Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

‘কাগজে-কলমের চেয়ে খেলাপি ঋণ অনেক বেশি’

অর্থনৈতিক রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ১৩ মার্চ, ২০২১, ১২:০০ এএম

পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) চেয়ারম্যান প্রফেসর শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলাম বলেছেন, কাগজে-কলমে ব্যাংকিং খাতের খেলাপি ঋণের চেয়ে আসল খেলাপি ঋণ অনেক বেশি বলে মন্তব্য করেছেন তিনি বলেন, মানি মার্কেটে নন-পারফর্মিং লোনের পরিমাণ কাগজে-কলমে যা রয়েছে তার চাইতে আসল পরিমাণ অনেক বেশি। গত ৭-৮ মাসের মধ্যে ব্যাংকিং খাতের অবস্থা অনেকখানি বদলেছে। সর্বশেষ প্রান্তিকে করা মুনাফায় ক্ষতি পুষিয়েছে।
গত বৃহস্পতিবার রাজধানীর নিকুঞ্জে চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) নতুন অফিস উদ্বোধনকালে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।

অনুষ্ঠানে বিএসইসির কমিশনার খন্দকার কামালুজ্জামান, ড. শেখ শামসুদ্দিন আহমেদ, অধ্যাপক ড. মিজানুর রহমান, আব্দুল হালিম, ডিএসইর চেয়ারম্যান ইউনুসুর রহমান এবং সিএসইর চেয়ারম্যান আসিফ ইব্রাহীম উপস্থিত ছিলেন। বিএসইসির চেয়ারম্যান প্রফেসর শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলাম বলেন, পুঁজিবাজারের রেগুলেটর, স্টক এক্সচেঞ্জ এবং ইন্টারমিডিয়ারি সবাই মিলে আমরা কাজ করলে বিনিয়োগকারীরা লাভবান হবেন। তাতে আমরা যে লক্ষ্য নিয়ে কাজ করে যাচ্ছি তা অর্জিত হবে।

তিনি বলেন, অর্থনীতিতে আমাদের অনেক কিছু করার আছে। আমরা (বিএসইসির নতুন কমিশন) দায়িত্ব নেওয়ার পরে চেষ্টা করছি ক্যাপিটাল মার্কেট যেন আমাদের অর্থনীতিতে আরও অবদান রাখতে পারে। সেজন্য কী করে নতুন নতুন এভিনিউ খোলা যায় সে চেষ্টা করে যাচ্ছি।
তিনি বলেন, জেনে অবাক হবেন যে, গত বছরের ১৭ মে দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে এখন পর্যন্ত কমিশনের কেউই একদিনও ছুটি নেননি। করোনায় ঝুঁকি নিয়ে কাজ করে যাচ্ছি। শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলাম বলেন, ডিএসই চেয়ারম্যানের সঙ্গে কণ্ঠ মিলিয়ে বলতে পারি- যদি আমরা আমাদের লক্ষ্যে পৌঁছাতে পারি তবে ক্যাপিটাল মার্কেটকে নিয়ে কোনো কথা বলার কিছু থাকবে না। কিন্তু ব্যাংকিং খাতে সে সুযোগ কম। আর লক্ষ্যে পৌঁছাতে আমাদের অনেক কাজ করতে হবে।

ডিএসইর চেয়ারম্যান ইউনুসুর রহমান বলেন, দেশের অর্থনীতিকে আরও এগিয়ে নিতে অনেক কিছু করার আছে। আমি আনন্দিত যে, বাংলাদেশের মতো দেশে দুটি স্টক এক্সচেঞ্জ আছে। যেহেতু ডিএসই স্বাধীনতার আগে থেকেই কাজ করে আসছে তাই দীর্ঘদিনের অভিজ্ঞতাসম্পন্ন। পরবর্তীতে সিএসইর যাত্রা হয়েছে এবং তুলনামূলকভাবে নবীন স্টক এক্সচেঞ্জ। ডিএসই এবং সিএসই মোটেও কম্পিটিটর নয় বরং পরিপূরক। যেহেতু নবীন তাই এই স্টক এক্সচেঞ্জকে এগিয়ে নিতে আমাদের সবার সর্বাত্মক সহযোগিতা করা উচিত এবং আমরা করব।
ইউনুসুর রহমান বলেন, দুঃখের বিষয় যে, ব্যাংকের যে নন-পারফর্মিং লোন আছে তা তিন বছর আগের হিসেব অনুযায়ী, শীর্ষ ২০ সরকারি ব্যাংকের খেলাপি ছিল মোট লোনের ৫৪ ভাগ। যা এখন ৭০ ভাগে পৌঁছেছে। এটা কি আশা করা যায় যে, বড়রা আমাদের দেশকে পেছনে টানবে আর কেবল প্রবাসী শ্রমিক, কৃষক এবং পোশাকশিল্পের লোক দেশ এগিয়ে নিতে অবদান রাখবে?

সিএসইর চেয়ারম্যান আসিফ ইব্রাহিম বলেন, শিল্প উদ্যোক্তারা যারা পুঁজিবাজারে আছি তাদেরকে বেশি নির্ভর করতে হয় কমার্শিয়াল ব্যাংক এবং লেন্ডিংয়ের ওপর। দেখা যায় যে, ব্যবসার ব্যাপারে যেহেতু অনিশ্চয়তা আছে এবং যেকোনো সময় যেকোনো বৈরি পরিস্থিতি তৈরি হতে পারে, তাই এই লেন্ডিং করতে গিয়ে অনেক সময় অনেক প্রতিষ্ঠানকে ক্লাসিফাইড হয়ে যেতে হয়।

গ্রুপ কোম্পানি হলে অন্য কোম্পানিগুলোর ওপরও তার প্রভাব পড়ে। তাই এই ক্ষেত্রে পুঁজিবাজার হতে টাকা উত্তোলন একটি সমাধান হতে পারে। সেক্ষেত্রে ছোট, মাঝারি এবং বড়- সব ধরনের কোম্পানিগুলোর জন্যই এই উদ্যোগ নিতে হবে, উৎসাহিত করতে হবে এবং এই ক্যাপিটাল মার্কেটে লিস্টিংয়ের মাধ্যমে নিয়ে আসতে হবে, এতে পুঁজিবাজার সমৃদ্ধ হবে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: খেলাপি-ঋণ
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ