পর জুনিয়র স্বাস্থ্য শিক্ষা অফিসার পদে পদায়নের বিধান রয়েছে। অথচ বজলুর রহমানের ক্ষেত্রে তা পালন করা হয়নি। গত ২০০০ সালের ১৭ সেপ্টেম্বর এ কর্মকর্তা ময়মনসিংহ সিভিল সার্জন অফিসে জুনিয়র স্বাস্থ্য শিক্ষা কর্মকর্তা (চলতি দায়িত্ব) পদে বদলী হন। এরপর ২০১৩ সালের ৩১ অক্টোবর একই কর্মস্থলে সিনিয়র স্বাস্থ্য শিক্ষা অফিসার হিসেবে পদোন্নতি পান। দীর্ঘ ১৩ বছর ময়মনসিংহে চাকরির সুবাধে চারদলীয় জোট সরকারের আস্থাভাজন হিসেবে সক্রিয় ভূমিকা রাখেন। স্বাস্থ্য বিভাগের বিভিন্ন কর্মকর্তা-কর্মচারীদের প্রলোভনের মাধ্যমে ডেসটিনির সদস্য করে তিনি কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন। এছাড়াও ময়মনসিংহে চাকরিকালীন স্বাস্থ্য কর্মীদের অসংখ্য ট্রেনিং বাস্তবায়ন হয়েছে এমনটি দেখিয়েছেন। বাস্তবে এর অস্তিত্ব নেই বলে অভিযোগ রয়েছে।
স্বাস্থ্যকর্মীদের স্বনামে-বেনামে ডান-বাম হাতের স্বাক্ষরিত মাস্টার রোলে উল্লেখ করে কয়েক কোটি টাকা আত্মসাৎ করার অভিযোগে সাবেক স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী ডাঃ ক্যাপ্টেন (অবঃ) মুজিবুর রহমান ফকির তাকে পঞ্চগড়ে শাস্তিমূলক বদলী করার নির্দেশ দেন। পরে বজলুর রহমান কিছু সুবিধাভোগী ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা ম্যানেজ করে পঞ্চপড়ের বদলীর আদেশ বাতিল করে কিশোরগঞ্জ জেলায় যোগদান করেন। সাবেক স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালকের বাড়ী কিশোরগঞ্জ হওয়ায় মহাপরিচালকের ভাতিজার সাথে তিনি দ্রুত সখ্যতা গড়ে তুলেন। এক পর্যায়ে এ কর্মকর্তা স্বাস্থ্য মহাপরিচালকের পরিবারের সাথেও ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক গড়ে তোলেন। এ সুবাধে ২০১৪ সালের ২৪ জানুয়ারি মোঃ বজলুর রহমান স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের স্বাস্থ্য শিক্ষা ব্যুরোর সহকারী প্রধান (প্রশাসন ও প্রশিক্ষণ) পদে যোগদান করেন। সাবেক মহা-পরিচালক সাবেক স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রীর ডিও লেটারকে উপেক্ষা করে চলতি বছর ১৮ জানুয়ারি স্বাস্থ্য শিক্ষা ব্যুরোর সিনিয়র তালিকায় ১০ জন কর্মকর্তাকে ডিঙ্গিয়ে ১১নং ক্রমিকে থাকা মোঃ বজলুর রহমানকে সহকারী প্রধান (প্রশাসন ও প্রশিক্ষণ) হতে উপ-প্রধান পদে (চলতি দায়িত্ব) পদোন্নতির জন্য স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে প্রস্তাব প্রেরণ করেন। গত ১১ এপ্রিল স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় বজলুর রহমানকে উপ-প্রধান পদে (চলতি দায়িত্ব) পদোন্নতি প্রদানের আদেশ দিয়েছেন। এতে পদোন্নতি বঞ্চিত সিনিয়র ৮ জন কর্মকর্তা বিষয়টি জানতে পেরে গত ১২ এপ্রিল স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়কে লিগ্যাল নোটিশ পাঠিয়েছেন। এ বিষয়ে মন্ত্রণালয় কোন আইনগত ব্যবস্থা না নেয়ায় ঐ সিনিয়র ৮ কর্মকর্তা বাদী হয়ে সুপ্রীম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগে রীট পিটিশন নং- ৪৮৮৪/২০১৬ দায়ের করলে বিজ্ঞআদালত রীট আবেদনটি প্রশাসনিক ট্রাইব্যুনালে দায়ের করার নির্দেশ প্রদানে করেন। কোর্টের নির্দেশমতে বিক্ষুব্ধ সিনিয়র ৮ কর্মকর্তা সিনিয়রিটির ভিত্তিতে পদোন্নতি চলতি দায়িত্বের আদেশ বাতিল চেয়ে গত ২৯ জুন প্রশাসনিক ট্রাইব্যুনাল-১ এর সিনিয়র জজ এর আদালতে মামলা নং ১০৯/২০১৬ দায়ের করেন। বিজ্ঞ আদালত স্বাস্থ্য মন্ত্রণায়কে ৪ সপ্তাহের রোল দিয়ে কেন ১১ এপ্রিলের আদেশ মামলা নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত স্থগিত করা হবে না মর্মে আদেশ প্রদান করেন। গত ২২ আগস্ট মামলাটি বিজ্ঞ আদালতে শুনানি শেষে রায়ের জন্য অপেক্ষমাণ রেখেছেন। এ ব্যাপারে স্বাস্থ্য শিক্ষা ব্যুরোর ডেপুটি চিফ বজলুর রহমানের মুঠোফোনে কথা বলতে চাইলে তিনি কোন কথা বলবেন না বলে জানান।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।