পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
দাড়ি থাকার কারণে বাংলাদেশের জনপ্রিয় রিটেইল ব্র্যান্ড আড়ংয়ে চাকরি পাওয়া থেকে প্রত্যাখ্যাত হয়েছেন, এক যুবক এমন অভিযোগ তোলার পর সিলেটে আড়ংয়ের বিক্রয়কেন্দ্রের সামনে বিক্ষোভ দেখিয়েছেন স্থানীয় একদল বাসিন্দা। পরে আড়ং এক বিবৃতি দিয়ে ও যুবকের সাথে ঘটে যাওয়া ঘটনাকে দুঃখজনক বলে উল্লেখ করেছে।
সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া আট মিনিটের একটি ভিডিওতে দেখা যায়, এক যুবক নিজেকে ইমরান হোসেন ইমন নামে পরিচয় দিয়ে বলছেন, তিনি আড়ংয়ে বিক্রয়কর্মীর একটি নিয়োগ পরীক্ষায় অংশ নিয়েছিলেন। মুখে মাস্ক পরেই তিনি সাক্ষাৎকার দিয়েছিলেন। সাক্ষাৎকারগ্রহীতারা তার সাথে সন্তুষ্ট বলে তার মনে হয়েছিল। কিন্তু এক পর্যায়ে সাক্ষাৎকারগ্রহীতাদের চাহিদা মোতাবেক তিনি মাস্ক খোলেন এবং তার মুখভর্তি দাড়ি প্রকাশিত হয়ে পড়লে সাক্ষাৎকারগ্রহীতারা তাকে বলেন, তাদের নীতিমালা অনুযায়ী তারা দাড়িওয়ালা ব্যক্তিদের বিক্রয়কর্মী হিসেবে নিয়োগ দিতে পারেন না।
‘তারা বললো আপনি যদি ক্লিন শেভ করতে পারেন তাহলে আপনার জবটা আমরা এখানে কনফার্ম করতে পারবো’, সাক্ষাৎকারগ্রহীতাদের বক্তব্যের বরাত দিয়ে ভিডিওটিতে বলেন এ যুবক। ভিডিওটি অবশ্য বিবিসির তরফ থেকে নিরপেক্ষভাবে যাচাই করা যায়নি। কিন্তু বহু মানুষ সোমবার দিনভর এটিকে ফেসবুকে শেয়ার করেছেন এবং তারা ‘বয়কট আড়ং’ হ্যাশট্যাগ ব্যাবহার করছেন। ভিডিওটি ফেসবুকে ভাইরাল হয়ে যাওয়ার পর সিলেটে আড়ংয়ের বিক্রয়কেন্দ্রের সামনে বিক্ষোভ দেখিয়েছে সিলেটের সচেতন আলেম সমাজের ব্যানারে একদল স্থানীয় অধিবাসী।
আড়ংয়ের বিবৃতি : এদিকে আড়ংয়ের পক্ষ থেকে যুবকের সাথে ঘটে যাওয়া ওই অভিজ্ঞতাকে ‘দুঃখজনক’ উল্লেখ করে বিবৃতি দেয়া হয়েছে। বাংলা ও ইংরেজি - দুই ভাষায় দেয়া বিবৃতি দুটি দেয়া হয়েছে ব্র্যাক-আড়ংয়ের চিফ অপারেটিং অফিসার মোহাম্মদ আশরাফুল আলমের নামে। বাংলা বিবৃতিতে লেখা হয়, ‘এটি নিঃসন্দেহে আমাদের মূল্যবোধের পরিপন্থী’।
‘আড়ং বয়স, বর্ণ, ধর্ম, লিঙ্গ, অক্ষমতা বা জাতিগত উৎস নির্বিশেষে সকলের জন্য মানবিক মর্যাদা এবং অন্তর্ভুক্তির অধিকারগুলো সমুন্নত রাখে। আমাদের নিয়োগের সিদ্ধান্তে ধর্মীয় বিশ্বাস ও পালনকে কখনই বিবেচনা করা হয় না’।
বিবৃতিটি আরো বলছে, ‘আমাদের ভবিষ্যতের ইন্টারভিউ বোর্ডগুলোর পরিচালনায় আমাদের মূল মূল্যবোধগুলোর প্রতিফল নিশ্চিত করতে আমরা নিবিড়ভাবে কাজ করবো’। তবে ইংরেজি ও বাংলা ভাষার বিবৃতি দুটির মধ্যে কিছু তথ্যের ফারাক দেখা গেছে। ইংরেজি বিবৃতি বলা হয়, তারা ওই চাকুরিপ্রার্থী যুবকের সঙ্গে যোগাযোগ করে তার কাছে দুঃখ প্রকাশ করেছেন। কিন্তু বাংলা বিবৃতিটিতে এর কোনো উল্লেখ ছিল না। সূত্র : বিবিসি বাংলা।
এদিকে সিলেট ব্যুারো জানায়, আড়ংয়ের বক্তব্য প্রত্যাখান করে সচেতন আলেম সমাজের মুখপাত্র জামেয়া ইসলামীয়া কাজির বাজার মাদরাসার মুহাদ্দিস ও খ্যাতিমান ইসলামিক স্কলার মাওলানা শাহ মমশাদ আহমেদ বলেন, আড়ং কর্তৃপক্ষ সুন্নাতে রাসূল (স.) দাড়ির ব্যাপারে তাদের ন্যাক্কারজনক ঘটনার যেমনি স্বীকার করেনি, ক্ষমা প্রার্থনা তো দূরের কথা দুঃখ প্রকাশ করা হয়নি, শুধুমাত্র ভবিষ্যতে এ ব্যাপারে সচেতন থাকার কথা বলা হয়েছে। জনমনের ক্ষোভ প্রশমনে আড়ং কর্তৃপক্ষের শব্দের মারপ্যাঁচে চতুরতা অবলম্বন ধর্মপ্রাণ জনতার ক্ষোভ আরও বাড়িয়ে দিয়েছে। এ ব্যাপারে সুস্পষ্ট ৩টি দাবি জানিয়েছেন তারা। এর মধ্যে রয়েছে, সুন্নাতে রাসূল (স.)-কে হেয় করায় সুস্পষ্ট ক্ষমা প্রার্থনা করতে হবে, সুন্নাহপ্রেমি প্রিয়ভাই ইমরান হুসেন ইমনকে স্ব-সম্মানে চাকরি দিতে হবে ও চাকরি নিয়োগের ক্ষেত্রে ধর্মীয় বৈষম্য সৃষ্টি আমাদের সংবিধানের নীতিমালার লঙ্ঘন, সরকারও এর দায় এড়াতে পারে না। আড়ংসহ প্রতি সেক্টরে ধর্মীয় অধিকার নিশ্চিতকরণে সরকারকে যথাযথ ভ‚মিকা পালন করতে হবে। এছাড়া মাওলানা শাহ মমশাদ আরো বলেন, এসব দাবি বাস্তবায়নে প্রয়োজনীয় কর্মসূচি অব্যাহত রাখবেন তারা। এছাড়াও প্রতিবাদ অব্যাহত রাখতে ফেইসবুকে আড়ং বয়কটের ঘোষণা, জুমার খুতবা ও মাহফিলে সুন্নাতে রাসূলের ইজ্জত রক্ষার গুরুত্ব আলোচনাসহ জনসাধারণকে সচেতন করতে শান্তিপূর্ন বিক্ষোভের আয়োজন করা হবে সচেতন আলেম সমাজের ব্যানারে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।