পোশাক রপ্তানিতে উৎসে কর ০.৫ শতাংশ নির্ধারণের প্রস্তাব
আগামী পাঁচ বছরের জন্য তৈরি পোশাক রপ্তানির বিপরীতে প্রযোজ্য উৎসে করহার ১ শতাংশ থেকে হ্রাস করে ০.৫ শতাংশ নির্ধারণের প্রস্তাব করেছে পোশাক খাতের দুই সংগঠন
মাধবদী (নরসিংদী) সংবাদদাতা : মাধবদী থানা এলাকার বস্ত্র শিল্পের ডাইং, ফিনিশিং, স্পিনিং ও তৈরি পোশাক কারখানা গার্মেন্টস ফ্যাক্টরিগুলোতে উৎপাদন খরচের তুলনায় বিক্রয়মূল্য কমে যাওয়ায় দীর্ঘদিন ধরে লোকসান গুনতে গুনতে ইতোমধ্যেই অনেক কারখানা বন্ধ হয়ে গেছে। প্রায় দু’মাসের বেশি সময় ধরে এ অবস্থা চলতে থাকায় লক্ষাধিক শ্রমিক বেকার হয়ে পড়েছে। দিন যাচ্ছে আর বন্ধ কারখানার তালিকা দীর্ঘ হচ্ছে। বিশেষ করে যেসব কারখানা ব্যাংক ঋণের ওপর নির্ভরশীল সেগুলো দেউলিয়া ঘোষণা করায় কর্মরত শ্রমিকদের সমস্যা প্রকট আকার ধারণ করেছে। মাধবদী থানা এলাকার ৮টি ইউনিয়নে বিক্ষিপ্তভাবে গড়ে ওঠা হাজার হাজার কারখানায় উৎপাদিত সারাদেশের চাহিদার প্রায় ৪০ ভাগ বস্ত্রই তৈরি হয় এ অঞ্চলে। শুধু দেশে নয় উন্নত প্রযুক্তিতে তৈরি এখানকার কাপড় সারা দেশে এবং বহির্বিশ্বের বেশ কয়েকটি দেশে ব্যাপক চাহিদা সৃষ্টি করেছে। কিন্তু পাওয়ারলোম ও গার্মেন্টস সেক্টরের এ শিল্পের সাথে সাম্প্রতিক সময়ে জড়িতরা বলেছেন দেশীয় কাপড় ও তৈরি পোশাক ও কাপড় বিক্রিতে সমস্যার মূল কারণ শুল্ক ও কর ফাঁকি দিয়ে অবৈধ পথে আসা বিদেশি কাপড় আসার কারণে কম মূল্যে বিক্রি করতে পারছে। ফলে সাধারণ ক্রেতারা দেশীয় কাপড় বেশি মূল্য দিয়ে ক্রয় করছে না। ফলে উৎপাদিত কাপড় গোডাউনে স্টক করতে হচ্ছে। এ কারণে নিয়মিত শ্রমিক বিল পরিশোধ করা যাচ্ছে না। এ ছাড়াও চায়নাতে তুলার সমস্যায় সুতা তৈরি সীমিত রয়েছে বলে প্রয়োজনমত সুতা আসছে না এবং সুতার দামও বেড়েছে অনেক। আর তাই উৎপাদন মূল্য বেড়ে যাওয়ায় কাক্সিক্ষত মূল্যে কাপড় বিক্রি করতে না পারায় বাধ্য হয়ে কারখানা বন্ধ করে দিতে হচ্ছে। এ অবস্থা চলতে থাকায় ছোট ছোট পাওয়ারলুম কারখানা আস্তে আস্তে বন্ধ হয়ে যাওয়ার ফলে বেকার হয়ে পড়ছে হাজার হাজার কর্মরত শ্রমিক/কর্মচারী। এবার ঈদুল আজহার পূর্বমুহূর্তে বন্ধ হয়ে যাওয়া কারখানার হাজার হাজার শ্রমজীবী মানুষ বেকার হয়ে পড়েছে। খোঁজ নিয়ে জানা যায় ঈদের ছুটিতে এবার অনেক শ্রমিক বাড়ি যাবেন না। ভাড়া বাসায় থেকে ঈদ করবেন জানিয়ে বরিশালের ৩ জন শ্রমিক রাসেল, সোহেল, মনির বলেন বাড়িতে গেলে কারও ঈদের আবদার রক্ষা করতে পারব না তাই থেকে যাচ্ছি। শুধু তারাই নয় বিভিন্ন জেলা থেকে আসা কর্মরত অনেক শ্রমিক এবার বাড়ি যাবেন শূন্য হাতে। প্রায় শিল্প প্রতিষ্ঠানেরই শ্রমিক/কর্মচারী বেকার হয়ে হতাশায় ভুগছেন এমন চিত্র দেখা গেছে মাধবদীর শিল্পাঞ্চল ঘুরে। কোনো কোনো কারখানায় বোনাস দেয়ার কথা থাকলেও তা এবার দিচ্ছেন না। তারা বলছেন শুধু শ্রমিকদের অবস্থা ভেবে লোকসান দিয়ে কারখানা খোলা রেখেছি। ধার্যকৃত বিল দেয়াই কঠিন হয়ে পড়েছে, বোনাস দেব কীভাবে? এ অবস্থায় এখানকার শ্রমজীবী মানুষের মাঝে মারাত্মক হতাশার সৃষ্টি হয়েছে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।