Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

বর্তমান ইসির ওপর মানুষের কোনো আস্থা নেই : সুজন

চসিক নির্বাচন ও ইভিএমের বিশ্বাসযোগ্যতা প্রশ্নবিদ্ধ

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ১৬ মার্চ, ২০২১, ১২:০০ এএম

চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন নির্বাচনের মাধ্যমে নির্বাচন কমিশন ও ইলেক্ট্রনিক ভোটিং মেশিনের (ইভিএম) বিশ্বাসযোগ্যতা আরো বেশি প্রশ্নবিদ্ধ হয়েছে। ওই নির্বাচনে বিজয়ীদের তথ্য বিশ্লেষণ ও নির্বাচন মূল্যায়ন বিষয়ে সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন) আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে প্রতিবেদন তুলে ধরা হয়। লিখিত বিশ্লেষণ উপস্থাপন করেন সংগঠনটির কেন্দ্রীয় সমন্বয়কারী দিলীপ কুমার সরকার। নির্বাচন কমিশন তার দায়িত্ব পালনে চরমভাবে ব্যর্থ হয়েছে। এই কমিশনের ওপর মানুষের কোনো আস্থা নেই।

গতকাল এক সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে এ বিশ্লেষণ উপস্থাপন করা হয়েছে। এতে বলা হয়, নির্বাচন কমিশনের ওপর কারো কোনো আস্থা নেই। এটি এখন প্রতিষ্ঠিত। নির্বাচন কমিশন শুধু দায়িত্ব পালনে ব্যর্থ হয়েছে, তা নয়, এই কমিশন দুর্নীতিতেও যুক্ত হয়েছে। ভোটের দিন বেশকিছু ভোটকেন্দ্রে সংঘর্ষের ঘটনা এবং একজনের প্রাণহানি ঘটনা, বিএনপির পোলিং এজেন্টদের ভোটকেন্দ্রে ঢুকতে না দেয়া, পোলিং এজেন্টদের ভোটকেন্দ্র থেকে বের করে দেয়া, সরকারি দল কর্তৃক ভোটকেন্দ্রের প্রবেশপথসহ আশেপাশে মহড়া দেয়া। সুতরাং এই কমিশন দিয়ে কিছু হবে না। ইভিএম হোক আর যাই হোক, মানুষ যদি ভোট দিতে না পারেন, অন্য একজন বুথে অবস্থান নিয়ে বোতাম টিপে দেন, তাহলে কোনো কিছু করে লাভ নেই। বুথে গিয়ে ভোট দেয়ার অধিকার এবং প্রার্থীদের এজেন্টদের উপস্থিতি নিশ্চিত করতে হবে।

গত ২৭ জানুয়ারি এ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। এতে মেয়র পদে জয়ী হয়েছেন চট্টগ্রাম নগর আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মো. রেজাউল করিম চৌধুরী। এ ছাড়া ৪১ সাধারণ ও ১৪ সংরক্ষিত ওয়ার্ড কাউন্সিলর পদের সবগুলোতে আওয়ামী লীগের প্রার্থীরা জয়ী হন। বিএনপি-জামায়াতের কেউ এবারের নির্বাচনে জয়ী হননি। সংবাদ সম্মেলনে সুজনের সভাপতি ও সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা এম হাফিজউদ্দিন খান বলেন, বর্তমান নির্বাচন কমিশনের ওপর কারো কোনো আস্থা নাই। তারা দায়িত্ব পালনে যেমন ব্যর্থতার পরচিয় দিচ্ছেন তেমনি বিভিন্ন আর্থিক দুর্নীতিতেও লিপ্ত হয়েছেন, যা সাংবিধানিক সংস্থা হিসেবে কমিশনের ভাবমর্যাদাকে ক্ষুন্ন করেছে। তাই ৪২ নাগরিকের সুপ্রীম কাউন্সিল গঠনের দাবির প্রতি আমরা সমর্থন জানিয়ে এই কমিশনের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার দাবি জানাচ্ছি।

সাবেক নির্বাচন কমিশনার ড. এম সাখাওয়াত হোসেন বলেন, ইভিএমে কয়েক ঘণ্টার মধ্যে ফলাফল দেয়া সম্ভব সেখানে ফলাফল দিতে এত দেরি করা হলো, তারপর ইভিএমে বাতিল ভোট আসে কীভাবে? একটা ইতিবাচক দিক ছিল ট্রাইবুনালে মামলা হওয়া। যেভাবে ইলেকশন করা হয়ছে তাতে এটি একটি ভালো নির্বাচন হয়েছে বলে আমি মনে করি না।
ড. বদিউল আলম মজুমদার বলেন, গ্রহণযোগ্য নির্বাচন অনুষ্ঠান অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। নির্বাচন প্রভাবিত হলে জনগণের প্রতিনিধি স্বাধীনভাবে বেছে নেয়ার সুযোগ থাকে না। চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন নির্বাচন কমিশন এবং ইভিএমের বিশ্বাসযোগ্যতাকে আবারো প্রশ্নবিদ্ধ করেছে। আমাদের ব্যবহৃত ইভিএম অন্ত্যন্ত নিম্নমানের এবং এতে ভিভিপিএটিও সংযুক্ত নেই। ফলে একটা ডিজিটাল জালিয়াতির সুযোগ থেকে যায়। তাতে নির্বাচন কমিশন ও ইভিএমের বিশ্বাসযোগ্যতা আবারো প্রশ্নবিদ্ধ হয়েছে। অতীতেও কমিশনের জালিয়াতি ও পক্ষপাতদুষ্ট ভূমিকা ছিল।
অধ্যাপক সিকান্দর খান বলেন, আমরা আশা করেছিলাম চট্টগ্রামের নির্বাচনটি একটা ভালো নির্বাচন হবে, কিন্তু আমাদের আশা পূরণ হয়নি। বিএনপির লোকদের মাঠে তেমন একটা দেখা যায়নি, মাঠে উপস্থিত থাকলে তারা হয়ত আরো ভালো করতে পারতো।

দিলীপ কুমার সরকার বলেন, বিজয়ী সকল জনপ্রতিনিধির মধ্যে স্বল্পশিক্ষিতের (এসএসসি ও তার নিচে) তুলনায় উচ্চশিক্ষিতের (স্নাতক ও স্নাতকোত্তর) হার কিছুটা বেশি। তবে বিজয়ী সংরক্ষিত ওয়ার্ড কাউন্সিলরের মধ্যে সিংহভাগই (৬৪.২৮%) স্বল্পশিক্ষিত। বিজয়ীদের মধ্যে একচতুর্থাংশ (২৫%) মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের গন্ডি অতিক্রম করতে পারেননি। বিজয়ীদের পেশা বিশেষণ করে দেখা যায়, অন্যান্য নির্বাচনের মতো এই নির্বাচনেও ব্যবসায়ীদের প্রাধান্য ছিল, বিজয়ীদের মধ্যে ব্যবসায়ীর হার শতকরা ৮০ ভাগের বেশি। মামলার ক্ষেত্রে সাধারণ কাউন্সিলর প্রার্থীদের মধ্যে মামলার আধিক্য লক্ষ্য করা যাচ্ছে। প্রতিদ্ব›দ্বী প্রার্থীদের বিরুদ্ধে বর্তমান মামলা ২৮.৮৭ শতাংশ থাকলেও বিজয়ীদের মধ্যে এই হার ১৪.২৮ শতাংশ। অপর দিকে প্রতিদ্ব›দ্বী প্রার্থীদের বিরুদ্ধে অতীত মামলা ২২.১৮ শতাংশ থাকলেও বিজয়ীদের মধ্যে এই হার ৩৫.৭১ শতাংশ। বিজয়ীদের মধ্যে প্রায় এক তৃতীয়াংশ ৩২.১৪ শতাংশ বছরে ৫ লাখ টাকা বা তার কম আয় করেন। তবে অধিকাংশ জনপ্রতিনিধি ৫১.২৯ শতাংশ আয় করেন ৫ লাখ থেকে ২৫ লাখ পর্যন্ত। বছরে কোটি টাকার অধিক আয়কারী জনপ্রতিনিধির ৩.৫৭ শতাংশ।

তিনি বলেন, ভোটের দিন বেশকিছু ভোটকেন্দ্রে সংঘর্ষের ঘটনা এবং একজনের প্রাণহানি ঘটনা, বিএনপির পোলিং এজেন্টদের ভোটকেন্দ্রে ঢুকতে না দেয়া, পোলিং এজেন্টদের ভোটকেন্দ্র থেকে বের করে দেয়া, সরকারি দল কর্তৃক ভোটকেন্দ্রের প্রবেশপথসহ আশেপাশে মহড়া দিয়ে এলাকাকে নিয়ন্ত্রণে রাখা, বুথ ক্যাপচার করে একজনের ভোট আর একজন দিয়ে দেয়া, গোপন বুথে অবাঞ্ছিত ব্যক্তির উপস্থিতি এবং ভোটারের পরিবর্তে অবাঞ্ছিত ব্যক্তি কর্তৃক ভোট প্রদানের বাটন টিপে দেয়া, কোনো কোনো কেন্দ্রে মেয়রপ্রার্থীর ভোট প্রকাশ্য দিতে বাধ্য করা, নির্বাচনী দায়িত্বে নিয়োজিতরাসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর পক্ষপাতমূলক আচরণ, ৪টি ইভিএম ভেঙে ফেলা, দুইজন কাউন্সিলর প্রার্থীর (একজন বিএনপি সমর্থিত এবং একজন আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী) গ্রেফতার হওয়া, অভিযোগ পাওয়ার পরেও নির্বাচন কমিশন কর্তৃক কোনো ব্যবস্থা না নেয়া, ইভিএম-এ ভোট হলেও ১০ ঘণ্টা পর ফলাফল ঘোষণা, ভোট কম পড়া ২২.৫২ শতাংশ ভোটের হার বাড়িয়ে দেখানো, ফলাফল পাল্টে দেয়া ইত্যাদি ঘটনা ঘটতে দেখা গেছে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ
function like(cid) { var xmlhttp; if (window.XMLHttpRequest) {// code for IE7+, Firefox, Chrome, Opera, Safari xmlhttp=new XMLHttpRequest(); } else {// code for IE6, IE5 xmlhttp=new ActiveXObject("Microsoft.XMLHTTP"); } xmlhttp.onreadystatechange=function() { if (xmlhttp.readyState==4 && xmlhttp.status==200) { var divname = "clike_"+cid; //alert(xmlhttp.responseText); document.getElementById(divname).innerHTML=xmlhttp.responseText; } } var url = "https://old.dailyinqilab.com/api/insert_comment_like.php?cid="+cid; xmlhttp.open("GET",url,true); xmlhttp.send(); } function dislike(cid) { var xmlhttp; if (window.XMLHttpRequest) {// code for IE7+, Firefox, Chrome, Opera, Safari xmlhttp=new XMLHttpRequest(); } else {// code for IE6, IE5 xmlhttp=new ActiveXObject("Microsoft.XMLHTTP"); } xmlhttp.onreadystatechange=function() { if (xmlhttp.readyState==4 && xmlhttp.status==200) { var divname = "cdislike_"+cid; document.getElementById(divname).innerHTML=xmlhttp.responseText; } } var url = "https://old.dailyinqilab.com/api/insert_comment_dislike.php?cid="+cid; xmlhttp.open("GET",url,true); xmlhttp.send(); } function rlike(rid) { //alert(rid); var xmlhttp; if (window.XMLHttpRequest) {// code for IE7+, Firefox, Chrome, Opera, Safari xmlhttp=new XMLHttpRequest(); } else {// code for IE6, IE5 xmlhttp=new ActiveXObject("Microsoft.XMLHTTP"); } xmlhttp.onreadystatechange=function() { if (xmlhttp.readyState==4 && xmlhttp.status==200) { var divname = "rlike_"+rid; //alert(xmlhttp.responseText); document.getElementById(divname).innerHTML=xmlhttp.responseText; } } var url = "https://old.dailyinqilab.com/api/insert_reply_like.php?rid="+rid; //alert(url); xmlhttp.open("GET",url,true); xmlhttp.send(); } function rdislike(rid){ var xmlhttp; if (window.XMLHttpRequest) {// code for IE7+, Firefox, Chrome, Opera, Safari xmlhttp=new XMLHttpRequest(); } else {// code for IE6, IE5 xmlhttp=new ActiveXObject("Microsoft.XMLHTTP"); } xmlhttp.onreadystatechange=function() { if (xmlhttp.readyState==4 && xmlhttp.status==200) { var divname = "rdislike_"+rid; //alert(xmlhttp.responseText); document.getElementById(divname).innerHTML=xmlhttp.responseText; } } var url = "https://old.dailyinqilab.com/api/insert_reply_dislike.php?rid="+rid; xmlhttp.open("GET",url,true); xmlhttp.send(); } function nclike(nid){ var xmlhttp; if (window.XMLHttpRequest) {// code for IE7+, Firefox, Chrome, Opera, Safari xmlhttp=new XMLHttpRequest(); } else {// code for IE6, IE5 xmlhttp=new ActiveXObject("Microsoft.XMLHTTP"); } xmlhttp.onreadystatechange=function() { if (xmlhttp.readyState==4 && xmlhttp.status==200) { var divname = "nlike"; document.getElementById(divname).innerHTML=xmlhttp.responseText; } } var url = "https://old.dailyinqilab.com//api/insert_news_comment_like.php?nid="+nid; xmlhttp.open("GET",url,true); xmlhttp.send(); } $("#ar_news_content img").each(function() { var imageCaption = $(this).attr("alt"); if (imageCaption != '') { var imgWidth = $(this).width(); var imgHeight = $(this).height(); var position = $(this).position(); var positionTop = (position.top + imgHeight - 26) /*$("" + imageCaption + "").css({ "position": "absolute", "top": positionTop + "px", "left": "0", "width": imgWidth + "px" }).insertAfter(this); */ $("" + imageCaption + "").css({ "margin-bottom": "10px" }).insertAfter(this); } }); -->