Inqilab Logo

বুধবার, ২৯ মে ২০২৪, ১৫ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১, ২০ জিলক্বদ ১৪৪৫ হিজরী

তদন্ত কর্মকর্তাকে নথিসহ তলব

শ্রমিক নেতা নূরুল ইসলাম হত্যা মামলা

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ১৬ মার্চ, ২০২১, ১২:০০ এএম

শ্রমিক নেতা নূরুল ইসলাম হত্যা মামলায় পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)র তদন্ত কর্মকর্তাকে তলব করেছেন হাইকোর্ট। সেই সঙ্গে আগামী ১৫ এপ্রিল মামলার কেস ডকেট (সিডি)সহ তাকে হাজির হতে বলা হয়েছে। মামলার সন্দেহভাজন আসামি আবুল কালাম ওরফে আবুকে কেন জামিন দেয়া হবে না -এই মর্মে রুল জারি করা হয়েছে। জামিন আবেদনের শুনানি শেষে গতকাল সোমবার বিচারপতি এম. ইনায়েতুর রহিম এবং বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমানের ডিভিশন বেঞ্চ এ আদেশ দেন। জামিনের পক্ষে শুনানি করেন অ্যাডভোকেট খুরশীদ আলম খান। সরকারের পক্ষে জামিনের বিরোধিতা করেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল সারওয়ার হোসেন বাপ্পি।

প্রসঙ্গত: ২০১৯ সালের ১০ জুন থেকে রাজশাহীর পুঠিয়ার শ্রমিক নেতা নূরুল ইসলাম নিখোঁজ হন। পরদিন সকালে পুঠিয়ার একটি ইটভাটা থেকে তার লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। এ ঘটনায় ওইদিন তার মেয়ে নিগার সুলতানা ৮ জনকে আসামি করে মামলা দেন। এজাহারে শ্রমিক ইউনিয়নের নির্বাচনে পুঠিয়ার ওসির অবৈধ হস্তক্ষেপের বিষয়টি উল্লেখ ছিল। এ কারণে ওসি সাকিল উদ্দীন আহমেদ এজাহারটি রেকর্ড না করে নিগার সুলতানাকে তা সংশোধন করতে বলেন। নিগার সুলতানা ওসির বিষয়টি বাদ দিয়ে পুনরায় থানায় এজাহার দাখিল করেন। তখন এজাহারটি গ্রহণ করেন। কিছু সাদা কাগজে নিগার সুলতানার স্বাক্ষর নিয়ে তাকে চলে যেতে বলেন। পরবর্তীতে নিগার সুলতানা পুঠিয়া থানা থেকে এজাহার ও মামলার প্রাথমিক তথ্য বিবরণীর কপি সংগ্রহ করে দেখেন, প্রাথমিক তথ্য বিবরণীতে আসামিদের নাম-ঠিকানা লেখার কলামে ‘অজ্ঞাতনামা’ লেখা রয়েছে। এছাড়া তার উল্লেখ করা ৮ আসামির পরিবর্তে সেখানে ৬ জনের নাম আছে। অথচ তিনি পূর্ণাঙ্গ নাম-ঠিকানাসহ ৮ জনকে আসামি করেছিলেন। নিগার সুলতানা এই বিতর্কিত এজাহারের বিরুদ্ধে হাইকোর্টে রিট করেন।
২০১৯ সালের ২২ জুলাই একটি জাতীয় দৈনিকে ‘এজাহার বদলে দিলেন ওসি’ শীর্ষক প্রতিবেদনসহ বিভিন্ন জাতীয় ও আঞ্চলিক দৈনিকের প্রতিবেদন যুক্ত করে এই রিট করা হয়। রিটের পর একই বছর ১৬ সেপ্টেম্বর ওসি সাকিল উদ্দিন আহমেদের এজাহার বদলে দেয়ার ঘটনায় বিচারিক তদন্তের নির্দেশ দেন হাইকোর্ট। সেই সঙ্গে রুলও জারি করেন।
এ আদেশের পর রাজশাহীর চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ঘটনা তদন্ত করে হাইকোর্টে প্রতিবেদন দেন। প্রতিবেদনে এজাহার বদলে দেয়ার ঘটনায় ওসি সাকিল উদ্দিনসহ ৫ পুলিশ কর্মকর্তা দায় এড়াতে পারে না বলে উল্লেখ করা হয়। পরে ওই রিটের ওপর আদেশ দেন আদালত।
রায়ে আদালত আশা প্রকাশ করে বলেন, পিবিআই প্রধান ডিআইজি বনজ কুমার মজুমদার তদন্ত তদারকিতে বিশেষ ভূমিকা রাখবেন। বর্তমান তদন্তকারী কর্মকর্তা/সংস্থাকে অবিলম্বে কেস ডকেট পিবিআই’র কাছে হস্তান্তরের নির্দেশ দেয়া হলো। পিবিআইকে তদন্তকালে মূল এজাহারের বর্ণনা, রাজশাহীর চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটের অনুসন্ধান রিপোর্ট ও অনুসন্ধান কাজে সাক্ষীদের সাক্ষ্য বিবেচনায় গ্রহণের জন্য নির্দেশ দেয়া হলো। রায় অনুসারে, সম্প্রতি পিবিআই তদন্ত কার্যক্রম শুরু করে। এরইমধ্যে ওই মামলার সন্দেহভাজন আসামি আবুল কালাম ওরফে আবুকে গ্রেফতার করা হয়। গত ২৫ জানুয়ারি বিচারিক আদালতে আবু জামিন আবেদন করলে তা নামঞ্জুর হয়। আদেশের বিরুদ্ধে তিনি আপিল করে হাইকোর্টে আবারও জামিন আবেদন করেন। শুনানি শেষে আদালত উপরোক্ত আদেশ দেন।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: নথিসহ-তলব
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ